Skip to content

৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রাপ্তির মোটরসাইকেল চালিয়ে গ্রাম ঘুরার স্বপ্ন পূরণ

একটা সময়ে মেয়েদের কেবল ঘরকুনো করেই রাখা হতো। এই ধারার অনেক পরিবর্তন এসেছে এখন। কিন্তু এখনো অনেক জায়গাতেই বিশেষ করে গ্রামে মেয়েদের চলাচলে রয়েছে বাধা নিষেধ। স্বাধীন মত চলাফেরাতেও তাকে বাধা দেয় পরিবার ও সমাজ। কিন্তু এই প্রচলিত প্রথা যেন ভেঙ্গে দিলো সুনামগঞ্জের প্রাপ্তি দেবী। কিছুদিন আগে সে কালো চশমা পরে নিজে মোটরসাইকেল চালিয়ে ঘুরেছে পুরো গ্রাম। 

 

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার মজলিসপুর গ্রামে থাকে প্রাপ্তি দেবী। সে দিরাই সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার বাবার নাম পাণ্ডব দেবনাথ। তিনি মজলিসপুর গ্রামের একজন মিষ্টি ব্যবসায়ী। ছোটবেলা থেকেই প্রাপ্তির স্বপ্ন ছিল কালো চশমা পরে মোটরসাইকেল চালিয়ে সে পুরো গ্রাম ঘুরবে। তার সেই স্বপ্ন অবশেষে পূরণ হয়েছে।

 

প্রাপ্তি বলে, ‘ছোটবেলা থেকে আমার দুটি স্বপ্ন ছিল। প্রথম স্বপ্ন ছিল কালো চশমা পরে মোটরসাইকেল দিয়ে পুরো গ্রাম ঘুরে বেড়াব। দ্বিতীয় স্বপ্ন হচ্ছে পড়ালেখা করে পাইলট হব। আমার প্রথম স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। আমার বাবা নিজে উনার শত কাজ রেখে আমার পড়ালেখার পাশাপাশি আমাকে মোটরসাইকেল চালানো শিখিয়েছেন। মোটরসাইকেল কিনে দেয়ার পাশাপাশি মোটরসাইকেল চালানোর সব ধরনের পোশাক আমাকে কিনে দিয়েছেন। সেই মোটরসাইকেল দিয়ে আমি এখন আমার পুরো গ্রাম ঘুরে বেড়াই। আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি বেড়াতে যাই। বাজারে গিয়ে নিজে বাসার জন্য বাজার করে নিয়ে আসি।’

 

একজন মেয়ে হয়ে চশমা লাগিয়ে মোটরসাইকেল চালানোর জন্য প্রায়ই পাড়া-প্রতিবেশীদের বিভিন্ন মন্তব্য শুনতে হয় প্রাপ্তিকে। কিন্তু ওসব কথায় সে কান দেয়না। গ্রামের অনেকেই আড়ালে তাকে নিয়ে খারাপ মন্তব্য করে, সেগুলো সে কানে নেন না। সে বলে, 'তাদের কথা আমি শুনেও না শোনার ভান করে থাকি। কারণ আমি আদিকালের মেয়ে না, আমি বর্তমান যুগের মেয়ে। তাই কারো কথায় কান না দিয়ে আমি আমার ইচ্ছে পূরণে অটল।'

 

প্রাপ্তি দেবীর বাবা পাণ্ডব দেবনাথ বলেন, ‘আমার মেয়ে তার স্বপ্নের ইচ্ছে পূরণ করছে আমি শুধু তাকে উৎসাহ দিচ্ছি। কে কি বলল তাতে কিছু আসে যায় না। আমার মেয়ের মুখের হাসিটাই আমার কাছে সব।’ তিনি আরও বলেন, ‘তার প্রথম ইচ্ছে পূরণ করতে পেরে বাবা হিসেবে সত্যি খুব ভালো লাগছে। এখন আমার মেয়ের দ্বিতীয় ইচ্ছে পূরণের পালা। আমি জানি, আমার মেয়ে পাইলট হতে পারবে।’

 

প্রাপ্তি দেবী সত্যিই একটি উদাহরণ। আশা করি এভাবেই মেয়েরা আরো এগিয়ে যাবে সামনের দিকে।

 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ