Skip to content

২রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বৃহস্পতিবার | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নারীর ক্ষমতায়নে উজ্জ্বল নাম থেরেসা মে

একসময় ভাবা হতো নারী কেবল সহজসরল হিসেব বুঝে। নারীর কাজ ঘর সামলানো। বাইরের রঙিন পৃথিবীর জটিল হিসেব-নিকেশ নারীর জন্য নয়। রাজনীতির মতো বিষয়বস্তু কেবল পুরুষের বোধগম্য হবে নারীর নয়। তবে এসব পুরুষতান্ত্রিক ধ্যানধারণা নারীরা অনেক আগেই ভেঙে দিয়েছেন। বিশ্বে নারীর ক্ষমতায়ন দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। বিশ্বে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য যেসব নারীর নাম উজ্জ্বল হয়ে আছে তাদের মধ্যে অন্যতম একজন থেরেসা মে। ব্রিটিশ প্রমীলা রাজনীতিবিদ ও যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী তিনি।

১৯৫৬ সালের ১ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন থেরেসা মে। বাবা হাবার্ট ইংল্যান্ড চার্চের পাদ্রী ছিলেন। থেরেসা হাইস্কুলে পড়ার সময় প্রতি শনিবারে একটি বেকারিতে কাজ করে নিজের হাতখরচা চালাতেন। এরপর তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সেন্ট হিউজেস কলেজে ভূগোল বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। ১৯৭৭ সালে সেখান থেকে দ্বিতীয় শ্রেণীতে বিএ ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৮১ সালে গাড়ী দূর্ঘটনায় তার বাবা নিহত হন ও পরের বছরই তার মা মারা যান।

১৯৭৭ থেকে ১৯৮৩ সময়কালে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডে কাজ করেন। এরপর ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৭ মেয়াদে অর্থ ছাড়সংক্রান্ত বিভাগের কাউন্সিলর হিসেবেও কাজ করেন তিনি। পাশাপাশি মারটন্স ড্রান্সফোর্ড ওয়ার্ডের অধীনে লন্ডন বোরার কাউন্সিলররূপে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯২ ও ১৯৯৪ সালের কমন্স সভায় যোগদানকল্পে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পরাজিত হন। ১৯৯৭ সালের সাধারণ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো মেইডেনহেড নির্বাচনী এলাকা থেকে রক্ষণশীল দলের সংসদ সদস্য হন। এরপর ১৯৯৯ সালের ছায়া মন্ত্রীপরিষদে যোগ দেন।

জুলাই, ২০০২ থেকে নভেম্বর, ২০০৩ সাল পর্যন্ত রক্ষণশীল দলের চেয়ারম্যান এবং ডিসেম্বর, ২০০৫ থেকে জানুয়ারি, ২০০৯ সাল পর্যন্ত কমন্স সভায় ছায়ামন্ত্রী ছিলেন তিনি। ২০১০ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর জোট সরকার গঠিত হলে ১২ মে, ২০১০ তারিখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ২০১২ সালে মহিলা এবং সমতায়ণ মন্ত্রী হন তিনি। ২০১৫ সালের নির্বাচনের পর তিনি পুনরায় ঐ দায়িত্বে থাকেন। এর ফলে ৬০ বছর পূর্বেকার জেমস চাটার এডের পর সর্বাধিক সময়ের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হন।

২০১৬ সালের জুলাইয়ে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন থেরেসা মে। জুনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদের (ব্রেক্সিট) বিষয়ে গণভোট হয়। এতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ইইউতে থাকার পক্ষে ছিলেন। জনগণ বিচ্ছেদের পক্ষে রায় দিলে ক্যামেরন পরাজয় মেনে পদত্যাগ করেন। যুক্তরাজ্যের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ডেভিড ক্যামেরনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে কনজারভেটিভ পার্টির ঝানু রাজনৈতিক থেরেসা মেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের অনুরোধ জানান।

২০১৬ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া পার্লামেন্টের মেয়াদ ২০২০ সাল পর্যন্ত থাকলেও ২০১৭ সালের এপ্রিলে হঠাৎ করেই মধ্যবর্তী নির্বাচনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। ওই সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলে থেরেসা মের কনজারভেটিভ পার্টি শীর্ষে থাকলেও পার্লামেন্টে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়।

সরকারের মনোনয়ন ও এর পূর্ব থেকেই মে নীতি-নির্ধারণী বিভিন্ন বিষয়ে নিজ সংসদীয় আসনে ও জাতীয় পর্যায়ের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত রাখেন। লিঙ্গ সমতায়ণে ফসেট সোসাইটি কর্তৃক ২০০৬ সালে বর্ষসেরা উজ্জ্বয়িনী নারী মনোনীত হন। বার্কশায়ারের বৃহত্তম রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন রিডিং ইউনিভার্সিটি কনজারভেটিভ অ্যাসোসিয়েশনের পরামর্শক তিনি। ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সালে বিবিসি রেডিও ফোরের ওম্যান্স আওয়ারে তাকে ব্রিটেনের দ্বিতীয় সর্বাধিক প্রভাবশালী নারীরূপে চিহ্নিত করা হয়েছে। আজ এই ক্ষমতাধর নারীর জন্মদিবসে পাক্ষিক অনন্যার পক্ষ থেকে রইলো শুভেচ্ছা ও শুভকামনা।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ