Skip to content

২রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বৃহস্পতিবার | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমার পৃথিবীর সংকট মোচন

বউ-বাচ্চা আর আমি।
অভাব-অনটনের মাঝে আমাদের সুখের সংসার
এর চেয়ে বিশেষ কিছু চাহিদাও নেই তেমন আর।

 

আত্মীয় স্বজনেরা সবাই ভালো; কেবল আমিই ভালো না,
তাই ওদের সাথে সম্পর্কের আদান-প্রদান অতটা ঠিক চলে না।
বেঁচে থাকলে অপমান, বিপদে পড়লে ভগবান,
এভাবেই জীবন আমার বহমান।

 

পথ চলতে চলতে কিছু কথা বলতে বলতে
একদিন হঠাৎ করোনার মহামারি ঢুকে পড়ল আমার গৃহে,
গোটা পৃথিবীটা ভেঙে পড়েছে মাথার উপর।
আমি, বউ, ছেলে। ছেলে, বউ, আমি।
আসছে না মাথায় করি আমি কি যে….!

 

আমার স্ত্রী কোভিড আক্রান্ত।
যদি তিনজনেই পরি এর কবলে গোটা পৃথিবীটাই আমার ভেঙ্গে হবে ক্ষান্ত,
মাথার ভেতর চিন্তা করি একমনে
ছেলেটাকে বাঁচাই আগে,মরি মরবো দুজনে।
অনেক আশার বাণী ঘাড়ে নিয়ে এই বিপদ-বার্তা জানাই কোন আত্মীয়কে
হ্যালো; দাদা…?  হ্যালো..   হ্যালো….
আপনাদের কাছে একটু নিয়ে যাবেন আমার ছেলেটাকে?

 

আমি বারবার শুধাই।
তবু কোন উত্তর নাই।

 

আপন বোঝাই পৃথিবীর কাছে আমি আবার একা হলাম
আমি পৃথিবীর কাছে শিক্ষা নিলাম।

 

কোভিড আক্রান্ত আমার স্ত্রী।
দুচোখে জলভর্তি করে শুয়ে আছে পাশের ঘরে,
ছেলেটা হাউ হাউ করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।
বারবার মা… মা…… বলে মাকে ছুঁতে যায়
আমি জোর করে থামাই।
না বাবা, এখন মাকে ছুঁতে নেই।

 

আমার পৃথিবীর সামনে আমি তিলে তিলে শেষ হয়ে যাচ্ছি,
থেকে থেকে ছেলেটার হাত ধরে জ্ঞান হারাচ্ছি।

 

এমন সময় কিভাবে কখন ভগবানের কৃপায়; হল কতিপয় মানুষের উদয়
তারা এসে থামালো মোদের কান্না,
ভয়-ভীতি ভুলে তারা এসে সকলে;এনে দিল খাবার-দাবার; করে দিল রান্না।

এক নয়;দুই নয়; দিন প্রতিদিন দিয়ে গেছে সাহারা, দিয়েছে ভরসা।

কেটে গেছে বিপদ আমাদের,
কি করে জানাব ধন্যবাদ দেবতা নামক এই মানুষগুলোকে নেই তার ভাষা।

 

জীবনের এই দুঃসময় অনেক কিছু শেখালো আমায়
শেখালো আমায়, আত্মীয়রা চিরকাল থাকেনা আত্মিয়ের ভূমিকায়,
রক্তের সম্পর্ক ব্যতীত মানুষেরাও আপনের চেয়েও আপন হয়।

 

 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ