ম্যাগসেসে পেলেন অনন্যা শীর্ষদশ জয়ী ড. ফেরদৌসী কাদরী
রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কারকে এশিয়ার নোবেল পুরস্কার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এশিয়ার বিভিন্ন ব্যক্তি এবং সংগঠনকে স্ব-স্ব ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান ও কৃতিত্বের জন্য দেয়া হয়ে থাকে এই পুরস্কার। এ বছর এই পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানী ড. ফেরদৌসী কাদরী।
১৯৫১ সালে ৩১ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৭৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও আণবিক জীববিদ্যা বিভাগ থেকে বিএসসি ও ১৯৭৭ সালে এমএস ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। এরপর ১৯৮০ সালে যুক্তরাজ্যের লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন/প্রতিষেধকবিদ্যা বিভাগ থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর, বি) ১৯৮৮ সালে সহযোগী বিজ্ঞানী হিসেবে যোগ দেন। পরে তিনি একই প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী এবং মিউকোসাল ইমিউনোলজি ও ভ্যাকসিনোলজি বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন।
ড. ফেরদৌসী ২০১৪ সালে ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ ইনিশিয়েটিভস প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে বায়োমেডিকেল গবেষণা, ট্রেনিং কোর্স ও টেস্টিং সেন্টার পরিচালনা করা হয়। এটি বাংলাদেশের স্থানীয় ও ভিজিটিং বিজ্ঞানীদের কাজের একটি কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশ ও তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর কলেরা নির্মূলে তার গবেষণা কাজগুলো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। তিনি ২৫ বছর ধরে টিকা উন্নয়নে কাজ করছেন। ব্যয়বহুল ‘ডকোরাল’ টিকার পরিবর্তে ‘শানকল’ নামক একটি টিকা ঢাকায় ব্যবহার করে সফলতা লাভ করেন। পরবর্তীতে টিকাটি বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য বিশেষ করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।
তিনি ২০২০ সালে কাজের স্বীকৃতি হিসাবে ল রিয়েল ইউনেস্কো ফর উইমেন ইন সায়েন্স অ্যাওয়ার্ড পান। একই বছর সিঙ্গাপুর ভিত্তিক বিজ্ঞান সাময়িকীর হিসাবে এশিয়ার সেরা ১০০ বিজ্ঞানীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন তিনি। ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশের নারীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে 'অনন্যা শীর্ষ দশ' পুরস্কার দিয়ে আসছে অনন্যা ম্যাগাজিন। চিকিৎসা ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার জন্য ২০১৩ সালে অনন্যা শীর্ষ দশ পুরস্কার পান তিনি। এছাড়াও তার ঝুলিতে রয়েছে অসংখ্য সম্মাননা।