Skip to content

৩রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শুক্রবার | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এদেশ সংখ্যাগরিষ্ঠদের আর সংখ্যালঘুরা দুধভাত!

জ্ঞানের বিকাশ যেখানে উন্মুক্ত হওয়ার কথা।।প্রশ্ন করাই যেখানে জ্ঞান আহরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।  সেখানে বিজ্ঞানের যেকোনো কথাকেই লোকে অবমাননার রূপ দেয়।

 

এই বিষয়টি অনেকটা প্রাচীন গ্যালিলিওকে ফাঁসির মঞ্চে ঝোলানোর একটা আধুনিক রূপ। বিজ্ঞান এবং ধর্মকে একই সুতোয় গাথা কোনো গল্পে পরিমণ্ডল করতে চান না অনেকে। অনেকে আবার দুটো কে এক করে প্রতি মূহুর্তে তুলনা করে যেতে চান। 

 

কার ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের কতটা সাদৃশ্য বৈসাদৃশ্য আছে সেটা দিয়ে নিজের ধর্ম কে বৈজ্ঞানিক বলে প্রমান করা চেষ্টা করা হয়।এই নিয়ে কোনো যুক্তিতর্ক হলে, ওয়াজ মাহফিল এবং সাম্প্রতিক সময়ের বিভিন্ন বই এর উদাহরণ দেয়া হয়৷ 

 

কিন্তু এর পরেও,  যে যাই বলুক না কেন,  ধর্ম অবমাননা কখন কিভাবে কোন কথায় হয় যায় সেটা কেউ জানে না। আমোদিনী পাল কিংবা হৃদয় মন্ডল সুপরিকল্পিতভাবে ধর্মের অবমাননার দ্বায়ে ফাঁসানো হয়েছে।  

 

একটি ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্ট তৈরি করেছে এটি এন নিউজ। সেখানে স্পষ্টভাবেই দেখা যায়,  হৃদয় মন্ডল কে বার বার ধর্ম এবং বিজ্ঞান নিয়ে তর্কতে যুক্ত করা হয়েছে৷ ছাত্ররা সেখানে শিক্ষকের সাথে একটু উন্মুক্ত আলোচনা করে যেখানে শিক্ষক কে প্যারাডক্সিকাল সাজিদ বই পড়ার জন্য উপদেশ দেয়। 

 

শিক্ষকও সেখানে কোনো ধর্ম কে অবমাননা না করে ছাত্রদের বিজ্ঞান বিষয়ক বই পড়ার কথা বলেন। এমনকি শিক্ষার্থীদের তিনি তার নিজের ধর্ম নিয়েও গল্প বলেন এবং হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে একজন মহাপুরুষ হিসেবে প্রশংসিত করেন।কিন্তু তাতে কি? শিক্ষার্থী এবং প্রশাসন সেখানে ধর্মের অবমাননা খুঁজে পায় এবং শিক্ষক কে গ্রেফতার করে। 

 

আবার, আমোদিনী পাল এর ক্ষেত্রেও  একটি মিথ্যা অভিযোগ শুনতে পাওয়া গেছে। সেটা হলো, আমোদিনী পাল নাকি ছাত্রীদের হিজাব পরার কারণে মারধর করেছেন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমোদিনী পালের নিজ ছাত্র ছাত্রীরাই একথা স্বীকার করেছে যে, তারা স্কুলে স্কুল ড্রেস পরে না যাওয়ার কারণে তাদের শাস্তি দেয়া হয়েছে। 

 

আমোদিনী পাল শুধুমাত্র বিদ্যালয়ের অনুশাসন পালন করছিলেন। স্কুলে স্কুল ড্রেস পরে না আসা যে একটা  অন্যায় এবং সে কারণে শাসন করার অধিকার যে শিক্ষক শিক্ষিকার আছে সে বিষয়টি আমরা হয়তো ভুলে গিয়েছি।উল্লেখিত দুজন মানুষই হলেন, পারিবারিক  ও সামাজিক ভাবে সনাতন ধর্মাবলম্বী। তাদের ব্যপারে সমস্ত অভিযোগগুলো ধর্ম কেন্দ্রিক অভিযোগ দিয়েই হয়।কারণ ধর্মাবলম্বীর দিক থেকে তাঁরা সংখ্যালঘু।  

 

সংখ্যালঘুরা যে দেশে এমন চাপে থাকে সে দেশে ন্যায় নীতি কতখানি আছে জানি না। তবে এ দেশ সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজত্বের কেন্দ্রস্থল। আমোদিনী পাল কিংবা হৃদয় মন্ডলের জন্য এ দেশ না। 

 

এই পৃথিবী দিন দিন রিভার্সে যাচ্ছে।  মানবধর্মকেও এখন অনেকে ধর্মের অবমাননা বলে। বিজ্ঞানকে লোকে ধর্ম অবমাননা বলে৷ কবে যেনো শুনি বাংলা ভাষায় নাম রাখাকে লোকে ধর্ম অবমাননা বলবে। 

 

কবে যেন শুনি, "ঔষধ" কে "দাওয়াই" বলতে হবে। হিজাব একটি জাতীয় পোশাক এবং শাড়ি পরা হারাম।।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ