Skip to content

৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যেভাবে এল নারীদিবস

আধুনিক বিশ্বে নারী-পুরুষ সমান অধিকার নিয়ে একই সঙ্গে কাজ করছে সবগুলো ক্ষেত্রেই। তবে নারীর ন্যায্য অধিকার নিয়ে কর্মস্থলে পুরুষের পাশাপাশি সফলভাবে কাজ করতে পারার পেছনে রয়েছে এক সাহসী সংগ্রামের ইতিহাস।
সংগ্রামী এই ইতিহাসের শুরু ১৮৫৭ সালে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সুতা কারখানার নারী শ্রমিকরা তাদের কাজের সময় ১২ ঘণ্টা থেকে আট ঘণ্টায় কমিয়ে আনা ও বৈষম্যহীন ন্যায্য মজুরি আদায়ের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। তাদের এ আন্দোলনে আটক হন অনেক নারী শ্রমিক। পরবর্তীসময় ১৯০৮ সালে নিউইয়র্কে বস্ত্রশিল্পের নারী শ্রমিকরা কাজের সুস্থ পরিবেশ, সময় ও যোগ্য মজুরির দাবিতে আন্দোলন করেন। জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সেবছর সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। নারীদের সম্মানে যুক্তরাষ্ট্রের সমাজতান্ত্রিক দল পরের বছর অর্থাৎ ১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয়ভাবে নারী দিবস পালন করা হয়। 

যেভাবে এল নারীদিবস
এরপর ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। এতে অংশ নেয় ১৭টি দেশ থেকে আসা ১শজন নারী প্রতিনিধি। এতে ক্লারা জেটকিন প্রতিবছর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব দেন। সম্মেলনে নারীর অধিকার নিশ্চিত করতে ১৯১১ সাল থেকে ০৮মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা করা হয়।
এ ঘোষণা আলোড়িত করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে। ১৯১১ সালের ১৯ মার্চ প্রথমবারের মতো অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, জার্মান ও সুইজারল্যান্ডের এক মিলিয়নেরও বেশি নারী যোগদান করে নারী দিবসের অনুষ্ঠানে। একই সঙ্গে এগিয়ে আসে পুরুষরাও। তারা নারীদের ভোটদান ও সরকারি অফিসে কাজ করার অধিকার আদায়ের দাবি জানান। ধীরে ধীরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে যেতে থাকে নারী অধিকারবিষয়ক সচেতনতা। ১৯১৩ সাল থেকে ১৯১৪ সালের মধ্যে রাশিয়া ফেব্রুয়ারির শেষ রবিবার পালন করে আন্তির্জাতিক নারী দিবস। ১৯১৪ সালের ৮ মার্চ প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেওয়ার দাবিতে ইউরোপে নারীরা একটি র‌্যালি বের করেন। সে বছর বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশেই দিনটি পালন করা হয়। ১৯৪৫ সালে সান ফ্রান্সিসকোতে ‘জেন্ডার ইক্যুয়ালিটি’ চুক্তিতে নারী অধিকারের যৌক্তিক দাবিগুলো বিবেচনায় রেখে স্বাক্ষর করে জাতিসংঘ। সেই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম পালিত হয় নারী দিবস। 

যেভাবে এল নারীদিবস
১৯৭৫ সালের ৮ মার্চ দিনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘ প্রথম আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রদের নারী অধিকার ও বিশ্বশান্তি রক্ষার জন্য জাতিসংঘ নারীদিবস হিসাবে ৮মার্চকে ঘোষণা করার আহ্বান জানায়। ঐতিহাসিক সংগ্রামের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘ এই সিদ্ধান্ত নেয়। ২০০৯-এ বিশ্বের ২৯টি দেশে সরকারি ছুটিসহ প্রায় ৬০টি দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে দিবসটি পালিত হয়েছে। ২০১০ সালে বিশ্বজুড়ে নারীদিবস পালন করা হয় ও অভূতপূর্ব সাড়া মেলে। সেই থেকে ৮মার্চ আন্তর্জাতিক নারীদিবস হিসেবে বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ