Skip to content

৯ই জুন, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ | শুক্রবার | ২৬শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

অ-সুখ জারিত শিল্প

'পৃথিবীর গভীর গভীরতর অসুখ এখন ' মানুষ তবুও ঋণী কার কাছে ? জীবনানন্দের কাছে l জীবনানন্দের মতো কবির, শিল্পীর প্রগাঢ় সূক্ষ্ম অনুভূতির কাছে l এই অনুভূতিগুলি আছে বলেইতো মরতে মরতেও জীবনের রঙে, লড়াকু পৃথিবী এখনো বাঁচে । বেঁচে থাকার স্বপ্ন বুনে চলে l

 

শিল্পী চন্দনা হোর নির্জনে সাধনা করা তেমনই একজন শিল্পী l যার চারণভূমির সৃষ্টিকণাতে রয়েছে বাবা মায়ের সুখ দুঃখ আলোছায়া l বাবা কর্ণফুলীর সন্তান পরবর্তী সময়ে বিশ্বভারতীর কলা বিভাগের শিক্ষক প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী সোমনাথ হোর l আমৃত্যু লড়াই এবং শিল্পের সাঁকো ধরে রাখা অভিন্ন এক নাম l মমতাময়ী মা সহজ সরল জীবনের জলছবি আঁকা বিখ্যাত চিত্রশিল্পী রেবা হোরl একমাত্র সন্তান চন্দনা,মোহনায় মিলিত হওয়া তরঙ্গায়িত নতুন এক  ঝিলিক l

 

বাবা, মা অনেকদিন নেইl একাকী শিল্পীর নির্জন মনোবেদনা করোনা পর্বে ভেতরে-বাহিরে, ঝড়ে আছড়ে পড়ার মতো করে দিলো প্রায় ছিন্ন বিচ্ছিন্ন l গভীরতর অসুখে ডুবে মরতে মরতে খড়কুটো ধরে ভেসে ওঠার মতনই প্রায় রং আর রেখার উল্কাপাতে নিজেকে যাচাই করে নেওয়ায় আপ্রাণ প্রয়াসl এ এমন এক অসুখ ভালোবাসে যারা, তারাও কাছে ঘেঁষতে পারে না l শিল্পী হৃদয় যে প্রাণের ওপর প্রাণের স্পর্শ চায়, জোছনা ফেনায় ভিজে উঠতে চায়, সংক্রামক প্রতিবন্ধকতা কঠোরতর নিষেধ জারি করে রাখে l কিন্তু শত বাঁধাতেও প্রাণের স্ফুলিঙ্গ নেভাবে কি করে?

 

শূন্য ক্যানভাস তাই ভেসে ওঠে নৌকোর মতো l পেনসিলে শিল্পী করে চলে রেখাপাতl রেখার পর রেখা জুড়ে ফুটে ওঠে মর্মবেদনাl কখনো রঙের আগুনে খুঁজে চলে প্রতিষেধকl এভাবেই রং আর রেখার বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে গড়ে ওঠে ' নির্জন দহনকাল 'l মরি বাঁচি আমিও আছি, আমারে দেবো না ভুলিতে l

 

সেই সব শিল্পাকৃতি মিলিয়ে জীবনযুদ্ধে হার না-মানা শিল্পীর দুটি একক প্রদর্শনী হল কলকাতায় l গত বছর সেপ্টেম্বরে দেবভাষা শিল্পালয়ে এবং এবছর মার্চে একাডেমি অফ ফাইন আর্টস গ্যালারিতেl চোখের সামনে আমরা জীবন্ত দেখলাম, কীভাবে মানুষ বেঁচে ওঠে ভালোবাসাহীনতায় বেদনায় জীবনের চরম আর্তিতেl পরম তাপে আমরা তপ্ত হয়ে উঠি l

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ