ধারের টাকা চাইবেন কীভাবে
অর্থ অনর্থের মূল এই কথা তো বহুজনেই জানে। অর্থ অনেক সময় সম্পর্কের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। কিন্তু মূল্যস্ফীতির সময়ে অনেকের বিপদ থাকেই। অর্থনৈতিক বিপদ অনেক বেশি। এই সময়ে বাধ্য হয়েই অনেক সময় কাছের মানুষকে ধার দিতে হয়। এই টাকা ধার দেয়ার কাজটি থেকে এক ধরনের হীনমন্যতা কাজ করে। ধার তো দিলেন। ফেরত পাবেন কিভাবে। অনেকে তো টাকাটা ফেরতই দিচ্ছেন না। টাকা ধার দেয়ার আগে কিছু বিষয় ভেবে দেখা জরুরি। কিন্তু প্রথমে কয়েকটা বিষয় ভাবুন।
পরিশোধ হবে কীভাবে
কিভাবে টাকা ফেরত পাবেন সেটা জেনে নিন। ডেডলাইনের আগে একটা ছোট মেসেজ দিতে পারেন। ভদ্রভাবেই বলতে পারেন। কিভাবে টাকা নিবেন সবই জেনে নিবেন।
মানুষ বুঝে ঋণ দেয়া জরুরি
আপনার বন্ধু বা স্বজন সবাই যে আপনার মতো ধ্যানধারণা বা নীতিতে বিশ্বাসী হবে, তা কিন্তু নয়। তাই ব্যক্তি বুঝে সাহায্য করুন। পরিবার বা আত্মীয় তো বটেই, আপনার বন্ধুদের মধ্যেও এমন কেউ থাকতে পারে, যিনি আপনার টাকাকে নিজের ভেবে খরচ করে ফেলাটাকে স্কুল ভাবেন না। আপনার কষ্টার্জিত অয়কে তারা এত গুরুত্ব দিতেই জানেন না। উদাসীন কাউকে টাকা ধার দিয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনবেন না। ধার দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত টাকা নেই বা আপনি নিজেই অন্য কারও কাছে ঋণী বলে তাঁদের এড়িয়ে যেতে পারেন।
মেসেজ দিন
ঋণ দিলে অবশ্যই ওই ব্যক্তিকে ছোট মেসেজ দিয়ে মনে করিয়ে দিতে পারেন। সরাসরি ‘টাকাটা ফেরত দাও’ এমন কথা না নিখে কুশলাদি জিজ্ঞেস করে পরে সেই বিপদের মুহূর্তের কথা তুলতে পারেন। কুশলাদি জিজ্ঞেস করেও আপনি তাদের মনে করিয়ে দিতে পারেন।
ভাগ করে দিতে বলুন
বড় অঙ্কের টাকা হলে ছোট ছোট ভাগ করে প্রতি মাসে কিছুতা দিতে বলুন। হতে পারে ঋণগ্রহীতা বন্ধু বা আত্মীয়ের আর্থিক অবস্থা এখনো পুরোপুরি ভালো হয়নি। তবে আপনারও টাকার প্রয়োজন। এমন মুহূর্তে আপনি তাঁকে পাওনা টাকাটা মাসে মাসে অল্প অল্প করে পরিশোধ করার পরামর্শ দিতে পারেন।
বিকল্প উপায় মনে করিয়ে দিন
প্রথাগত টাকার বদলে টাকায় ঋণ শোধ না করে বিকল্প উপায়ও মনে করিয়ে দেওয়া যায়। আপনি হয়তো টাকা ধার দিয়েছেন কিন্তু গ্রহীতা শোষ করতে পারছেন না। অন্য কোনো সেবা গ্রহণের মাধ্যমে ঋণ শোধের প্রস্তাব দিতে পারেন। অনেকের নগদ টাকা হাতে থাকে না। সে ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তির কাছ থেকে কাজ বা সেবা গ্রহণের মাধ্যমে ঋণ আদায় করে নিতে পারেন। যেমন যে বস্তুকে ধার দিলেন, তাঁর কাছে হয়তো নগদ টাকা নেই। তবে সে খুব ভালো পেইন্টার বা গ্রাফিক বা ইন্টেরিয়র ডিজাইনার। আর আপনিও বাসা বা অফিসে এ ধরনের কোনো কাজ করাতে চাইছেন। এ ক্ষেত্রে বন্ধুকে দিয়ে এসব কাজ করিয়ে নেওয়ার বিনিময়ে ঋণ শোধ হতে পারে। তবে সেটাও পরিষ্কার আলোচনার মাধ্যমে করা ভালো। এতে সম্পর্কও ভালো থাকবে।
সরাসরি বলুন
আপনি যদি বুঝতে পারেন আপনার বন্ধু বা স্বজন ইচ্ছাকৃতভাবে আপনার টাকা পরিশোধ না করে আপনাকে ভোগাচ্ছে, তাহলে সরাসরি কথা বলে টাকা চেয়ে নেওয়াই ভালো। এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অবশ্যই ফেরত দেওয়ার শেষ তারিখ উত্তয় পক্ষের পরিচিতজনকে জানিয়ে রাখবেন। টাকাপয়সার কারণে অনেকেই সম্পর্ক খারাপ করতে চান না। আর খুব কাছের আত্মীয় বা বন্ধু হলে অনেকেই টাকা ফেরত দেওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চান না। যদি টাকার পরিমাণ কম হয়, যাতে আপনার তেমন কোনো ক্ষতি হবে না, আর প্রহীতাও আপনার ভালোবাসার মানুষ, তাহলে সেটা উপহার হিসেবে তাঁকে দিয়ে দিন। উপহার হিসেবে টাকাটা দিলে অবশ্যই সেটা তাঁকে জানিয়ে রাখুন। এ সময়ে একটা ছোট মেসেজ বা চিঠি খুব কার্যকর।