Skip to content

৩রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শুক্রবার | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাইবার স্পেসে ৯২% নারী যৌন নিপীড়নের শিকার!

আমাদের সমাজে নারীর নিরাপত্তা নিয়ে এখনো রয়েছে হাজার প্রশ্ন৷  পরিবার থেকে শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মক্ষেত্র কোথাও নেই নারীর শতভাগ নিরাপত্তা। এমনকি সাইবার স্পেসেও অনিরাপদ নারীরা। আর এ চিত্রটা নিতান্তই ভয়াবহ। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের গবেষণা অনুযায়ী সাইবার স্পেসে যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে ৯২.২০ শতাংশ নারী। 

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন রবিবার  ‘বাংলাদেশে প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে যৌন নিপীড়ন’ শীর্ষক  একটি গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন। প্রতিবেদনটি তৈরি করেন সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চ্যাপ্টারের গবেষণা সেলের সদস্যরা। দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকাগুলো থেকে সংগৃহীত ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৫৪টি অপরাধের ঘটনা বিশ্লেষণ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। 

প্রতিবেদনে উঠে আসে সাইবার স্পেসে যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে ৯২.২০ শতাংশ নারী। এদের মধ্যে ইন্টারনেটে একান্ত ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ছড়ানোর মাধ্যমে নিপীড়িতদের ৬৯.৪৮ শতাংশই আপনজনের দ্বারা নিগ্রহের শিকার। ৩৩.৭৭ শতাংশ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী ও অপরাধীর মধ্যে প্রেমঘটিত সম্পর্কের তথ্য উঠে এসেছে। আর ৩৫.৭১ শতাংশ ঘটনায় অপরাধী ভুক্তভোগীর পূর্বপরিচিত। 

ভুক্তভোগী নারীদের মধ্যে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী ভুক্তভোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, যা প্রায় ৫৬.৪৯ শতাংশ এবং ৩২.৪৭ শতাংশ অপ্রাপ্তবয়স্ক (১৮ বছরের নিচে)। আবার ১৮ থেকে ৩০ বছর এবং ১৮ বছরের নিচে পুরুষের তুলনায় নারী ভুক্তভোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। আর ৩০ বছরের বেশি বয়স্ক ভুক্তভোগীর ক্ষেত্রে পুরুষের সংখ্যা বেশি। 

প্রতিবেদনে দেখা যায় সবচেয়ে বেশি যৌন নিপীড়নের সংবাদ পাওয়া গেছে ঢাকা বিভাগে, যার পরিমাণ ৩৩.১২ শতাংশ। এর পরের অবস্থানেই রয়েছে চট্টগ্রাম, ১৬.৮৮ শতাংশ। এ ছাড়া জেলা অনুযায়ী যৌন নিপীড়নের বেশির ভাগ ঘটনা ঘটছে বিভাগীয় শহরে।

সাইবার স্পেসে যৌন নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ডের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ভিডিও ও স্থিরচিত্র আকারে ধারণ করা কনটেন্ট যথাক্রমে ৫১.৯১ ও ৩৫.৫২ শতাংশ। এটা অন্যান্য মাধ্যমের বিবেচনায় তুলনামূলক বেশি। প্রতিবেদনে নিপীড়নের মূল উদ্দেশ্য হিসেবে যৌন সম্পর্ক স্থাপনকে চিহ্নিত করা হয়েছে, ৬৩.০৭ শতাংশ। পাশাপাশি কারণ হিসেবে রয়েছে প্রতিশোধমূলক প্রবৃত্তি ও অর্থ-সম্পদ হাতিয়ে নেওয়ার প্রবণতা।

গবেষণাটিতে এছাড়াও  গত এক বছরে দেশব্যাপী এ ধরনের অপরাধ প্রবণতা, অপরাধীর আদ্যোপান্ত, ভুক্তভোগীর অবস্থান ও হয়রানির মাত্রা এবং সামগ্রিক অর্থে সাইবার স্পেসে ব্যক্তির নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলো উঠে এসেছে। প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে গতকাল সকালে আয়োজিত ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি কাজী মুস্তাফিজ।  

প্রতিবেদনটিতে এসব তথ্যের পাশাপাশি  প্রযুক্তির অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণে উন্নত দেশগুলোর আদলে নারী ও শিশুদের ইন্টারনেট ব্যবহার সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন, সচেতনতা তৈরিসহ ১১টি সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।

 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ