উদ্বাস্তু সুনীলের পাশে
শিয়ালদা স্টেশনে তোমার পাশে যে ছেলেটি শুয়ে থাকতো
বেঁচে আছে কি মরে গেছে
জানতে পারোনি, তাই না নীলুদাদা !
সারাটা জীবন অগস্ত্য যাত্রার মতো, মনে মনে তাকে খুঁজে গেছো
মানে উদ্বাস্তু সেই নীলুয়ায় তাড়া খেয়েছো
অন্ধ বাউল যেভাবে খুঁজে চলে বাতাসের গান
রিমঝিম তরঙ্গ, খুঁজে চলে সূর্যের স্নান
আমাকেও যে তুমি, জলের মতো করে বুঝে নিয়েছো
আজীবন বিনম্র প্রণাম, আমিই যে সেই ছেলে নীলু দাদা !
অভুক্ত অর্ধভুক্ত মরতে মরতেও তোমাকেই খুঁজে গেছি
জন্ম-মৃত্যুর সেতু আমাদের এই হাড়িভাঙ্গা কলকাতায়
আতুর ঘরে ধাইমা কেটেছিলো নাড়ি
রেফ্যুজি বুড়ি,জন্মমুখে মধু দিতে পারেনি ঠিকই
বিষ ঢেলে দিয়ে মেরে তো ফেলেনি !
বাঙালের জাত,কঁচুর জঙ্গল করে ফেলেছি সাফ
পেটে সয়ে গেছে, পিঠে ছিলো কালের বোঝা
খুঁটি পুঁতে যেখানে পেরেছি,বাস্তুহারা
নাড়া বেঁধে,অসুস্থ-পাখির পলকা ঘর খোঁজা
ফুটো চাল,আস্তানা খুঁজে নিয়েছি !
শূন্য রাতে,পালক ডোবানো লেখা, ছিল তার সাথে
হাজার মৃত্যুর ভিড়েও, বেঁচে, ফিরে গিয়েছো তাই কোনোমতে
হয়ে উঠেছো শুশ্রূষা ,আকাশের মতো আশ্রয় !
তোমার স্নেহের কাছে ভিখিরির মতো বাটি পেতে বসেছি আমি
নীলুদাদা, ধুলোয় ধুলোয় রুদ্ধশ্বাস, এখনো মরেতো যাইনি !