Skip to content

৬ই মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | সোমবার | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তবে কি বিবাহ বিচ্ছেদে নারীদের আগ্রহই বেশি?

করোনায় জীবনযাত্রার মান কমার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সংসার ভাঙন। আর এই ভাঙনে বেশি এগিয়ে আসছেন নারীরাই৷  

 

চলতি বছরের হিসেবে শুধু রাজধানী ঢাকায় দৈনিক ৩৮ টি করে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে। অর্থাৎ প্রতি ৩৮ মিনিটে একটি করে সংসার ভেঙে যাচ্ছে।  গত বছরের তুলনায় এবছর বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা প্রতি মাসে ৯৯ টি করে বাড়ছে।  

 

ঢাকার দুই সিটির তথ্য অনুযায়ী এই বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনায় ৭৫ শতাংশই নারীরা এগিয়ে আসছেন।  মানে প্রতি ১০০ জনে ৭৫ জন নারী ডিভোর্স দিচ্ছেন। গত বছরও ডিভোর্স দেওয়ার বিষয়ে নারীরাই এগিয়ে ছিলেন যা ছিল ৭০ শতাংশ।  কিন্তু এবছর তা আরো বেড়ে গিয়েছে। 

 

এছাড়াও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মতের অমিল, পারস্পরিক বোঝাপড়া না হওয়াও বিচ্ছেদের বড় কারণ। নারীদের পক্ষ থেকে বেশি ডিভোর্স দেওয়ার পেছনে করোনাকালে নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধিকেই প্রধানত দায়ী করছেন তারা। 

 

তথ্য মতে, পুরুষরা বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে মূলত তাদের প্রতি স্ত্রীর সন্দেহপ্রবণতা, সংসারের প্রতি স্ত্রীর উদাসীনতা, বদমেজাজ, সন্তান না হওয়া ইত্যাদি তুলে ধরেছেন। এবং নারীরা কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন পরকীয়া প্রেম, যৌতুকের জন্য নির্যাতন, মাদকাসক্তি ইত্যাদি। 

 

তবে নারীদের বিচ্ছেদের প্রতি আগ্রহ বেশি থাকার কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে,  পাশাপাশি নারীরা এখন বেশি স্বাবলম্বী হচ্ছেন। তাই তালাকের পর কিভাবে চলবেন, তা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে না। সমাজও এখন মেয়েদের স্বাধীনভাবে চলাফেরা স্বাভাবিকভাবে দেখতে শুরু করেছে। তাই করোনাকালে নারীদের ওপর যে নির্যাতনের মাত্রা বেড়েছে তা মেনে না নিয়ে এর থেকে পরিত্রাণ পেতে অনেক নারী ডিভোর্সের দিকে ঝুঁকছেন। এবিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, মেয়েদের শিক্ষার হার বেড়ে গেছে। পাশাপাশি পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার বিরুদ্ধে তারা প্রতিবাদও করছে। স্বামী অথবা পরিবার কর্তৃক শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলছে। নারীর ক্ষমতায়নের দিকে জোর দেওয়া হয়েছে। ফলে একেবারে প্রান্তিক পর্যায়েও উপার্জনক্ষম নারী বাড়ছে। অর্থনৈতিক মুক্তি শুধু কারণ নয়, আদর্শিক চিন্তার পরিবর্তনও একটা বড় কারণ। এ জন্য নারীরা সাহস করে তালাক দিতে পারছে। 

 

বিষয়টি এখন এমন যে সংসার ভাঙনে নারী এগিয়ে আসছে যেমন ঠিক, তেমন আগেকার যুগের মত নির্যাতন ও পুরুষতান্ত্রিকতার নামে নিজেদের বিলীন করে দেওয়ায় নারীরা আর বসে নেই। নারীরা নিজের দায়িত্ব নিতে সোচ্চার হওয়ার পাশাপাশি সহিংসতার বিরুদ্ধেও সোচ্চার এখন।

 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ