হয় নারী কঠিন হবে কিংবা গ্যাসলাইটিং-এর স্বীকার হবে
মানসিক ভাবে দুর্বল হওয়ায় মেয়েরা একটা বাজে সম্পর্ক থেকে বের হয়ে আসতে পারেনা। কারণ মেয়েদের কোনো সম্বল বলে কিছু নাই। নিজের পরিচয় বলেও কিছু থাকে না মাঝেমধ্যে। যদিও অনেক নারী নিজেদের মত উপার্জন করে টিকে আছে। সিঙ্গেল মাদারও আছে অনেক। যারা নিজের টা আর নিজের সন্তানের টা নিশ্চিত করতে পারছে। তবে সেটা নিশ্চয়ই মোটা অংকের নারীরা না!
বিয়ের কথা বাদই দিলাম। প্রেমের সম্পর্কেও একজন নারী পারে না বের হয়ে আসতে। যদিও সে জানে সে এখানে ভালো নেই। জীবনের কঠিন সময়ে সে যেনো একা না হয়ে পরে৷ মানসিক বিপর্যয়ের সময় তার যেনো একা হয়ে যেতে না হয় সেজন্য ধরে রাখে সে সেই সম্পর্কটি।
এক্ষেত্রে, প্রেমিক বা স্বামী তাকে গ্যাসলাইটিং এর ফাঁদে ফেলে। গ্যাসলাইটিং এক ধরণের মগজের খেলা। যেখানে তার পার্টনার তাকে মানসিক ভাবে অসুস্থ প্রমাণ করার চেষ্টা করে। কিছু উদাহরণ দেয়া যাক, বাইরে কোকিল ডাকছে। স্বামী বললো- আরে ওটা তো ডাহুক! ধরা যাক, তরকারিতে ঝাল নুন বেশি হলো। স্বামী বললো- আরে এতো মিষ্টি, খেতে পারছি না! ধরা যাক, ঘরের সোফাটা ডান থেকে বাম দিকে ঘুরিয়ে রেখে দিয়ে বললো, এটা অনেক দিন ধরেই এমন আছে! তুমি দেখোনি?

এই রকম কথা বলতে বলতে একদিন স্ত্রী নিজেই ভাবতে শুরু করলো সে মানসিক রোগী। কিংবা স্বামী কিংবা প্রেমিক এই সমস্ত কিছুর সুযোগ নিয়ে একদিন বড়সড় কোনো অপরাধের দ্বায় তার স্ত্রীকে দিয়ে দিলো। তখন স্ত্রী বা প্রেমিকা সেটা মাথা পেতে নিলো৷ তার মনে হতে লাগলো হয়তো সে মনের ভুলেই এই কাজটি করেছে।
এই গ্যাসলাইটিং এর প্রক্রিয়াটি বেশীর ভাগ হয় তখন যখন কোনো নারী মৌলিক চাহিদার জন্য কোনো পুরুষের উপর নির্ভরশীল হয়। মানসিকভাবে একটা নির্ভরশীলতা যখন তৈরি হয় তখন। তখনই পার্টনার তার সাথে গ্যাসলাইটিং খেলা খেলে। এরকম পরিস্থিতি নিয়ে আসতে পারে ভয়ংকর কোনো পরিণাম৷ নিজের প্রতি এত ঘৃণা আর অপরাধবোধ এত বেশী কাজ করে যে একটা সময় সে মানুষটি বেচে থাকতেও চায় না। এর জন্য আত্মহত্যা এবং সত্যিকার অর্থে মানসিক ভাবে মরে যায় সে মানুষটি।
এই অবস্থার মোকাবেলা করা টা প্রায় অসম্ভব। কিন্তু প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব। প্রতিরোধ হলো, নারীকে নিজের জায়গা প্রতিষ্ঠা করতে হবে৷ নিজেকে উপার্জনশীল হিসেবে প্রস্তুত করতে হবে৷ নিজেকে এমন অবস্থায় নিয়ে আসতে হবে যেনো অন্য কেউ তাকে ম্যানুপুলেট করার মত জোরটা না পায়।

তাহলেই সম্ভব গ্যাসলাইটিং এর মত মগজের খেলা এড়ানো৷ নারীকে যতই অবলা প্রমাণ করার চেষ্টা করা হোক না কেন৷ নারী কিন্তু একজন আলাদা স্বত্তা। তার নিজের বোঝ টা নিজেরই বুঝে নিতে হবে। কারণ, কেউ ই কখনো কাউকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে না।
অনন্যা/জেএজে