মাস্ক যখন পরতেই হবে
করোনা মহামারীতে বিপর্যস্ত পুরো বিশ্ব। শুরুতে এর প্রভাব এতেটাই ছিল যে লকডাউনে যেতে বাধ্য হয়েছিল পুরো বিশ্ব। ঘরবন্দি অবস্থায় ছিল সবাই। এর থেকে বাদ যায়নি বাংলাদেশও। তবে, করোনায় আক্রান্তের হার কিছুটা কমে যাওয়ায় ধীরে ধীরে খুলে দেয় অফিস আদালত। আর অফিস আদালতের সকল কার্যক্রম চালানো হয় সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে। জনগণকেও চলাচলে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বলা হয়। বাহিরে চলাচলে সর্বদা মাস্ক পড়তে বলা হয়।
ধীরে ধীরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসলেও শীতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আবারও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। বাড়তে শুরু করেছে আক্রান্তের সংখ্যা। সময় যত বাড়ছে আরও জটিল হচ্ছে করোনা ভাইরাসে চরিত্র। প্রথমে হাঁচি,কাশি,গলা ব্যথাকে ভাইরাসের লক্ষণ হিসাবে চিহ্নিত করা হলেও পরে আরও বেশকিছু লক্ষণকে চিহ্নিত করা হয় ভাইরাসের উপসর্গ হিসাবে।
সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন শনাক্ত করা হয়েছে যুক্তরাজ্যে। আর এই নতুন ধরনেরও অস্তিত্ব পাওয়া গেছে বাংলাদেশে। হুবহু না হলেও যুক্তরাজ্যে পাওয়া নতুন ধরনের করোনা ভাইরাসের সাদৃশ্য রয়েছে। তাই সময়ের সাথে রং পাল্টানো এই ভাইরাস যে দ্রুত বিদায় নেবে না তা নলাই বাহুল্য। তাই করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সকলকে মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। আর করোনা প্রতিরোধে মাস্ক ব্যবহার করতে বলে আসছে। তাই চলমান মহামারীতে নিজ কর্মক্ষেত্রে।
বাহিরে চলাফেরা করতে অবশ্যই আমাদের মাস্ক পরতেই হবে। মাস্ক ব্যবহার না করলে যেমন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বেন আপনি তেমনি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকবে আপনার পরিবার। এই মহামারীতে সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে অবশ্যই আপনাকে মাস্ক পরতেই হবে। ভাইরাসের বিস্তার কমাতে বাংলাদেশ সরকার এবার 'নো মাস্ক নো সার্ভিস', অর্থাৎ মাস্ক পরিধান ছাড়া কাউকে কোন সেবা দেয়া হবে না বলে নির্দেশনা জারি করেছে। শুধু নির্দেশনা জারি করে কোন পরিবর্তন আসবে না বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সরকারি ওই নির্দেশনার আওতায়, এখন থেকে সরকারি-বেসরকারি অফিসগুলোতে কেউ মাস্ক ছাড়া গেলে তাদের বের করে দেয়া হবে।
রাস্তায় বের হলেই দেখা যায় কারও বাসা থেকে মাস্ক আনতে মনে নেই, কারও তা পরলে দম বন্ধ লাগে; আবার কেউ কেউ মাস্ক নিয়ে বের হলেও ‘পড়ে গেছে’ পথে- এমনই নানা অজুহাতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের এই উপকরণ পরছেন না বহু মানুষ। মাস্ক মুখে না জড়িয়ে যারা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মুখোমুখি হয়েছেন, তাদের অনেককে গুণতে হয়েছে নগদ জরিমানা, সঙ্গে পেয়েছেন বিনামূল্যের মাস্কও। জেল-জরিমানায় সীমাবদ্ধ না থেকে নিম্ন আয়ের মানুষদের হাতে বিনামূল্যের মাস্কও তুলে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট।
ধীরে ধীরে সকল প্রতিষ্ঠান খুলে যাচ্ছে। শীতের শেষে হয়তো খুলে দিতে পারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আর তখন আরও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা থাকে। তবে যদি আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি নিয়মঅনুযায়ী মাস্ক পরে চলাফেরা করি তাহলে সেই স্বাস্থ্য-ঝুঁকি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব। যেহেতু করোনা ভাইরাসটি সময়ের সাথে নিজেকে পরিবর্তন করে তাই মাস্ক পরার কোন বিকল্প নাই। মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই সম্ভব করোনা প্রতিরোধ করা। তাই আসুন নিজে মাস্ক পরি অন্যকেও মাস্ক পড়তে উৎসাহিত করি।