শাবির প্রথম নারী কোষাধ্যক্ষ: এগিয়ে যাক আমিনা পারভীনরা
নারী-পুরুষের বৈষম্য এ সমাজে চিরন্তন। তবে বর্তমান সময়ে নারীরা জীবন সম্পর্কে অনেকটা সচেতন হচ্ছে। ফলে দেশ-বিদেশে নারীরা বাধার দেওয়াল ডিঙিয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হচ্ছে। আজকাল নারীরা বিভিন্ন অঙ্গনেই বেশ পারদর্শিতার সঙ্গে নিজের যোগ্যতা- কর্মদক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। আলোকিত করছে পৃথিবী। তবু নারী নির্যাতন কিন্তু থেমে নেই। পত্রিকার পাতা খুলতেই একের পর এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সামনে আসে। যখন এসব ঘটনা সামনে আসে তখন জীবন সম্পর্কে এক ধরনের উৎকন্ঠা তৈরি হয়। তবে সেই ভীতি- হতাশা কাটিয়ে উঠতেও যে এই নারীরা হাল ধরছেন না এমনটা নয়।
আমাদের সমাজের নারীরা তাদের মেধা- মনন এবং কাজের প্রমাণ দিয়ে নিজের অবস্থান সৃষ্টি করছে। তারপরও পরিবার- সমাজে শিক্ষিত- অশিক্ষিত – অর্ধশিক্ষিত সব ধরনের নারীই নানাভবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। যারা নিজেদের মানসিক শক্তিকে কাজে লাগিয়ে পথ চলতে সক্ষম হচ্ছে তারাই সাফল্যের মুখ দেখছেন।
তবে হ্যাঁ নারীদের চলার পথ কখনোই সহজ ছিল না। আজও নেই। বরং সময়ের সঙ্গে জটিলতাগুলো ভিন্ন রূপ ধারণ করছে। তবু আশার কথা এই যে, এসব অনাকাঙ্ক্ষিত, অপ্রীতিকর ঘটনার মধ্যেও মন ভালো করা কিছু ঘটনা ঘটছে। যা নারীদের জন্য শুধু প্রেরণায় নয় বরং পথনির্দেশও বটে। এই নারীরা প্রমাণ করতে সক্ষম হচ্ছেন যে, তারা যদি এ সমাজে থেকে শত প্রতিকূলতা পাড়ি দিয়ে সাফাল্যের চূড়ায় পৌঁছাতে পারেন তবে অন্যরাও পারবেন। তবে তার জন্য কঠোর সাধনা- পরিশ্রম – মেধা ও অধ্যবসায় জরুরি। আজ রবিবার এমনই এক ঘটনার সাক্ষী হচ্ছে দেশ।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো কোনো নারী কোষাধ্যক্ষ নিযুক্ত হয়েছেন। আজ রবিবার রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. সাহাবুদ্দিনের আদেশক্রমে উপসচিব মোছা. রোখছানা বেগম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনের উল্লেখ করা হয়, মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও আচার্য অনুমোদনক্রমে শাবি আইন, ১৯৮৭ এর ১৪ (১) ধারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক আমিনা পারভীনকে কোষাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ করা হলো। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো একজন নারী কোষাধ্যক্ষ পেল শাবি।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের মধ্যে দিয়ে দেশের নারীদের আরও একটি অর্জনের দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করলেন অধ্যাপক আমিনা পারভীন। তার পথচলা আরও কল্যাণময় হোক। আর বাংলার নারীরা আমিনা পারভীনদের মতো দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী নারীদের অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত হোক। শত অন্ধকারেও মনের আলো জ্বালিয়ে পথ চলতে শুরু করুক।
মনে রাখতে হবে, কোনো পথই মসৃণ নয়। তাই বাধাবিঘ্ন পেরিয়ে সামনে এগুনোর মনোবল থাকার পাশাপাশি পরিকল্পনা, পরিশ্রম এবং অধ্যবসায় গড়ে তুলতে হবে। তাহলে সব নারীই তার যোগ্যতাবলে অবস্থান সৃষ্টি করতে সক্ষম হবেন। সদ্য কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিযুক্তি আমিনা পারভীনকে ফুলেল শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। তাঁর এই পথচলা আরও দীর্ঘ হোক। এবং এভাবেই নারীরা দৃষ্টান্ত স্থাপন করুক দেশ- বিদেশে। গড়ে তুলুক বিভেদহীন সমাজ।