হে নারী
তোমাকে ওরা নারী বলে ডাকে,
আমি বলি বিধাতার অপূর্ব এক সৃষ্টি।
তোমাকে বাক্যে সাজানোর সে ধৃষ্টতা আমার নেই
বলতো, তোমাকে কি বলে ডাকি?
তুমি যে উপমার ঊর্ধ্বে,
এক মহাসমুদ্র ফেনিল!
তুমি বাবা-মার ঘর আলো করা সন্তান,
তুমি ভাই বোনের স্নেহ আপ্লুত বোন।
প্রেমিকের কাছে টানা ভালোবাসা,
স্বামীর কাছে প্রিয়তম স্ত্রী,
সন্তানের কাছে স্নেহময়ী মা।
আবার কোথাও,
জন্মানোর পর,
বাবার বিষাদ মুখ, মৃত চোখ,
ছেলে না হওয়ার অভিশাপে অভিশপ্ত!
হতাশার বিমুর্ত স্বাক্ষর।
মেয়ে জন্মানোর দায়ভার চুকাতে হবে তাকেই,
যৌতুক দিতে হবে এ মেয়েকে বিকাতে আবার।
নারী তুমি দেবী দুর্গা,তুমি বীরঙ্গনা,
তুমি ক্লিওপেট্রা,
তুমি মাউন্ট এভারেস্ট,
তুমি নীল নদের তীরে মিশরের পিরামিড।
তুমি ঘাস ফরিং এর বুকের মত নীল,
তুমি পেয়ারার ডালে টিয়ার পালকে
সবুজের রং খেলা!
আবার কখনো শুকনো মাটিতে
ফসলের শেষে, খড় পোড়ানো
লাল আগুনের লেলিহান!
তুমি নানান রুপি ,শত কাব্যের নায়িকা।
তোমার মাঝে নিত্য চলে বহু নারীর বসবাস।
নারী তুমি হতভাগিনী,
অবহেলা আর ভৎসনার মাঝে বেড়ে ওঠা তোমার।
তারপর পণ্যের মত বিক্রি হয়ে যাওয়া বেশাতি
তোমার শরীরের মাঝে,
ভাজে ,ভাজে ,বয়ে যাওয়া সুখ
ভোগ করতে চায় যুবক পুরুষ।
তুমি বেশাতি নও , বেশাতি নও,
পণ্য ও ভোগের বস্তু নও
তুমি নারী।
তবুও করেছে অসভ্য জানোয়ার, হায়েনারা
তোমাকে রক্তাক্ত!
হে নারী, তোমার মাঝে তবু্ও জেগে থাকে
এক অনির্বান তেজ,
যে তেজে গর্জে ওঠে বিশ্বভুমন্ডল!
তোমার মাঝে আছে অজস্র অগ্নিওগিরি,
নেমে আসা তপ্ত লাভা!
তুমি ঝন্ঝা, তুমি মায়াবতী, তুমি কালো কোট পরা বিচারক,
তুমি ফাগুনের উন্মাদনা, ঝিঙে ফুলের সৌরভ,
তুমি ভৈরবি তালে পেখম মেলে ময়ূরির পায়ের নুপুর।
আবার হয়েছে চাঁদের বুকেতে নভোচারীদের সঙ্গী।
কাঞ্চনজঙ্ঘায় পুতে এসেছ জাতীয় পতাকা।
তুমি সাঁতার কেটেছে লোহিত সাগরে!
হে নারী,তুমি মহিয়ান, তুমি যুগে যুগে হও অম্লান।