গয়না নয়, মর্যাদা দিন
নারী অলঙ্কার ভালোবাসে। কিন্তু তার পছন্দের বা রুচির
বাইতে গয়নাকে নিয়ে রয়েছে সাংস্কৃতিক আলাদা ভাবনা। এখনও দেশে অনেক স্থানেই রয়ে গেছে যৌতুক প্রথা। কোনো নারীকে গয়না দিয়ে সাজিয়ে দেয়া তারপর বিয়ের আসরে বসানোর দাবি। একজন নারীকে স্বর্ণে মুড়িয়ে দিয়ে রাখার মধ্যে কিন্তু নারীকে সম্মানের বিষয়টি থাকে না। একজন নারী তার ইচ্ছেমত সাজার ক্ষেত্রে তাকে দেয়া হয় বাঁধা। এই বাঁধাই ডাকে আটকে রাখে। অপর্ণা সেনের গয়নার বাক্স সিনেমাটার কথাই ধরা যাক। এক বৃদ্ধার গয়নার বাক্সে তাল তাল গয়না। আর এই গয়নার জোরেই বৃদ্ধা সংসারে ঠ পায়, পায় মর্যাদা এমনটা কি মর্যাদা? অবশ্যই নয়।
বিয়েতে এখন তো যৌতুকের চল নেই। খবর পেলে পুলিশ ধরবে বলো এখন উপহারের চল। তা সেই উপহারের মধ্যে ছেলেদের গয়না দেয়া প্রচলিত আইন হয়েছে। মেয়ের মা ছেলেকে আশীর্বাদ করতে এসে পাঁচ-ছ’ ভরি গয়না পরিয়ে গেলেন ছেলেকে। অথবা বাসর রাতে কনে, তার প্রিয় বরকে উপহার দিল একটা নেকলেসা এমনটা এখন নতুন নাম নিয়েছে। দিন নাকি এতো পাল্টেছো মানুষ রোবটের হাতে খাবার গচ্ছে। মঙ্গলে জন পাওয়া যাচ্ছে। তো এবার মেয়েদের শেকল
পড়ানোর ছলটা ভাঙা জরুরি। গয়নার নামে মেয়েদের সঙ্গে যুগ যুগ ধরে চলা ভাঁওতাবাজি বন্ধ করা জরুরি গয়না নয়, মেয়েদের মর্যাদা দিতে হবে। সম্পত্তিতে মেয়েদের সমান অধিকার দিনা দয়া করে গয়নার রাজনীতি থেকে মেয়েদের বেরোতে দিন। তাহলে গয়নার বাক্সের গল্পটার অন্তত ইতি ঘটবে! নারীদের গয়না অনেক সময় নারীর অধিকারই নয়। তা শ্বাশুড়ির হেফাজতে রাখার কথা বলা হয়। অনেক সময় গহনা নারীর হলেও তা বিক্রির জন্য স্বামী বারবার চাপ দেন। অনেক নারী উদ্যোক্তা হতে চান। তার পক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব না গয়না কিভাবে কি করবেন। আবার দেখা যায়, তার স্বামীর পরিবারই জোর করে বিক্রি করে দিচ্ছে। নারীদের বিভিন্ন সময়ে গয়না দেয়া হয়। ভাবা হয় ভবিষ্যতের কথা। অদূর ভবিষ্যতে কি হবে সেসব নিয়েই যত দুঃশ্চিন্তা। অথচ এই বর্তমানেই তাদের কত কাজে আসতে পারতো কতকিছু সেদিকে কারও খেয়াল থাকে না। এমনটি আরও ক্ষতিকর।
নারীকে আসলে মর্যাদা দিতে হবে। তার চাহিদা, তার সম্পদ ব্যবহারের অধিকার সুনিশ্চিত করার বিষয়টাকে গুরুত্ব দিতে হবে। যদি তা না হয় তাহলে পুরোনো সনাতনী ব্যবস্থা থেকে বের হওয়া যাবে না।