ডিজিটাল অ্যাপ গুলো কমিয়ে দিচ্ছে ব্রেইলে আগ্রহ
দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের পড়ার জন্য ব্রেইল পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়৷ এই পদ্ধতিতে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা হাতে স্পর্শ করে করে পড়তে পারে। ব্রেইলের বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে আর কোন উপায় এখনো আবিষ্কার হয়নি দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য। অথচ অনেকেই আগ্রহ হারাচ্ছেন এই নির্ভরযোগ্য পদ্ধতির প্রতি৷
রাজধানীর বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা রাশেদুর রহমান একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। তার দুই মেয়েও একই সমস্যায় ভুগছেন। ছোট মেয়ের ব্রেইলে বেশ ভালো হলোও বড় মেয়ের এই পদ্ধতিতে তেমন আগ্রহ নেই। বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে ডিজিটাল বই পড়ার সুযোগ ও শিক্ষক সংকটের কারণেই এই আগ্রহ কমছে বলে বিশেষজ্ঞদের মত।
তবে শেখার জন্য ব্রেইলের বিকল্প কোনো পদ্ধতি নেই। অ্যাপে পড়া গেলেও শেখা হয়না। এতে বানান ও ব্যাকরণের নিয়মকানুন সম্পর্কে স্পষ্ট জ্ঞান অর্জন হওয়ার তেমন সুযোগ নেই।
অভিজ্ঞদের মতে, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের ব্রেইল না জেনে পড়াশোনা আর তোতাপাখির বোলের মধ্যে কোনো তফাত নেই। স্বাভাবিক মানুষরা দেখে পড়ে বলে তাদের কোথায় কোন নিয়ম কোন বানান তা জানা থাকে। আর দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা হাতের স্পর্শে অর্থাৎ ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়লে এসব নিয়ম শিখতে পারবে।
বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ৬৪টি স্কুলে ১০টি করে আসন আছে। প্রতিটি স্কুলে একজন করে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ‘রিসোর্স শিক্ষক’–এর তত্ত্বাবধানে শিশুদের ব্রেইল পদ্ধতিতে শিক্ষা দেওয়া হয়। তবে দৃষ্টি-প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন চট্টগ্রামের ইয়াং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশনের (ইপসা) এর তথ্য মতে, ৬৪ টি স্কুলের মধ্যে মাত্র ৩২টি স্কুলে রিসোর্স শিক্ষক আছেন। যার ফলে শিক্ষার্থীদের আগ্রহও ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। তবে বিকল্প পদ্ধতি নেই বলে দক্ষ প্রশিক্ষক দিয়ে ব্রেইল শেখাতে হবে এবং আগ্রহ বাড়াতে হবে।