মানসিক চাপ কমাতে পারেন যেভাবে
দৈনন্দিন জীবনে চলার পথের অংশ হিসেবে আমাদের অনেক কিছুর মুখোমুখিই হতে হয়। তার মধ্যে অন্যতম একটি বলা চলে ‘মানসিক চাপ’। এ যেনো আমাদের রোজকার জীবনেরই একটি অংশ। তবে অবশ্যই এ অংশটি শারীরিক বা মানসিক কোনো দিক থেকেই সুখকর নয়। মানসিক চাপের কারণে বিভিন্ন ধরণের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সময় থাকতেই দৈনন্দিন জীবনে মানসিক চাপ কিভাবে কমানো যায় তা খেয়াল রাখতে হবে।
মানসিক চাপ কিভাবে কম করা যায় তা জানার আগে একটু জেনে নেয়া যাক মানসিক চাপ তৈরি হওয়ার কারণগুলো ঠিক কী কী হতে পারে:
১.পারিপার্শ্বিক অবস্থা।
২.একঘেয়ে জীবনযাপন।
৩. ক্লান্তি বা দুর্বলতা।
৪. দুশ্চিন্তা, শোক, অপরাধবোধ।
৫. দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক রোগ।
৬. অতিরিক্ত কাজের চাপ ইত্যাদি।
এবার চলুন জেনে মানসিক চাপ কমাতে কি কি পদক্ষেপ নেxয়া যেতে পারে:
১. শরীরচর্চা: প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে, নিয়মিত ৩০ – ৪০ মিনিট বিভিন্ন প্রকার শরীরচর্চা করতে পারেন। যেমন- নিয়মিত হাঁটাহাঁটি, সাঁতার কাটা এছাড়াও কিছু ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে পারেন৷ আপনার ঘরের বাইরে যেতে সমস্যা হলে ঘরের মধ্যে বসেই বিভিন্ন ধরণের ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে পারেন। নিয়মিত শরীরচর্চা এন্ডরফিন নামক একপ্রকার হরমোন নিঃসরণ করে যা শরীরকে উদ্দীপ্ত রাখে, কাজ করার শক্তি জোগায়। যার ফলে মানসিক চাপও হ্রাস পায়।
২.মেডিটেশন: মেডিটেশন আপনাকে মানসিকভাবে অনেকটাই চাঙ্গা করে তুলতে পারে। শুধু তাই নয় অপ্রয়োজনীয় চিন্তা থেকে সরিয়ে কাঙিক্ষত লক্ষ্যে মনোনিবেশ করতেও সহায়তা করে মেডিটেশন। নিয়মিত মেডিটেশন করলে আপনার আত্মবিশ্বাসও বৃদ্ধি পাবে এবং মানসিক চাপ অনেকাংশেই কমে যাবে।
৩.উপযুক্ত খাদ্যতালিকা: মানসিক চাপ কমাতে হলে শুরুর দিকেই একটি উপযুক্ত খাদ্যতালিকা তৈরি করুন। খাবারের হেরফের’ এর কারণেও অনেক সময় মানসিক চাপ বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই সবার আগে খাদ্যতালিকা ঠিক করতে হবে। নিয়মিত, পরিমিত পরিমাণে সুষম খাদ্য খেতে হবে। ফল, শাক-সবজি, প্রোটিন বেশি করে খেতে হবে। পানি প্রচুর পরিমাণে পান করতে হবে। তেলে ভাজা, ঝাল, শর্করা ও চর্বিজাতীয় খাবার, সিগারেট, কফি, এলকোহল ইত্যাদি যতটা সম্ভব পরিহার করতে হবে।
৪.অবসরে কিছু কাজ: অবসর সময় আমরা অনেক সময় বিভিন্ন ধরণের চিন্তা করেই কাটিয়ে দেই। এসব একদমই করা যাবেনা। অবসর সময়ে যেনো অতিরিক্ত মানসিক চাপ এসে ভর করতে না পারে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এক্ষেত্রে বই পড়ে, গান শুনে, বাগান করে বা অন্য কোনো শখের কাজ করে মানসিক চাপমুক্ত হতে পারেন।
৫.পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম: অনিয়ম করে ঘুম ও পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাবেও মানসিক চাপ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেতে পারে। পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রামের অভাবে শরীরে ক্লান্তি ভর করতে পারে আর তার থেকে আসতে পারে বিষন্নতা। পর্যাপ্ত ঘুম শরীর এবং মনের ক্লান্তি দূর করে, শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াগুলোকে সচল রাখতে সহায়তা করে। তাই মানসিক চাপ কমাতে পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রামের বিকল্প নেই।
দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে অল্প কিছু মানসিক চাপ থাকবেই। তবে তা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে হয় তবে তখনই হতে চিন্তার বিষয়। মানসিক চাপ দীর্ঘসময় বয়ে বেড়ালে যেকোনো ধরণের বিপদ হয়ে যেতে পারে। মানসিক চাপ থেকেই রক্তচাপে হেরফের দেখা দেয়। অনেক ক্ষেত্রে হৃদরোগের কারণও মানসিক চাপ। তাই মানসিক চাপ কমাতে কিছু নিয়ম মেনে চলে অনায়াসে সুস্থ জীবন যাপন করতে পারেন।