Skip to content

২৫শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শুক্রবার | ৯ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সামগ্রী পুড়িয়ে ফেলার আহ্বান আফগান নারী ফুটবলারদের

খেলাধুলায় পুরুষদের সাথে নারীরাও এগিয়ে যাচ্ছে। নারী টিমের মধ্যেও হচ্ছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। সকলে সেই খেলা দেখতে পছন্দও করেন। পৃথিবীর প্রতিটি দেশের নারীরাই খেলাধুলায় নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ছেন। এর কোন ব্যতিক্রম হয় নি আফগানিস্তানের ক্ষেত্রেও। আফগান নারীরাও পিছিয়ে নেই খেলাধুলায়।

 

তালেবানের আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর থেকে দেশটির নারী ফুটবলারদের ভবিষ্যৎ পড়েছে শঙ্কায়। আফগান নারী ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক খালিদা পোপাল নিজের এই ভয়ের কথা জানিয়েছেন। তিনি বর্তমান খেলোয়াড়দের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তারা যেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে থাকা নিজেদের একাউন্ট ও পাবলিক পরিচয় মুছে ফেলে এবং নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে খেলাধুলার সামগ্রী পুড়িয়ে ফেলেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর প্রকাশ করেছে। 

 

একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৮ আগস্ট (বুধবার) এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে কোপেনহেগেনে বসবাসরত খালিদা পোপাল বলেন, তালেবানরা অতীতে নারীদের হত্যা, ধর্ষণ এবং তাদের উপর পাথর ছুঁড়েছিল। এ কারণে ভবিষ্যতে কি হতে পারে তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন নারী ফুটবলাররা। 

 

আফগান নারী ফুটবল লীগের সহ প্রতিষ্ঠাতা এই বিষয়ে জানান, তিনি (খালিদা পোপাল) সর্বদা তার কণ্ঠস্বর তরুণীদের শক্তিশালী, সাহসী ও দৃশ্যমান হতে উৎসাহিত করতে ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু এখন তিনি ভিন্ন বার্তা দিচ্ছেন। 

 

খালিদা পোপাল আরও বলেন, আজ আমি তাদের (বর্তমান নারী ফুটবলার) আহ্বান জানিয়ে বলছি, তারা যেন নিজেদের নাম ও পরিচয় মুছে ফেলে এবং নিরাপত্তার জন্য নিজেদের ছবি সরিয়ে নেয়। এমনকি আমি তাদের বলছি এগুলো পুড়িয়ে ফেলতে অথবা জাতীয় দলের জার্সি ফেলে দিতে। 

 

সেই সাথে তিনি (খালেদা পোপাল) আরও যোগ করেন, এটা আমার জন্য বেদনাদায়ক। একজন নিবেদিত কর্মী হিসেবে উঠে দাঁড়ানো, জাতীয় নারী দলের খেলোয়াড় হিসেবে পরিচয় অর্জনের জন্য যা যা সম্ভব সবই করেছিলাম।

 

'বুকে সেই ব্যাজ ধারণ করা, দেশের হয়ে খেলা এবং প্রতিনিধিত্ব করার অধিকার পাওয়ার জন্য আমরা কতটা গর্বিত ছিলাম।'

 

পূর্বে (১৯৯৬-২০০১) তালেবান শাসনামলে ইসলামী আইন দ্বারা পরিচালিত হওয়ার সময় নারীদের বাহিরে কাজ করা থেকে বিরত রেখেছিল। তখন মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার অনুমতি ছিল না। নারীদের বাহিরে যাওয়ার জন্য বোরকা পরতে হতো এবং সাথে অবশ্যই পরিবারের পুরুষ সদস্য থাকতে হতো। যারা এই নিয়ম ভঙ্গ করতেন তারা তালেবানদের দ্বারা অপমানিত এবং প্রকাশ্যে মারধরের শিকার হতেন।

 

গত রবিবার রাজধানী কাবুল দখল করার পর তালেবান বলেছে যে, তারা ইসলামী আইনের কাঠামোর মাধ্যমে নারীর অধিকারকে সম্মান করবে। নারী শিক্ষা ও তাদের বাহিরে কাজের অনুমতি দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী ইতিমধ্যে বিভিন্ন অঞ্চলের আফগান মেয়েরা স্কুলে ফিরেছে। নারীদেরও কর্মস্থলে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন তালেবান। 

 

এরপরও আফগান নারী ফুটবল দলের সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, তারা (নারী ফুটবলার) খুব ভয়ে আছে। তারা উদ্বিগ্ন ও ভীত। শুধু যে খেলোয়াড়রা তা নয়, সমাজকর্মীরাও উদ্বিগ্ন। বিপদে পড়লে কারো কাছে যাওয়ার, সুরক্ষা বা সাহায্য চাইবার মতো কেউ নেই। তারা ভয়ে আছে, যেকোনো সময় তালেবানরা এসে হয়তো ঘরের দরজায় নক দিবে। 

 

'এখন আমরা দেশ ধ্বংস হতে দেখছি। মনে হচ্ছে দেশে নারী শক্তি জাগরণের জন্য অর্জিত সব গর্ব ও সুখগুলো অপচয়।'

 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ