Skip to content

৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শনিবার | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সড়কে নারীদের চলাচল নিরাপদ হোক

আজ ২২ অক্টোবর। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস। প্রতি বছর সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান এই দিনটি নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করেন। নিরাপদ সড়কের দাবিতেই এই দিনটিতে জনগণকে সচেতন করে তোলা হয়। আর সড়কে চলাচল করার জন্য সবারই অধিক দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। পুরুষের পাশাপাশি আমাদের দেশে নারীদের সড়কে চলাচলও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। তাই নারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে সড়কে চলাচলের জন্য কিছু বিষয় মেনে চলা অত্যাবশ্যক।

গণপরিবহনে ওঠার ক্ষেত্রে একটু অসচেতনতাতেই ঘটে যেতে পারে যেকোনো দুর্ঘটনা। যেখানে-সেখানে গণপরিবহনগুলো যাত্রী ওঠানোনামানো করে। ফলে যাত্রী ঠিক মতো উঠতে পারলো কি না, সেদিকে নজর না দিয়ে হঠাৎ করেই বাসের চালক গতি বাড়িয়ে দেয়। এতে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সম্মুখীন হতে পারেন যাত্রীরা। তবে পুরুষ যাত্রীর বাসে ওঠার ক্ষেত্রে তারা অনেক সময় দৌড়েও বাসে উঠতে পারেন। যেটা নারীদের ক্ষেত্রে সম্ভব নয়।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারীদের পোশাকও একটা মূল কারণ। সবাই প্রায় লম্বা পোশাক পরিধান করেন। আবার অনেকেই বোরখা পরেন। ফলে গণপরিবহনে দ্রুত উঠতে-নামতে গেলে পায়ের সঙ্গে বেঁধে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। এছাড়া নারীরা গণপরিবহনে দ্রুত উঠতে গেলে অনেক সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। তাই ঝুঁকিপূর্ণ ওঠা-নামা থেকে নারীদের বিরত থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে সময়ের চেয়ে জীবনের দাম অনেক বেশি।

রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রে বেশিরভাগসময়ই ওভারব্রিজ ব্যবহার না করে সময় বাঁচাতে এবং একটু কষ্ট কমাতে রাস্তা দিয়েই পারপার করেন নারীরা। সেক্ষেত্রে দ্রুত গতির বাসের সম্মুখীন হলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রে অবশ্যই ওভারব্রিজ ব্যবহার করতে হবে। মনে রাখতে এটাও একধরনের অভ্যেস। যদি প্রত্যেকেই সঠিক অভ্যেসগুলোর চর্চা করেন তবে জাতি হিসেবে আমরা হয়ে উঠবো সভ্য৷ এবং অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়িয়ে সুস্থ জীবনযাপন করতে পারবো।

নারীদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্যোগ গ্রহণ একসময় সামগ্রিকভাবে জাতিকে সচেতন করতে সমর্থ হবে। নিরাপদ সড়ক গড়ে উঠুক। জাতির সামগ্রিক কল্যাণ নিশ্চিত হোক আজকের দিনে এই হোক প্রত্যাশা।

নিরাপদ সড়কের আন্দোলন যতই করা হোক না কেন যদি জনগণ সচেতন না হন তবে আন্দোলনের বাণী সেখানেই মুখ থুবড়ে পড়বে। তাই মানতে হবে ট্রাফিক আইন। নারী বা পুরুষ যেই হোন কেন যদি সঠিক এবং সুনির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলেন তবে জীবনে যেমন সুশৃঙ্খলতা আসবে তেমনই দুর্ঘটনা এড়িয়ে চলা সম্ভব হবে। রাস্তায় চলাচলের ক্ষেত্রে সবসময় ফুটপাত ব্যবহার করতে হবে। আর যেখানে রাস্তা পারাপারের প্রয়োজন সেখানে ওভারব্রিজ ব্যবহার করতে হবে। সাবধানতা নিজের কাছে। তাই কোন অজুহাত দিয়ে নিজের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলা উচিত নয়।

আমাদের দেশে সবজায়গায় যে ওভারব্রিজ আছে এমন নয়। সেখানেও একজনের রাস্তা পারাপারের প্রয়োজন হতেই পারে। সেক্ষেত্রে নারীদের উচিত জেব্রা ক্রসিং ব্যবহার করা। অবশ্যই গাড়ির গতি লক্ষ করতে হবে। যদি খুব বেশি কাজের তাড়া না থাকে তবে সিগন্যালে রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করা উচিত। অবশ্যই মনে রাখতে হবে এক্ষেত্রে সচেতন দৃষ্টি রাখতে হবে। মনের খেয়াল-খুশি অনুযায়ী রাস্তা পার হওয়ার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজ না করাই উচিত। সচেতনতাই পারে জীবনকে সুরক্ষিত রাখতে।

সড়কে চলাচলের ক্ষেত্রে সবাইকেই সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। নারীরা যদি সচেতন হন তবে তার সন্তান বা পরিবারকে সচেতন করে তুলতে সক্ষম হবেন। ফলে জনগণকে নিরাপদ করে তুলতে নারীদের সচেতন হওয়া জরুরি। নারীদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্যোগ গ্রহণ একসময় সামগ্রিকভাবে জাতিকে সচেতন করতে সমর্থ হবে। নিরাপদ সড়ক গড়ে উঠুক। জাতির সামগ্রিক কল্যাণ নিশ্চিত হোক আজকের দিনে এই হোক প্রত্যাশা।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ