করোনা টিকাদান কর্মসূচিতে নারীর অংশগ্রহণ আশাহত
করোনা যেমন আতঙ্ক আর হাহাকার ছড়িয়ে দিয়েছে, ভ্যাকসিন বা টিকা তেমনি কিছুটা স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হচ্ছে। ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে শুরু হয়েছে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী টিকাদান কার্যক্রম। গতকাল বৃহস্পতিবার ( ২৫ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন ২৮ লাখ ৫০ হাজার ৯৪০ জন। তার মধ্যে পুরুষ ১৮ লাখ ৫৬ হাজার ২৬৫ জন, নারী ৯ লাখ ৯৪ হাজার ৬৭৫ জন। অর্থাৎ মোট টিকা গ্রহণকারীর এক তৃতীয়াংশ নারী।
হিসেব বলছে পুরুষের তুলনায় নারীদের উপস্থিতি টিকা গ্রহণে অনেক কম। এর কারণ হিসেবে অজ্ঞতা ও প্রচারের অভাবকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকি গর্ভবতী ও মাতৃদুগ্ধ পান করাচ্ছেন বলে অনেক নারী টিকা গ্রহণ থেকে বিরত আছেন।
সাধারণ ভ্যাক্সিনেশন প্রোগ্রামগুলোতে গ্রামে গ্রামে গিয়ে টিকা দিতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। কিন্তু করোনা টিকাদান কর্মসূচিতে এরকম উদ্যোগ একেবারেই দেখা যাচ্ছে না। যা গ্রামীণ মানুষের টিকা গ্রহণের প্রতি আগ্রহ তৈরি হচ্ছে না। আবার অনেক সময় অনেক বৃদ্ধা আছেন যারা টিকা গ্রহণে আগ্রহী কিন্তু নিবন্ধন বা যাতায়াত সমস্যায় টিকা গ্রহণ করতে পারছেন না। যা টিকাদান কর্মসূচিতে নারীদের অংশগ্রহণ কমিয়ে দিচ্ছে।
এ বিষয়ে চিকিৎসক ডা. তানজিনা হোসেন বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় নারীর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। জুনিয়র চিকিৎসকদের মধ্যে শতকরা ৮০ শতাংশই নারী। নার্স, আয়াসহ মিলিয়ে সংখ্যাটা আরও বেশি। সেখানে টিকাকেন্দ্রে নারীর কম উপস্থিতি উদ্বেগজনক ও হতাশার।
তিনি আরও বলেন, বয়স্ক নারীদের পক্ষে ডিজিটাল প্লাটফর্মে নিবন্ধন করে টিকাদান কেন্দ্রে যাওয়া অনেক কঠিন। মায়েদের না নিয়ে এলে তাদের পক্ষে সম্ভব নয় টিকা নেওয়া। তারা যে নিজেরা নিবন্ধন করবেন, সে অবস্থাও তৈরি হয়নি। কারণ আমাদের মায়েরা কম্পিউটার বা মোবাইলে অভ্যস্ত নন। যারা পারছেন না, তাদের সাহায্য করতে হবে। এক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের এগিয়ে আসা উচিত।
যার জন্য করোনার টিকা নিতে নারীর উপস্থিতি বাড়াতে গ্রামে গ্রামে গিয়ে নারীদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। নিবন্ধন করিয়ে টিকাদান কেন্দ্রে আনার ব্যবস্থাও করতে হবে। এসব না করলে এ অবস্থার উন্নতি হবে না।