শিশুর মনোবল বাড়ানোর উপায়
শিশুর বেড়ে ওঠায় শারীরিক এবং মানসিক উভয় দিকই গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর মানসিক বিকাশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো তার আত্মবিশ্বাস ও মনোবল গড়ে তোলা। আত্মবিশ্বাসী শিশু ভবিষ্যতে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারে সিদ্ধান্ত নিতে শেখে এবং প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও স্থির থাকতে পারে। শিশুর মনোবল গড়ে তুলতে হলে অভিভাবকদের সচেতন ও ধৈর্যশীল হতে হবে।
শিশুকে উৎসাহিত করুন
শিশু যখন নতুন কিছু শেখে বা চেষ্টা করে তাকে উৎসাহ দেওয়া জরুরি। “তুমি পারবে” বা “অসাধারণ চেষ্টা”এ ধরনের কথায় শিশুর আত্মবিশ্বাস বাড়ে। ব্যর্থ হলেও তার প্রচেষ্টাকে গুরুত্ব দিন এবং বলুন “পরের বার আরো ভালো করবে।”
শিশুর মতামতকে গুরুত্ব দিন
শিশু যদি কোনো বিষয়ে মতামত দেয় তবে সেটিকে গুরুত্ব দিন। এটি তার আত্মমর্যাদা বাড়াতে সাহায্য করে। পারিবারিক ছোট ছোট সিদ্ধান্তে (যেমন—সাপ্তাহিক ঘুরতে যাওয়ার জায়গা বেছে নেওয়া) তার মতামত চাওয়া যেতে পারে।
ব্যর্থতাকে স্বাভাবিকভাবে নিতে শেখান
শিশুদের বোঝাতে হবে যে ব্যর্থতা জীবনের অংশ। কোনো কাজে ব্যর্থ হলে তাকে দোষারোপ না করে বুঝিয়ে বলুন কীভাবে আরও ভালো করা যায়। এতে সে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে শিখবে।
শিশুকে স্বাধীন হতে দিন
শিশুর সবকিছু যদি বাবা-মা করে দেন তবে তার আত্মনির্ভরশীলতা কমে যাবে। নিজের ছোটখাটো কাজ যেমন পোশাক পরা, স্কুল ব্যাগ গুছানো, হোমওয়ার্ক করা ইত্যাদি করতে দিন। এতে তার আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
শিশুর দক্ষতা ও শক্তিকে গুরুত্ব দিন
প্রতিটি শিশুর আলাদা দক্ষতা থাকে। কারও আঁকতে ভালো লাগে, কেউ ভালো গান গায়, আবার কেউ খেলাধুলায় পারদর্শী। শিশুর আগ্রহ বুঝে তাকে সেসব কাজে উৎসাহ দিন। এতে সে নিজের শক্তিকে চিনতে পারবে।
তুলনা করা থেকে বিরত থাকুন
শিশুদের তুলনামূলক কথা শিশুর মনোবল কমিয়ে দেয়। বরং তার নিজের উন্নতির দিকে নজর দিন এবং তার সাফল্যকে স্বীকৃতি দিন।
শিশুর সাথে সময় কাটান
শিশুর মানসিক বিকাশে পরিবারের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তার অনুভূতি শুনুন, গল্প করুন, একসঙ্গে খেলাধুলা বা রান্নার মতো কাজে যুক্ত করুন। এতে সে বোঝে যে সে গুরুত্বপূর্ণ এবং ভালোবাসার যোগ্য।
ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে সাহায্য করুন
শিশুকে শেখান যে জীবনে সমস্যা থাকবেই, কিন্তু ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থাকলে সেগুলো মোকাবিলা করা সম্ভব। “আমি পারবো” মানসিকতা গড়ে তুলতে সহায়তা করুন।
শিশুর মনোবল বাড়ানোর জন্য অভিভাবকদের ধৈর্য ধরতে হবে এবং ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করতে হবে। শিশুকে ভালোবাসা, উৎসাহ ও সমর্থন দিলে সে আত্মবিশ্বাসী হয়ে বেড়ে উঠবে এবং ভবিষ্যতে সফল হতে পারবে।