গর্ভবতী নারীর শারীরিক পরিবর্তন
গর্ভাবস্থায় নারীদের জীবনে যেমন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সময় ঠিক তেমনই অন্যতম কঠিন সময়। গর্ভবতী মায়েদের অতিরিক্ত যত্নের প্রয়োজন হয়। এই সময় শরীর কখনও ভাল থাকে, কখনও খারাপ। সুস্থ মা মানে সুস্থ সন্তান। তার জন্য শুধু শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকার প্রয়োজন। গর্ভকালীন সময়ে নারীর শরীরে অনেক ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়। তাই গর্ভবতী নারীর শারীরিক পরিবর্তন নিয়ে আজকে আমাদের আয়োজন।
গর্ভবতী সব নারীর শরীর ভারি হয়ে যায়। পুরো গর্ভকালীন সময়ে পনেরো কেজি পর্যন্ত ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। বেশির ভাগ গর্ভবতী নারীর বমি বমি ভাব হয়। তাই তারা ঠিক ভাবে খেতে পারে না। গর্ভাবস্থার হরমোনের বৃদ্ধির কারণে অনেক গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে মাড়ি থেকে রক্তপাত হয়। এর ফলে মাড়ি নরম ও আরও সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। জরায়ুর আকার বড় হয়ে যাওয়ার কারণে মূত্র থলিতে চাপ বেশি থাকে, তাই ঘন ঘন প্রস্রাব হয়।
শরীরের সামনের অংশ বেড়ে যাওয়ার কারণে পিঠের হাড়ে চাপ তৈরি হয়। পিঠে ব্যথা হতে পারে। গর্ভের বাচ্চার কারণে অনেকের শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যাও দেখা যায়। বুকজ্বালা অনেক গর্ভবতী মহিলাদের জন্য একটি সাধারণ উপসর্গ। গর্ভাবস্থায় রক্তশূন্যতা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কারণ এসময় শরীরে আয়রনের চাহিদা বেশি থাকে। গর্ভবতী নারীদের অনেক সময় রক্তে চিনির পরিমাণ বেড়ে যায় যাকে বলে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস। বেশিরভাগ সময় সন্তান প্রসবের পর এটি চলে যায়। এটি হল গর্ভাবস্থায় হজম প্রক্রিয়া হ্রাসের কারণে বদহজম হয়। তাই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত এবং দিনে খুব বেশি ভারী খাবার না খাওয়া শরীরকে খাদ্য হজম করতে সহজ করে দেয়।
গর্ভাবস্থায় ত্বকের ওপরও অনেক পরিবর্তন ঘটে। গর্ভাবস্থায় হরমোনের বৃদ্ধির কারণে ত্বক বিবর্ণ ও কালচে ভাব দেখা যায়। এছাড়া এসময় অতিরিক্ত আবেগ, মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, ভয়, রোগ,শোক ইত্যাদি যা গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যের পক্ষে অনেক ক্ষতিকর,তাই যতটা পারা যায় এসব এড়িয়ে ভালো চিন্তা করতে হবে। যেকোনো সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া যেকোন ওষুধ সেবন করা যাবে না। পানিশূন্যতা রোধে স্বাভাবিকের চেয়ে অধিক পরিমাণে পানি পান করতে হবে। সব ধরনের ঝুঁকি এড়াতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া আবশ্যক।