পোশাক কি কারো পরিচয় বহন করে!
মানুষের মৌলিক অধিকারের একটি হলো বস্ত্র অর্থাৎ পোশাক। মানুষ প্রতিদিন নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী পোশাক পরিধান করে থাকেন। কেউ পর্দা করেন, আবার কেউ করেন না। কেউ ওয়েস্টার্ন পরেন তো কেউ থ্রি-পিস কিংবা শাড়ি পরেন। কিন্তু এই পোশাক কি কখনও কারো পরিচয় বহন করে?
পোশাক নিয়ে সবচেয়ে বেশি বিভ্রান্তিতে পরতে হয় নারীদের। কারণ পুরুষ নিজের ইচ্ছে মতো পোশাক পরে আর তাদের পোশাক নিয়ে তেমন কোন সমালোচনা হতে দেখা যায় না। কিন্তু নারী পোশাক নিয়ে সবসময় বিতর্কিত হয়। আর এই বিতর্কিত হওয়ার কারণে নানান সময়ে নারী নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী পোশাক পরতে পারেনা।
নারী স্বাধীনতায় পোশাক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নারী থ্রি-পিস, শাড়ি নাকি ওয়েস্টার্ন পরবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার শুধুমাত্র নারীর।
যেমন ধরা যায় একজন মেয়ে হিজাব পরতে পছন্দ করে সে তার পোশাকের সাথে ম্যাচিং করে হিজাব পরে। কিংবা মাথায় কাপড় দিতে ভালো লাগে তাই সে মাথায় কাপড় দেয়। বর্তমানে যে শুধুমাত্র মুসলিম মেয়ে বা নারীরা হিজাব পরে এমনটা নয়। অন্য ধর্মাবলম্বীরাও হিজাব পরে, বা মাথায় কাপড় দেয়। অর্থাৎ হিজাব পরা না পরা, মাথায় কাপড় দেওয়া না দেওয়া সম্পূর্ণ নারীর নিজের ইচ্ছা।
চাকরির প্রয়োজনে অর্থাৎ জীবিকার তাগিদে বা নিজের প্যাশনকে অগ্রাধিকার দিতে নারীকে অনেক সময় পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে পোশাক পরতে হয়। যেমন একজন সংবাদ উপস্থাপিকা তার সংবাদ পাঠের সময় প্রয়োজন অনুযায়ী পোশাক পরে। কখনও শাড়ি, কখনও কামিজ, আবার কখনও কোর্ট। একেক সময় একেক পোশাক পরতে হয় কিন্তু তাদের পরিচয় একটাই থাকে যে তারা সংবাদ পাঠিকা।
পোশাক যে কারো পরিচয় বহন করে না তার উদাহরণস্বরূপ আমরা আমাদের মায়েদের কথা বলতে পারি। বাড়িতে একেকজনের মা একেক ধরনের পোশাক পরে। কারো মা শাড়ি পরে তো কারো মা কামিজ। এতে কিন্তু তাদের পরিচয় পরিবর্তন হয় না। তারা মা মাই থাকেন। একইভাবে নারী শাড়ি পরুক, কামিজ পরুক বা ওয়েস্টার্ন পরুক তার পরিচয় সে নারী। সে হিন্দু নাকি মুসলিম, জব করে কি না, কোন পোশাক পরতে পারবে, কোনটা পারবে না এসব কিছুই একজন নারীর পরিচয় বহন করতে পারে না।