Skip to content

২৩শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বুধবার | ৭ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জীবনের মর্ম কি জীবন গেলেই?

জন্মের পরবর্তী থেকে মৃত্যুর পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত আমাদের জীবন! জীবনের প্রতিটি সময় প্রতিটি মুহূর্তই আমাদের কোনো না কোনো অভিজ্ঞতার মুখোমুখি করে থাকে। কিন্তু এমন কেন হয় যে কোনো ব্যক্তির আয়ুরেখা সমাপ্ত হলেই অর্থাৎ তিনি যখন আর পৃথিবীতে বেঁচে থাকেন না তখন আমরা সে মানুষটিকে নিয়ে, তার জীবন নিয়ে বেশি চর্চা করি!

 

জন্মের পর শিশুকাল, কৈশোর, যৌবন এবং পরিশেষে বার্ধ্যক্য কিন্তু পালাক্রমেই আসে। কিন্তু এটা সত্যি যে জীবনকালে নিপীড়িত নিগৃহীত মানুষগুলোরও শেষকৃত্য অনেক ঘটা করেই করা হয়। এমন বহু  নজির আছে আমাদের সমাজে। বার্ধ্যকে জর্জরিত বৃদ্ধ বা বৃদ্ধাটির জীবনকালে তাকে যতোটা না সেবাযত্ন তার ছেলেমেয়ে বা আত্মীয়স্বজন করেছেন, মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে আহাজারি, তার গুণ বর্ণনায় তার থেকেও বেশি মনোযোগ দিয়েছেন। মৃত ব্যক্তির ছবিতে দামী দামী ফুলের মালা জড়িয়ে দেওয়া হয় অনেক সময়। হোক সেটি যেকোনো ধর্মের। কবরে যাওয়ার পর কিংবা শ্মশানে মৃতদেহ সৎকারের পর মানুষের মূল্য অন্য মানুষদের কাছে বেড়ে যায়। তখন আমাদের মনে হয় যে আসলে সেই ব্যক্তির উপস্থিতি কতোটা মূল্যবান ছিলো। জীবন থাকতে হয়তো তার সাথে ভালো আচার-আচরণ করা হয়না কিন্তু মৃত্যুর পর মানুষ মানুষের মূল্য টের পেতে শুরু করে।

মৃত্যুর পর জানাযায় অনেক মানুষ শরিক হন। কিন্তু কয়জনই বা প্রকৃতপক্ষে মৃত ব্যক্তির জীবদ্দশায় তার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছেন! মৃত ব্যক্তির শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠানে ভোজন করতে অনেকেই আসেন। কয়জনই বা সেই ব্যক্তির জীবনকালে তার খবরাখবর রাখতেন সে নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়! এমনকি যার মৃত্যুর জন্য শ্রাদ্ধের বিশাল আয়োজন থাকে, সত্যিই কি তার  শেষ জীবনে এমন আয়োজন তার সন্তুষ্টির জন্য করা হয়েছিলো? হয়তো অনেক সময়ই হয়না। আবার হয়েও থাকে।

 

কর্মক্ষম ব্যক্তিটি যখন বার্ধ্যক্য বা অন্য কারণে কর্ম অক্ষম হয়ে যান, অনেকেই তাকে অবহেলা, উপেক্ষা করে। দুর্ব্যবহার করে তাকে তাড়িয়েও দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে। দেখাশোনা করার জন্য আশেপাশে যদি একজন মানুষও না থাকে, মৃত্যুর পর বহু মানুষ ছুটে চলে আসেন। দায়িত্বের মাত্রাটা তখন সবারই বেড়ে যায়। লোকজনকে, সমাজকে দেখাতে হবেনা যে আমরা কতোটা মানবিক!

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ