মায়ের দুধে শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষা
'মাতৃদুগ্ধ' যার গুণাগুণ একটি শিশুকে কতটা পরিপূর্ণ করে তার নানান ব্যাখ্যা আমরা পেয়েছি। শুধু যে সন্তান তাই নয়, মাতৃদুগ্ধ দানের ফলে মায়েরও অনেক ধরণে শারীরিক জটিলতার ঝুঁকি কমে যায়। জন্মের পর শিশুর জন্য প্রথম মায়ের বুকের দুধ যেমন ঔষধের মত কাজ করে তেমনি মায়েরও সদ্য প্রসবের নানান টানাপোড়েন থেকে সেরে উঠতে সাহায্য করে৷
এর ফলে গর্ভফুল পড়তে সহজ হয় এবং রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়। এছাড়াও যেসব মায়েরা মাতৃদুগ্ধ পান করান তাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। এমনকি ডিম্বাশয়ের ক্যানসার, টাইপ–২ ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকিও হ্রাস পায়।
এবার আসুন জেনে নি মাতৃদুগ্ধ কি কি ভাবে শিশুর সুরক্ষা নিশ্চিত করে?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, মাতৃদুগ্ধ পানে শিশু যেমন সুস্থ-সবল ভাবে বেড়ে ওঠে, তেমনি তার সর্বোচ্চ শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশও নিশ্চিত হয়। এক গবেষণার তথ্য মতে, মাতৃদুগ্ধ পান করালে বছরে আট লাখের বেশি শিশুর জীবন রক্ষা পাবে।
এছাড়াও শিশুর শারীরিক গঠন ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মাতৃদুগ্ধের কোন জুড়ি নেই৷ শিশুর ডায়রিয়া হওয়া বা এর তীব্রতার ঝুঁকি কমাতে দারুণ কাজ করে মায়ের বুকের দুধ। শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ এবং কানের প্রদাহ কমাতেও এটি বেশ উপযোগী । দাঁত ও মাড়ির গঠনে রাখে সহায়ক ভূমিকা।
মাতৃদুগ্ধ মূলত শিশুর সকল প্রকার পুষ্টির যোগান দেয়। জন্মের পর ছয় মাস পর্যন্ত দুধে থাকা সব ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ শিশু শরীরের হাড় গঠন ও মজবুত করা এবং হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখে।
যেসব শিশুরা বাজারজাত বোতল দুধ পান করে তাদের দাঁতে ক্যারিজ বা গর্তসহ ছত্রাক সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। নার্সিং বোতল ক্যারিজ নামের একপ্রকার সমস্যাও দেখা দেয়। যার কারণে বাচ্চাদের সামনের দাঁত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে অরুচি, অপুষ্টি, মনোযোগের ঘাটতি, প্রাণচাঞ্চল্য ও স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। একমাত্র মাতৃদুগ্ধেই এসব সমস্যা থেকে শিশু রেহাই পায়।
সন্তানকে একটি স্বাস্থ্যকর জীবন দিতে মায়ের দুধের বিকল্প কিছু হয়না। আর তাই নিজের সন্তানের স্বাস্থ্যকর জীবন নিশ্চিত করতে আপনার নবজাতককে মাতৃদুগ্ধ পানের মাধ্যমে মাতৃত্বকে করুন সমৃদ্ধ।