Skip to content

৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শ্রবণ ক্ষমতায় কোন প্রাণী শীর্ষে!

আমাদের সকলের আশে পাশে বিভিন্ন প্রাণী, পোকা-মাকড় আছে।এরা শ্রবণের ক্ষেত্রে মানুষের থেকে অনেক আগানো।বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে এদের অভ্যাস অনেকটা ভিন্ন।

 

বিজ্ঞানীরা বলেন, বিবর্তনের ফলে মানুষের শ্রবণশক্তি কমেছে ৷ আমরা হাতির মত খুব অল্প বা বাদুড়ের মত অতি উচ্চ কম্পাঙ্কের শব্দ শুনতে পাই না ৷ অনেক প্রাণীর কানের নড়াচড়া করে শ্রবণ ক্ষমতা বাড়ানোর কৌশল জানা আছে ৷ এভাবে তারা বিপদ থেকে বাঁচে ৷ আজ আমরা কিছু প্রাণীর শ্রবণ ক্ষমতা সম্পর্কে জানব।

 

খরগোশ কান ঘোরাতে পারে ২৭০ ডিগ্রি। খরগোশেরা শব্দের দিকে তাদের কান ঘুরিয়ে নেয় ৷ এতে করে তারা আক্রমণকারী প্রাণীর গতিবিধি বুঝতে পারে৷ আবার কানের নড়াচড়ার সঙ্গে তাদের মনোজগতও টের পাওয়া যায় ৷ যেমন, তাদের দু’কান খাঁড়া মানে একেবারে মনোযোগ দিয়ে কিছু শুনছে ৷ এক কান খাঁড়া ও এক কান শোয়ানো মানে শুনছে কিন্তু মনোযোগ নেই ৷ পিঠের ওপর দু’কান পরস্পর স্পর্শ করে পড়ে থাকা মানে নিরুদ্বেগ সময় কাটানো, কিন্তু কান যদি পরস্পর স্পর্শ না করে, তার মানে ভয় পেয়েছে৷ 

 

মানুষের ক্ষমতার চেয়ে উচ্চ কম্পাঙ্কের শব্দ শুনতে পায় কুকুর৷ তারা মনিবের পায়ের শব্দ আলাদা করতে পারে ৷ বিড়াল আরো বেশি সংবেদনশীল৷ কুকুরের যেখানে ১৮টি কানের পেশি আছে, বিড়ালের আছে ৩০টি৷ এমনকি তারা কান ১৮০ ডিগ্রি ঘোরাতে পারে৷ 

 

আলট্রাসনিক তরঙ্গদৈর্ঘ্য ব্যবহার করে বাদুড়। রাতে উড়ে বেড়ানোর সময় শব্দের প্রতিধ্বনি ব্যবহার করে ৷ তাদের মুখ থেকে আলট্রাসনিক তরঙ্গদৈর্ঘ্য বের হয় এবং তা সামনে কোন বস্তুর ওপর লেগে তা তাদের কানে ফেরত আসে৷ এতে বস্তুর অবস্থান ও আকার টের পায় তারা৷ বাদুড়ের কানে ২০টি পেশি আছে৷ এগুলো ব্যবহার করে তারা শব্দের প্রতিধ্বনির সূক্ষ্মতা যাচাই করে ৷ 

 

যার কান নেই, সেই শোনে সবচেয়ে ভালো।তুলনামূলক বড় আকারের এই মথগুলোর কান খুঁজে পাওয়া দুষ্কর৷ কিন্তু এর শুনতে পাবার ক্ষমতা প্রাণীকুলে সেরা ৷ তারা মানুষের চেয়ে দেড়শ’ গুণ ভাল শোনে৷ আর বাদুড়ের চেয়ে ১০০ হার্জ বেশি শুনতে পায় এই মথগুলো৷ 

 

অন্য কীটগুলো তাদের শিকারিদের শুনতে পায়। গুবরে, ঝিঁঝিঁ বা মথ পোকাগুলোর আলট্রাসাউন্ড সংবেদনশীল শ্রবণ ক্ষমতা রয়েছে ৷ এরা তাদের শিকারিদের শুনতে পায় ৷ তখন শত্রুর হাত থেকে বাঁচতে এরা আঁকাবাঁকা দৌঁড়ে পালায় বা গোলগোল করে উড়ে ৷ কোন কোনটি ভয় দেখাতে নানান শব্দও তৈরি করে৷

 

চোয়াল দিয়ে শোনে ডলফিন। শুনতে হলে সবসময় কানের প্রয়োজন নেই৷ এর প্রমাণ ডলফিন৷ তারা বাদুড় ও তিমি মাছের মত পানির নীচে শব্দ তৈরি করে অপর বস্তু বা প্রাণীর অবস্থান ও আকার নির্ধারণ করে ৷ কিন্তু সেই তথ্য সংগ্রহ করে চোয়াল ও দাঁত দিয়ে৷ 

 

হাতি বজ্রধ্বনি টের পায়। বিরাট কান দিয়ে হাতি বৃষ্টির আগেই মেঘের হালকা গর্জন টের পায়, যা মানুষের কান শুনতে পায় না ৷ এগুলো নিম্ন কম্পাঙ্কের বা ইনফ্রাসাউন্ড তরঙ্গদৈর্ঘ্যের শব্দ৷ তাদের পায়ের স্নায়ুকোষ দিয়ে তারা মাটির নীচের কম্পন ও শব্দ টের পায়৷

 

প্যাঁচা হল প্রকৃতির ‘সার্ভেইলেন্স’ ক্যামেরা।প্যাঁচা শুধু রাতে দেখতেই পায়না, মাথাও ৩৬০ ডিগ্রি ঘোরাতে পারে৷ তাদের অসাধারণ শ্রবণক্ষমতাও আছে ৷ তাদের দুই কান একরকম নয়৷ প্যাঁচা যখন উড়ে, তখন এক কান দিয়ে ওপরের শব্দ ও এক কান দিয়ে নীচেরটা শুনতে পায় ৷ এতে তাদের শিকার করতে সুবিধা হয়। 

 

এই সুপার ন্যাচারাল পাওয়ার নিয়েই এরা পরিবেশে কি সাধারণ ভাবে রয়েছে। মাঝে মাঝে খুবি অবাক লাগে বৈচিত্র্য এসকল প্রাণী দেখে।

 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ