নিম্ন-মধ্যবিত্তের মায়াব্যঞ্জন ও যাদুবিদ্যা
বাড়ি ফিরতে রোজই বাবার সন্ধ্যা হয়ে যেত
রোজ আমরা বাবার জন্য অপেক্ষা করতাম
ভাইবোন সবাই গিয়ে বাড়বাড়িতে দাঁড়াতাম,
পথের শেষ প্রান্তে চাঁন রাইতের মত করে
আমরা বাবাকে খুঁজতাম
আমাদের ভাঙাচুরা মাও ইতিউতি বাবাকে খুঁজতেন।
বাবা যখন সন্ধ্যায় আমাদের বাড়ি ফিরে আসতেন
তখন আমাদের মনে ঈদের মত প্রবল আনন্দ হতো,
সারাদিন খেটেখুটে বাবা যা কিছু রুজি করতেন
তা দিয়ে তিনি হাট থেকে এটা ওটা কিনে আনতেন
কখনোই ব্যাগভর্তি সদাই কিনতে পারেননি বাবা
কোনোদিন চাল কিনলে নুন থেকে যেত বকেয়ার খাতায়
কোনোদিন মাছ কিনলে চালের পরিমাণ টপাস করে কমে যেত
অবশ্য এ নিয়ে আমাদের মায়ের কোনো অভিযোগ বা আক্ষেপ ছিলনা।
অথচ আমাদের মায়ের হাতে কি অদ্ভুত যাদুই না ছিল
অভাবের উনুনেও তিনি রাঁধতে পারতেন সুখের অষ্টব্যঞ্জন!
থালায় ধোঁয়া ওঠা সুখগুলো খেতে খেতে আমরা দেখতাম
বাবার ফোস্কা পড়া হাতে মা তেল মালিশ করছেন
মায়ের ঊনপেটের ওপর হাত রেখে বাবা দিব্যি ঘুমচ্ছেন।
আর আমাদের মা রাত জেগে জেগে নতুন মন্ত্র শিখছেন
কম মসলা দিয়ে কিভাবে সুখের মায়াব্যঞ্জন রাঁধতে হয়?