Skip to content

৩রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শুক্রবার | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিয়ে মানেই কি সব মেনে নেওয়া-মানিয়ে নেওয়া

বিয়ে একটি সামাজিক বন্ধন বা বৈধ চুক্তি যার মাধ্যমে দুজন মানুষের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক তৈরি হয়। এছাড়া বিয়ের মাধ্যমে বংশবিস্তার ও উত্তরাধিকারের সৃষ্টি হয়। বিয়ে ধর্মীয় রীতি হলেও আধুনিক সভ্যতায় এটি একটি আইনি প্রথাও বটে। আরও স্পষ্ট করলে দাঁড়ায়, একজন নারী ও একজন পুরুষের এক ছাদের নিচে বসবাসের আইনি ও সামাজিক অনুমতিরই আরেক নাম বিয়ে।

তবে বাঙালি সমাজে বিয়ের চিত্রপট কতকটা ভিন্ন ধারারই দৃষ্টিগোচর হয়! বিয়ে দুজন ব্যক্তির মধ্যে যতটা, তার চেয়ে বেশি দুটি পরিবারের মধ্যেই। স্বামী-স্ত্রীর ভালোমন্দ দুজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। বরং উভয় পরিবার এতটাই আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকে যে, স্বামী-স্ত্রীর জীবন পরিচালনা তাদের নিয়ম-নীতির ঊর্ধ্বে যায় না।

বিয়ের মধ্যে দিয়ে নারী-পুরুষ উভয়ের ওপর সামাজিক ও আইনি কিছু অধিকার সৃষ্টি হয়। তবে তার বাইরেও কিছু অধিকার পুরুষ বা নারী নিজ থেকেই সৃষ্টি করে। এই অধিকারের জের ধরে একসময় একে-অন্যকে এতটাই অধিকার করে বসতে থাকে, সেখানে বিপরীত পক্ষের সহ্যের সীমা অতিক্রম করে বললেও অত্যুক্তি হবে না । এক্ষেত্রে পুরুষ বা নারী কেউই বাদ পড়ে না। প্রাণের তাগিদে অনেকেই সব মেনে নিয়ে জীবনযাপন করে যায়। আবার অনেকেই বিচ্ছিন্ন হন।

তবে বিয়ের মাধ্যমে সামাজিকভাবে, আইনি পন্থায় যে শেকল পরানো হয়, তা থেকে বেশিরভাগ মানুষই মুক্তির পথ খোঁজে। কিন্তু সবসময় পারে না। বরং সবকিছু মেনে নিয়ে-মানিয়ে নিয়ে দাঁতে দাঁত চেপেও সংসার নামক বোঝা কাঁধে নিয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়া চেষ্টা করে।

আবার অনেকেই দাম্পত্য সম্পর্ক, নিত্য দ্বন্দ্ব-কলহের মুক্তি হিসেবে আত্মহননের পথ বেছে নেয়। প্রশ্ন থেকে যায়, কেন নিজের জীবন বিপন্ন করেও সংসার করতে হবে। আর সহ্য না হলে আত্মহননের পথ বেছে নিতে হবে? কেন এক জীবনে মানসিক স্থিরতা, শান্তির প্রশ্নে আপসহীন থাকা। তবে বিয়ে মানেই কি সব মেনে নেওয়া বা মানিয়ে নেওয়া?

বিয়ের মাধ্যমে সাময়িক, আইনি অধিকার সৃষ্টির পাশাপাশি আরও একটি বিষয় গড়ে ওঠে আত্মিক। দুজন ব্যক্তির একসঙ্গে থাকার জন্য সবচেয়ে বেশি জরুরি – ‘আত্মিক বন্ধন’। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায়, স্বামী-স্ত্রীর দুজন দুই মেরুর মানুষ! তাদের মধ্যে হৃদয়গত সম্পর্ক ছাপিয়ে সামাজিক ও আইনি বিধানটাই থাকে। সেক্ষেত্রেও তারা জীবনকে মানিয়ে বা মেনে নিয়েই পার করে দিতে চায়। এখানেও একটা প্রশ্ন থেকে যায়, যেখানে হৃদয়গত সম্পর্কের সংযোগ থাকে না, সেখানে লোকলজ্জার ভয়ে আইনি ও সামাজিক বাঁধন কি খুব জরুরি? প্রতিনিয়ত চার দেওয়ালে বন্দি হয়ে ধুঁকে ধুঁকে মরার কী মানে? অনেক নারী-পুরুষ উভয়েই আজ বিভিন্ন সমস্যাকে কেন্দ্র করে জীবনযাপন করছে!

অনন্যা/এআই

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ