মাটির হাঁড়ি কুড়ির বর্তমান ট্রেন্ড
একটি জনপ্রিয় কথা আছে হিস্টোরি রিটার্নস – ইতিহাস ফিরে আসে। একটা সময় ছিল মাটির হাঁড়ি-কুড়ি বাসন কোসনে রান্না থেকে শুরু করে খাওয়া পর্যন্ত হতো। যুগের সাথে সাথে সবকিছুই হারিয়ে গেছে। সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়েছে রুচি ও চাহিদা। তেজসপত্রে এসেছে অনেক ধরনের ভিন্নতা। বর্তমান সময়ের মানুষ খুব ট্রেন্ডি তারা সবকিছুই খুব সুন্দর ভাবে ব্যবহার উপযোগী বানিয়ে তোলে। সব সময় তাদের চিন্তাভাবনায় থাকে কিভাবে নতুন কিছু নতুন করে উপস্থাপন করা যায়।
মাটির বাসন-কোসনে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আগে জানি তারপর বর্তমান সময়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাবে
বিভিন্ন গবেষণায় জানা গেছে রান্নার জন্য বানানো এসব ধাতব উপাদানের পাত্রের তুলনায় মাটির তৈরি পাত্র অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। মাটির পাত্রে রান্না করা হলে খাবারের পুষ্টিগুণ , স্বাদ ও মান অক্ষুন্ন থাকে। তবে শুধু এসব কারণের জন্যই মাটির পাত্র বেছে নেওয়ার একমাত্র কারণ নয়। আরো কিছু উল্লেখ্যযোগ্য কারণ আছে। সেগুলো জেনে নেই।
তেল লাগে কম
মাটির পাত্রে রান্না করলে তেল সাশ্রয় হয়। ধীরগতিতে রান্না ও তাপ নিরোধক হওয়ায় এটি খাবারের প্রাকৃতিক তেল ও আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। মাটির পাত্রে তেল-মসলার ঝাঁজ অক্ষুন্ন থাকে।
স্বাদ ও গন্ধ অটুট রাখে
খাদ্যের পুষ্টিমান বজায় রেখে স্বাদ ও গন্ধ অক্ষুণ্ন রাখে বা বাড়িয়ে দেয় মাটির পাত্র। অন্যান্য উপাদানের তৈজস দিয়ে এটা সম্ভব নয়।
তাপ প্রতিরোধী
উচ্চ তাপে মাটির পাত্র রাখলেও তা ভেঙে যায় না। মাটির পাত্রগুলো উচ্চতাপে পুড়িয়ে বানানো হয় বলে এটি অনেকটা তাপপ্রুফ হয়ে ওঠে। তা ছাড়া এটি তাপ প্রতিরোধী বলে পরিচিত। এগুলো আপনার খাবারকে দীর্ঘ সময়ের জন্য গরম রাখতে পারে।
দুগ্ধজাত খাবারের জন্য উপযুক্ত
মাটির পাত্র দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার সংরক্ষণের জন্য খুবই নিরাপদ। মাটির পাত্রে দুগ্ধ জাতীয় খাবার ঠান্ডা থাকে এবং এটি দুধকে টক হতে বাধা দেয়। এ ছাড়া যখন মাখন এবং দইয়ের মতো খাবার মাটির পাত্রে রাখা হয়, তখন এটি একটি সুগন্ধ দেয়।
তাপ প্রতিরোধী
উচ্চ তাপে মাটির পাত্র রাখলেও তা ভেঙে যায় না। মাটির পাত্রগুলো উচ্চতাপে পুড়িয়ে বানানো হয় বলে এটি অনেকটা তাপপ্রুফ হয়ে ওঠে। তা ছাড়া এটি তাপ প্রতিরোধী বলে পরিচিত। এগুলো আপনার খাবারকে দীর্ঘ সময়ের জন্য গরম রাখতে পারে।
প্রাকৃতিক ক্ষারীয় উপাদান
মাটির পাত্র কাদা দিয়ে তৈরি করা হয়। যাতে প্রাকৃতিক ভাবে ক্ষারীযুক্ত হয়। তাপ প্রয়োগে মাটির পাত্র খাবারের অ্যাসিডের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে এবং পিএইচ’য়ের ভারসাম্য বজায় রাখে। যা খাবারকে সহজপাচ্য করে।
তাছাড়া এটা খাবারের পুষ্টি উপাদান যেমন- লৌহ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগ্নেসিয়াম এবং সালফার ঠিক রাখে
মাটির পাত্রে পানি পান
মাটির পাত্রে পানি রাখলে সেই পানি ঠান্ডা থাকে। মাটির পাত্রে রাখা পানি পান করলে শরীরের মেটাবলিজম সঠিক রাখে, গরমে রোদের তীব্রতা থেকে বাঁচায়, শরীরে টক্সিক কেমিক্যালের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে মাটির পাত্রে রাখা পানি। মাটির পাত্রে রাখা পানি পান করলে তৃপ্তি অনুভব হয়।
মাটির তৈজস পত্রের ব্যবহার
ইতিহাসের পুনরাবৃত্তিতে ফিরে এসেছে মাটির তৈজস পত্রের ব্যবহার। বর্তমানে এর ব্যবহার বিশাল ভূমিকা রাখছে। বাসা বাড়ি থেকে রেস্টুরেন্ট সব জায়গায় ভিন্নতা আনতে ব্যবহার হচ্ছে মাটির তৈজসপত্র। দেশের বিভিন্ন স্থানে এর ব্যবহার ব্যাপক পরিসরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবার মাটির হাঁড়িতে রান্না কে কেন্দ্র করেই বিভিন্ন ধরনের আইটেম তৈরি হচ্ছে। ঢাকার বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে খাবার পরিবেশন করা হয় সকল প্রকার মাটির তৈজসপত্রে। বরিশালে একটি রেস্টুরেন্ট তৈরি হয়েছে যেখানে পুরো থিম রাখা হয়েছে মাটির সকল তেজসপত্রকে ঘিরে।
দাম ও কোথায় পাওয়া যায়
দোয়েল চত্বরে মাটির জিনিসের এক বিশাল সমাহার রয়েছে সেটা আমরা কম বেশি সবাই জানি। এছাড়া অনলাইন শপগুলো এখন মাটির তৈজসপত্র বিক্রিতে তাৎপর্য ভূমিকা পালন করছে। এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় ভ্যানে করে মাটির তৈজসপত্র দেখা যায়।
দাম খুব কম না আবার খুব বেশিও না। সুবিধা হচ্ছে মন মত কিনা যায় একটা লাগে একটা পুরো সেট লাগলে পুরো সেট। তবে দাম সাধ্যের মধ্যেই।