Skip to content

করোনাকাণ্ড: বিশ্ব পরিস্থিতি ও বাংলাদেশ

করোনাকাণ্ড: বিশ্ব পরিস্থিতি ও বাংলাদেশ

 

 

 

মহামারি পৃথিবীর ইতিহাসে এই প্রথম নয়; মধ্যযুগের শেষপাদে (১৩৪৬-১৩৫৩) বিউবনিক প্লেগের দ্বারা সংক্রমিত ‘ব্ল্যাক ডেথ’ দীর্ঘ সাত বছর ধরে ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়াকে লন্ডভন্ড করে ফেলেছিল। সর্বনিম্ন ৭৫ মিলিয়ন এবং সর্বোচ্চ ২০০ মিলিয়ন মানুষ সেই ভয়াল ‘কৃষ্ণমৃত্যুর’ শিকার হয়েছিল বলে জানা যায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর প্রাদুর্ভূত হওয়া ‘স্প্যানিশ ফ্লু’ বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ মানুষকে সংক্রমিত করে ৫০ মিলিয়নের প্রাণ কেড়ে নেয়। মারণব্যাধি এইডসও বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে আবির্ভূত হয় এবং ১৯৮১ সালের পর থেকে ৩৬ মিলিয়ন মানুষের প্রাণহানি ঘটায়। এছাড়াও ইনফ্লুয়েঞ্জাকেন্দ্রিক মহামারি যেমন ১৮৮৯ সালের ‘রাশিয়ান ফ্লু’, ১৯৫৬ সালের ‘এশিয়ান ফ্লু’ কিংবা ১৯৬৮ সালের ‘হংকং ফ্লু’ ও কম বিপজ্জনক ছিল না। অধিকন্তু নিপা ভাইরাস, সোয়াইন ফ্লু, ডেঙ্গু কিংবা চিকনগুনিয়াও খাটো করে দেখবার অবকাশ নেই। কিন্তু সব কিছুকেই যেনো ছাড়িয়ে যাচ্ছে করোনা ভাইরাস এবং তজ্জনিত বিরাজমান আতঙ্ক। পরিস্থিতি এতোটাই ভয়াবহ যে উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা আর অন্তহীন অনিশ্চয়তার হাত থেকে রেহাই পেতে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন জার্মান অর্থমন্ত্রী টমাস শেফার। ভয়াল করোনাকবলিত ইতালিকে রক্ষার সকল পার্থিব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে আকাশের পানে হাত তোলেন এবং স্বর্গীয় হস্তক্ষেপ কামনা করেন দেশটির অসহায় প্রধানমন্ত্রী জুসেপে কোনতে। পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সারা পৃথিবীর জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে। লকডাউন হয়ে পড়েছে সমগ্র মানবজাতি।

 

করোনাভাইরাস সম্পর্কে জনমনে ভীতির প্রধান কারণ সম্ভবত এর অতি দ্রুত সংক্রমণ ক্ষমতা। এবং এই সংক্রমণ হাঁচি-কাশির মধ্য দিয়ে তো বটেই, এমন কি কথা বলার মাধ্যমেও আক্রান্ত ব্যক্তির আপার রেসপিরেটরি ট্রাক্ট থেকে জীবাণু সংক্রমণ হতে পারে। আতঙ্কের দ্বিতীয় কারণ হলো কোভিড-১৯-এর কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি। বাজারে ওষুধের বন্দোবস্ত থাকলে রোগীর মনোবল এমনিতেই চাঙ্গা থাকে। করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাব এতটাই আকস্মিক যে প্রতিরোধক ও প্রতিষেধকবিহীন মানুষের ওপর এই প্রাণঘাতী আণুবীক্ষণিক শত্রু যথেচ্ছ দাপট খাটাচ্ছে। বয়স্কদের ক্ষেত্রে তো বটেই, এমনকি শিশু ও যুবাদের ওপর করোনার প্রকোপ ততটা প্রবল নয় বলে যে আশ্বাসের বাণী ছড়ানো হয়েছিল, তা-ও সর্বৈব অসত্য প্রমাণিত হয়েছে। গ্রীষ্মপ্রধান দেশসমূহের ক্ষেত্রে যে সুবিধার কথা বলা হয়েছিল, তা-ও ভ্রান্ত প্রমাণিত হয়েছে। ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে থোড়াই কেয়ার না করে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশসমূহকে একের পর এক ধরাশায়ী করে ফেলছে করোনা ভাইরাস। বিশ্বের বড়ো বড়ো শহর একের পর এক লকডাউন করা হচ্ছে। নিউ ইয়র্ক, লন্ডন, প্যারিস, মাদ্রিদ কিংবা কলকাতা-ঢাকাকে ভরদুপুরে দেখলেও মৃতপুরী মনে হয়। মানুষ মাসের বাজার একবারে সেরে নিয়ে স্বেচ্ছাবন্দি হয়ে পড়েছে। এই কদিন আগে যে মানুষটি ঘড়ির উলটোদিকে ছুটতে ছুটতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল—তার আজ সময় কাটে না। দেহঘড়ি যেন ইউটার্ন নিয়েছে। ফেসবুকের ডান সাইডবারে সবুজ ফুটকি সারা রাত সক্রিয় থাকে। ফলে মধ্যাহ্নে শয্যাত্যাগ। ব্রেকফাস্ট ও লাঞ্চ যুক্ত হয়ে ব্রাঞ্চে পর্যবসিত হওয়া। মোটকথা, করোনাকাল মানবজীবনকে একেবারে ওলটপালট করে দিয়েছে। ভীতি-আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তার জালে আবদ্ধ সময়ই করোনাকাল।

 

কোভিড নাইনটিন যেহেতু কেবল মহামারিই নয়, বৈশ্বিক মহামারি (Pandemic), তাই বাংলাদেশও এর আক্রমণের হাত থেকে রেহাই পায়নি। ৭ মার্চ ২০২০-এ দেশের রোগতত্ত্ব ইনস্টিটিউট ইতালিফেরত তিন জনের মধ্যে করোনা ভাইরাসের সন্ধান পায়। মার্চের শেষ পর্যন্ত সংক্রমণের মাত্রা নিম্ন পর্যায়েই থাকলেও এপ্রিল পড়লেই তা ঊর্ধ্বগামী হয়। মধ্য এপ্রিলের পর এই উল্লম্ফনের মাত্রা আরো বাড়তে থাকে। তবে ১৬০ মিলিয়ন মানুষের এই দেশে যেখানে লকডাউন কিংবা সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং পুরোমাত্রায় কার্যকর করা যাচ্ছে না, কিংবা যেখানে লক্ষণাক্রান্তের তুলনায় টেস্টিং কিটসের পরিমাণ একেবারেই অল্প, সেখানে আক্রান্তের সঠিক সংখ্যা নিরূপণ একটু কষ্টকর। আর ঠিক সেখানেই সমস্যাটি জটিল হচ্ছে। করোনা মোকাবিলার প্রথম অনিবার্য শর্ত হলো—আক্রান্তের সঠিক সংখ্যা নির্ণয় করতেই হবে। পরীক্ষা এড়ানো আক্রান্তেরা করোনাবাহক হিসেবে নির্বিঘ্নে করোনা-সংক্রমণে বিস্ফোরণ ঘটাবে। যে বিস্ফোরণকে পরিভাষাগতভাবে বলা হয় কমিউনিটি ট্রান্সমিশন। লক্ষণাক্রান্তদের যথাযথভাবে পরীক্ষা করে ফলাফলানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ না করতে পারলে পুরো করোনাবিরোধী অভিযান অর্থহীন হয়ে পড়বে। কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের সম্ভাবনার বিষয়টি সরকারও স্বীকার করে নিয়েছে এবং ১৬ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮-এর ১১(১) ধারার ক্ষমতাবলে সমগ্র বাংলাদেশকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করেছে। এটি একটি ভালো উদ্যোগ। সমস্যার গুরুত্ব উপলব্ধি সমস্যা সমাধানের প্রথম শর্ত।

 

বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করার পথে বেশ কিছু বাধা রয়েছে। সেগুলো উপলব্ধি করে অপসারণের ব্যবস্থা না করলে ইপ্সিত ফলাফল মিলবে না। বাঙালিরা অনেক বেশি সামাজিক, আড্ডাপ্রিয় এবং বহির্মুখী। চায়ের দোকানে বসে চায়ের কাপে ঝড় তোলা একটি প্রিয় বাঙাল স্বভাব। তাই করোনা সংক্রমণ পরিহারের জন্য সঙ্গনিরোধ ব্যবস্থা, আত্ম-অন্তরণ কিংবা গৃহ-অন্তরণ ব্যবস্থা খুব একটা কাজ করছে না। কিন্তু এটিকে কাজ করাতেই হবে। সামাজিক মেলামেশা করোনা সংক্রমণের প্রধান হাতিয়ার। এ ব্যাপারে চার্চ ও ক্যাসিনো উভয়ই ঐকমত্য পোষণ করেছে এবং বিশ্বব্যাপী তা কার্যকর করছে। আর পরস্পরবিরোধী এই দুই প্রতিষ্ঠান কোনো ব্যাপারে যখন একই মত পোষণ করে, তখন বুঝতে হবে যে ব্যাপারটি সত্যিই গুরুতর। প্রার্থনালয়ে লোকসমাগম নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে, ক্যাসিনো বন্ধ করা হয়েছে; তারপরও যদি মানুষ যূথবদ্ধ হতে চায়, তাহলে কঠোর আইন প্রয়োগের বিকল্প কী?

 

করোনা নিয়ন্ত্রণে আরেকটি বড়ো সংকট মনে মচ্ছে করোনাক্রান্তদের সেবাদানকারী চিকিত্সক-নার্সদের প্রয়োজনীয় আত্মরক্ষা সামগ্রীর অভাব। খোদ জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (IEDCR)-এর ছয় জন স্টাফ আক্রান্ত হয়েছেন। সিলেটের ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার মঈন উদ্দিন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। এছাড়া আরো অনেক ডাক্তার, স্বাস্থ্যসেবাকর্মী, নার্স করোনাক্রান্ত হয়েছেন এবং অনেকে ঝুঁকির মধ্যে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানা যায়। কার্যকর PPE (পার্সোন্যাল প্রোটেকিটভ ইকুইপমেন্ট)-এর অপর্যাপ্ততা এর উল্লেখযোগ্য কারণ বলে ধরে নেওয়া যায়। স্বয়ং চিকিত্সক ও নার্সরা যদি সংক্রমণের ঝুঁকি এড়ানোর ব্যবস্থা না পায়, তাহলে তারা আক্রান্তদের সেবা কীভাবে দেবে?

 

তবে বাংলাদেশের জন্য একটি আশাব্যঞ্জক ব্যাপার হলো প্রধানমন্ত্রী নিজেই অহর্নিশ করোনা পরিস্থিতি মনিটরিং করছেন। ঢাকায় বসে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে জেলা প্রশাসন, স্থানীয় প্রশাসন, দলীয় নেতাকর্মী সবার সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত হয়ে প্রত্যক্ষভাবে তথ্যাদি সংগ্রহ করছেন। অবস্থার গুরুত্ব অনুধাবন করে সরাসরি প্রয়োজনীয় ডিরেকটিভস দিচ্ছেন। তিনি মানুষের মনোবল চাঙ্গা রাখার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন। অযথা ভীত বা আতঙ্কিত না হয়ে সাহস-সচেতনতা ও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলার নির্দেশনা দিচ্ছেন। নিহত চিকিত্সকের পরিবারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিচ্ছেন আবার দায়িত্ববিমুখ পলায়নপর চিকিত্সকদের সতর্ক করতেও ভুলছেন না। তবে সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ার মতো বিষয় হলো—এই বৈরী করোনাকালে স্বল্প আয়ের খেটে খাওয়া দিনমজুর কিংবা দুস্থ-অসহায় মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দুশ্চিন্তা। ঘরে ঘরে ত্রাণ পাঠানোর ব্যবস্থা করছেন আবার ত্রাণ তছরুপকারীদের কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। ১০ টাকা কেজি দরের চাল পাওয়া রেশন কার্ডের আওতাভুক্ত মানুষের সংখ্যা ৫০ লাখ দ্বিগুণ করছেন।

 

তবে করোনা-সংকটের কারণে বিশ্বে যে অর্থনৈতিক বিপর্যয় নেমে আসবে, তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়বে বলে ধরে নেওয়া যায়। বিশ্বব্যাপী লকডাউন ব্যবস্থার কারণে উত্পাদন কার্যক্রম থেমে যাবে এবং সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থা মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবে এবং সামষ্টিক অর্থনীতির ওপরে বিরাট হুমকি আসবে। বিশ্ব বাণিজ্য পদ্ধতি ভেঙে পড়বে। জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন এজেন্সির হিসাবমতে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি ২ ট্রিলিয়ন ইউএস ডলার লোকসানের শিকার হবে এবং করোনাকবলিত প্রায় সব দেশে অর্থনীতি ভয়াবহ মন্দার কবলে পতিত হবে। ১৯৩০-এর মহা অর্থনৈতিক মন্দার (Great Depression) পর ২০০৭-২০০৮ সালে মন্দার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল চাহিদার পতন। কিন্তু করোনাজনিত কারণে সৃষ্ট মন্দা ঘটবে চাহিদা ও জোগান উভয়ের পতনের কারণে, যা অনেক বেশি বিধ্বংসী। লাখ লাখ মানুষ চাকরি হারাবে। বাংলাদেশের মতো দেশে যেখানে দিন এনে দিন খাওয়া মানুষের সংখ্যা লাখ লাখ, সেখানে লকডাউন দশা দীর্ঘায়িত হলে এবং তৈরি পোশাকশিল্পে উত্পাদন থমকে গিয়ে সাপ্লাই চেইন ভেঙে পড়লে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। এই স্থবিরতার প্রভাব পড়বে চাকরির বাজারে। আইএলওর হিসাবমতে, করোনা পরিস্থিতির কারণে আগামী তিন মাসে বিশ্বে সাড়ে ১৯ কোটি মানুষ চাকরিচ্যুত হবে। এর মধ্যে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর সাড়ে ১২ কোটি এবং এর অভিঘাত বাংলাদেশেও পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর একজন চাকরি হারানো মানে একটি পরিবার সংকটাপন্ন হওয়া। ইতিমধ্যে খোদ যুক্তরাষ্ট্রে চাকরি হারিয়েছেন ১৭ মিলিয়ন মানুষ। মধ্যপ্রাচ্যে তেলের দাম কমে যাওয়ায় সেখানেও চাকরিচ্যুতি শুরু হয়েছে। বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকের চাকুরিচ্যুতির আশঙ্কা রয়েছে এবং তাদের অনেকেই দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হবে। এই পরিস্থিতি হবে গোদের ওপর বিষফোড়ার মতো।

 

সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিস্থিতির সাময়িক এবং স্থায়ী উত্তোরণে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। লকডাউনের কারণে কাজ হারানো দিনমজুর, রিকশাচালক, নির্মাণশ্রমিক, হোটেলশ্রমিক প্রভৃতি পেশার মানুষের জন্য ৭৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তাছাড়া তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে সমাজের বিত্তবান মানুষেরাও এগিয়ে আসছে ত্রাণকার্যে, যা হয়তো তাত্ক্ষণিক সংকট মোকাবিলায় যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে। করোনা পরিস্থিতির আর্থিক অভিঘাত থেকে বিভিন্ন অথনৈতিক খাতকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার, যা দেশের জিডিপির প্রায় ২ দশমিক ৫২ শতাংশ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। কিন্তু বিদ্যমান অবস্থার উত্তরণে কেবল সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকলে চলবে না। সকল স্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। পরিস্থিতি নিয়ে যারা রাজনীতি করতে চায়, জল ঘোলা করে মাছ শিকার করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে। বাতাসে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। একদল মানুষ মহামারির অনুষঙ্গ হিসেবে দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনাতে চাইছে। সেই চুয়াত্তর স্টাইলে বাসন্তী-নাটকের মহড়া করতে চাইছে। এরা দেশের শত্রু। বুঝতে হবে, এই পরিস্থিতি কারোর একার সৃষ্টি নয়। এককভাবে কেউ দায়ীও নয়। আমেরিকা, ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি, স্পেন, চীনের মতো দেশও পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। বাংলাদেশের অবস্থা সে তুলনায় এখনো ভালো।

 

লেখক:  ড. রাশিদ আসকারী

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ভিসি,

ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ, কুষ্টিয়া