Skip to content

২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | মঙ্গলবার | ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির কিছু কৌশল

'দুশ্চিন্তা' শব্দটি আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে।  পৃথিবীতে এমন কোন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না যার কোন দুশ্চিন্তা নেই। কিন্তু এই দুশ্চিন্তাই জীবনে বয়ে আনতে পারে বড় কোন বিপদ।   ক্রমাগত দুশ্চিন্তা মানুষের ক্ষুধা, ঘুম, এমনকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়, ফলে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে চাইলে দুশ্চিন্তাকে দূরে রাখার কোনও বিকল্প নেই।  আজ তাই দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়ার কিছু কৌশল নিয়েই এ লেখা । 

 

 

মেডিটেশন  

মেডিটেশন হচ্ছে এক ধরনের মনের ব্যায়াম।  মানসিক চাপ থেকে মুক্তির জন্য মেডিটেশন অত্যন্ত কার্যকরী। নিয়মিত মেডিটেশন করলে তা হতাশা এবং দুশ্চিন্তা অনেকখানিই দূর করতে সহায়তা করে। এছাড়াও আপনার মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে, আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবেন। 

বাস্তববাদী হওয়া  

জীবনে ভালো মন্দ হচ্ছে একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ।  জীবন মানেই কিছু সমস্যা থাকবে এবং এমন কিছু ঘটনা ঘটতে পারে যা জীবনে কাম্য নয়। তাই যেকোনো পরিস্থিতি মেনে নিয়ে এগিয়ে চলা শিখতে হবে।  
সবসময় মনে রাখতে হবে সবকিছুর সমাধান রয়েছে ও সময়ের সাথে সব ঠিক হয়ে যায়। পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে চলার মানসিকতা তৈরি হলে টেনশন অনেকাংশে কমে যাবে।

সর্বদা হাসিখুশি থাকুন 

হাসি মানসিক সুস্থতার জন্য প্রধান ঔষধ। তাই নিয়মিত প্রাণ খুলে হাসুন। যার ফলে আপনার হৃৎস্পন্দনের হার থাকবে স্বাভাবিক। এক্ষেত্র সবসময় সবকিছু ইতিবাচক ভাবে নেয়, হাসিখুশি থাকে এ ধরণের বন্ধু-বান্ধবগুলোর সাথে একটু ঘুরে আসতে পারেন , আড্ডা দিতে পারেন।  দেখবেন মানসিকতা পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে, আপনিও প্রাণ খুলে হাসতে শিখে যাচ্ছেন। 

যে-কোনো পরিস্থিতি ধৈর্যধারণের চেষ্টা করুন   

বিপদ বা সমস্যা কখনো বলে আসেনা।  আপনি যেকোনো মুহূর্তে হঠাৎ কোন কারণে মানসিক ভাবে আঘাত পেতে পারেন। কিন্তু তাই বলে সাথে সাথে দুশ্চিন্তার সাগরে ডুব না দিয়ে, ধৈর্যধারণ করুন এবং ভাবুন এ থেকে পরিত্রাণের উপায় কি হতে পারে। মনে রাখবেন হঠকারিতা আপনার বিপদের কারণ হতে পারে।

কারো সাহায্য নিন 

যখন দেখবেন কোন বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছেন তখনই এমন কারো কাছে সাহায্য চান যিনি আপনাকে এ বিষয়ে সাহায্য করতে পারবেন। আর অবশ্যই এবিষয়ে তাকেই ভরসা করবেন যে আপনার বিশ্বস্ত । 

প্রিয়জনদের সাথে সময় কাটান  

প্রিয়জনের সাথে সময় কাটানোর মুহূর্তে অনেক বড় কষ্টও তুচ্ছ মনে হবে।  আপনার যে মানুষটির সাথে সময় কাটাতে সব থেকে ভালো লাগে,  যার সাথে কথোপকথন কালীন আপনি সব দুশ্চিন্তা পাশে সরিয়ে রাখতে পারবেন,  অবসর সময়ে তার সাথে সময় কাটানোর চেষ্টা করুন। 

সমস্যার নয় প্রাপ্তির হিসেব করুন  

জীবনে হাজারটা সমস্যা, ব্যর্থতাও যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে হাজারটা প্রাপ্তিও। যদি সেই প্রাপ্তিগুলোকে পাশে রেখে সমস্যার হিসেব কষতে বসেন তবে দুশ্চিন্তা লাঘব হওয়া তো দূর তা আপনার মাথায় আরো ভালো করে জেঁকে বসবে। তাই সমস্যার নয় হিসেব করুন প্রাপ্তির।  এতে আপনি মনোবল ফিরে পাবেন,  আপনার মনে আশা জন্মাবে ভবিষ্যতেও এমন অনেক প্রাপ্তি আপনার ঝুলিতে আসবে।

বর্তমান নিয়ে ভাবুন

আমাদের দুশ্চিন্তার সবচেয়ে বড় দুটি বিষয় হচ্ছে অতীত নিয়ে ভাবা এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবা। আমরা সর্বদাই ভাবতে থাকি অতীতে কেন এমনটা হয়েছিলো।  আর ভবিষ্যত নিয়ে আমাদের উৎকণ্ঠা কি পরিমাণ তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু এসব ভাবনার ফলে দিনশেষে আপনার দুশ্চিন্তার লেভেল বাড়ছে, এছাড়া আর কিছুই নয়। তাই অতীত বা ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা না করে বর্তমান নিয়ে ভাবুন। 

অতিরিক্ত আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন  

অতিরিক্ত আবেগ শরীর বা মন কোনোটির জন্যই ভালো নয়। আবেগ মানুষের জীবনের একটি সহজাত ব্যাপার।  কিন্তু অতিরিক্ত আবেগই আবার ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়ায়। যেকোনো ব্যাপারে আপনার খারাপ লাগতেই পারে,  তাই বলে অতিরিক্ত আবেগের বশবর্তী হয়ে কোন ভুল সিদ্ধান্ত নেয়া যাবেনা। 

 
পর্যাপ্ত ঘুম

যখন কোন কিছু নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তা করি তখন যেন মনে মনে প্রতিজ্ঞা করি এ বিষয়ে ষোলোকলা পূর্ণ করা চাই।  খাওয়া দাওয়া, ঘুম সব রেখে শুধু চিন্তায় মজে থাকি।  যাতে দুশ্চিন্তা আরো কয়েকগুণ বেড়ে যায়।  পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে। ঘুম ঠিকঠাক হলে আপনার মাইন্ড ফ্রেশ থাকবে। দুশ্চিন্তা অনেকাংশে কমে আসবে। 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ