রমজানে গ্যাস্ট্রিক রোধে করণীয়
রমজান মাস চলছে। আর রমজানে ইফতারে থাকে নানা রকমের ভাজাপোড়া। যেমন- তেলে ভাজা মচমচে চপ, ছোলা মাখা, মুড়ি মাখা, বেগুনি, ডিম চপসহ নানা ধরনের খাবার। আর সারা দিন রোজা রেখে এ-সব তেলযুক্ত খাবার বেশি খাওয়ার ফলেই এসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিকের মতো সমস্যা দেখা দেয়। এসিডিটি খুবই অস্বস্তিকর এবং ব্যথাজনক, যা মানুষের জীবনকে করে তোলে অতিষ্ঠ। বিশেষ করে, বাইরের খাবারে এ সমস্যাটি বেশি হয়। তবে এমন অনেক খাবার আছে, যা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাকে কমিয়ে, পেটের পিএইচ লেভেল ঠিক রাখে। মনে রাখবেন, গ্যাস্ট্রিক কমাতে কখনোই খালি পেটে থাকবেন না, এতে সমস্যা বেড়ে যাবে।
তাই, রমজানে ভাজা-পোড়া বেশি খাওয়ায় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিলে তা রোধ করতে পারে এমন খাবার খেতে হবে। গ্যাস্ট্রিক রোধে যে খাবারগুলো খাবেন:
ঠান্ডা দুধ:
ঠান্ডা দুধ অনেক উপকারী, গ্যাস্ট্রিকের চিকিৎসায়। যাদের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স অর্থাৎ দুগ্ধজাত খাবারে পেটে সমস্যা হয়, তারা বাদে সবাই ঠান্ডা দুধ খেতে পারেন, এসিডিটি কমাতে। জ্বালা-পোড়ার সমস্যা থেকে খুব দ্রুত মুক্তি দেয় ঠান্ডা দুধ।
জোয়ান:
এসিডিটি কমাতে জোয়ান অনেক কার্যকর। জোয়ানে এনজাইম ও বায়োক্যামিক্যাল রয়েছে, যা এসিডিটির সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।
আপেল সিডার ভিনিগার:
আপেল সিডার ভিনিগার পেটের পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং হজমের সমস্যা দূর করে। প্রতিদিন এক গ্ল্যাস পানির সাথে ১-২ চামচ আপেল সিডার ভিনিগার মিশিয়ে খেয়ে নিন।
তুলসি:
তুলসিপাতা কে না চেনে । তুলসিকে বলা হয় ‘সব রোগ সমাধানের ভেষজ উদ্ভিদ’। গ্যাস্ট্রিক সমস্যার জ্বালা-পোড়া রোধে তুলসিপাতার ভূমিকা অপরিসীম।
মৌরি:
হজমের সমস্যা, পেটের সমস্যা এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে মৌরি। আপনি প্রয়োজনে মিছরির সাথে মৌরি মিশিয়ে খেতে পারেন- এতে হজম-শক্তি বাড়বে।
সাইট্রাস-মুক্ত ফল:
যে-সব ফলে এসিডের পরিমাণ কম থাকে, যেমন- কলা, আপেল, পেঁপে ও তরমুজ পেটের জন্য ভালো। ফলগুলোতে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকায় পেটের অস্বস্তি দূর করে।
ডাবের পানি:
ডাবের পানিতে রয়েছে পটাশিয়াম, যা পিএইচের লেভেল ঠিক রাখে এবং এসিডিটি কমাতে সাহায্য করে।
আদা:
আদার যে প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তা হজমের সমস্যা ও এসিডিটি কমিয়ে দেয়। আদা চিবিয়ে খেতে পারেন কিংবা চায়ের সাথে মিশিয়েও খেতে পারেন।
মধু:
এক গ্ল্যাস উষ্ণ-পানিতে ১ চা-চামচ মধু মিশিয়ে খেলে গ্যাস্ট্রিক উপশম হয়।
ধনিয়াপাতা:
ধনিয়াপাতা অ্যাসিডিটির সমস্যায় খুব ভালো কাজ করে। ধনিয়াপাতার জুস খেতে পারেন।
দারচিনি:
দারচিনি হজমের জন্য খুবই ভালো। এক গ্ল্যাস পানিতে আধা চামচ দারচিনির গুঁড়ো ফুটিয়ে দিনে ২-৩ বার খেলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর হয়।
পুদিনাপাতা:
পুদিনাপাতা এসিড নিঃসরণের গতি কমায় এবং হজম-ক্ষমতা বাড়ায়। এই পাতার একটি শীতলীকরণ প্রভাবও আছে, যা এসিড রিফ্ল্যাক্সের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যথা এবং জ্বালা-পোড়া কমিয়ে দেয়। কয়েকটি পুদিনাপাতা কুচি কুচি করে পানির সাথে ফুটিয়ে ছেঁকে ঠান্ডা করে এর পানি পান করুন। এতে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা রোধ হবে।
অনন্যা/এসএএস