ভালোবাসা কারে কয়?
ভালোবাসা- শব্দটি এতটাই মধুর যে বারবার শুনলেও শোনার তৃষ্ণা মেটে না। বরাবরের মতো বছর ঘুরে এই দিনটি আসে এই পৃথিবীর সকল মানুষকে মনে করিয়ে দিতে যে, কতটা ভালোবাসি আমরা পরস্পরকে। আমাদের কাছে ভালোবাসা দিবস কিন্তু শুধু একটা দিবস নয় বরং তা আমাদের বসন্ত দিনের যাত্রা শুরুর দ্বিতীয়ক্ষণ। পহেলা ফাল্গুনের চেতনাই আমাদের ভালোবাসা দিবসের সূচনার গল্প। ১৪ ফেব্রুয়ারি শুধু বৈশ্বিক উদ্যাপনে আমাদের সমর্পণ মাত্র।
ভালোবাসা দিবসের সূচনা ঘটে রোমান সাম্রাজ্যের বর্ণময় দিনগুলোতে। প্রাচীন রোমে, ১৪ ফেব্রুয়ারি জুনো দেবীর সম্মানে ছুটি পালন করা হতো। এই জুনো ছিল সমস্ত রোমান দেব-দেবীদের রানি। রোমানরা তার পুজো করত নারী আর বিয়ের দেবী হিসেবে। তার পরের দিন ১৫ ফেব্রুয়ারি পালিত হতো লুপারকালিয়া নামক দেবতার নামে বিরাট এক ভোজসভার। এই দেবতা সবার কাছে স্বামিত্ব, উর্বরতা, শস্য সামগ্রীর রক্ষাকর্তা, শক্তিশালী শিকারি হিসেবে পূজনীয় ছিল। কালক্রমে এই দুই উৎসবের সমন্বয়ে এবং কিছু কিছু রীতির পরিবর্তনের মাধ্যমে ভালোবাসা দিবসের উদ্ভব হয় বলে বোদ্ধাদের ধারণা।
তখনকার দিনে তরুণ-তরুণীদের আলাদা করে রাখার জন্য খুব কড়াকড়ি নিয়ম অনুসরণ করা হতো। যে উপলক্ষে তারা কাছাকাছি আসতে পারত, সেটা হচ্ছে লুপারকালিয়ার সম্মানে আয়োজিত উৎসবের টোকেন পর্বে। মেয়েরা স্লিপে তাদের নাম লিখে একটি পাত্রের মধ্যে রেখে দিত। তরুণরা সেই পাত্র থেকে লটারির মতো করে স্লিপ তুলে নিত। যে মেয়ের নাম তার হাতে উঠত ওই মেয়ের সাথেই সে উৎসবের পুরো সময় কাটাতে পারত। অনেক সময় তাদের একত্রে থাকা পুরো বছরজুড়ে চলতে থাকত। এর কোনো একসময়ে তাদের মধ্যে প্রেম জন্ম নিলে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতো।
সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়ামের আমলে রোমান সাম্রাজ্য অনেক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। নিষ্ঠুর প্রকৃতির এই সম্রাটের অধীনে কেউ যুদ্ধে যেতে চাইত না। তিনি এর কারণ হিসেবে ধরে নেন পরিবার আর স্ত্রীর প্রতি যুবকদের ভালোবাসাকে। এ কারণে তিনি রোমে সব ধরনের বিয়ে এবং বাগদান নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন ছিলেন সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়ামের আমলে রোমের একজন যাজক। ভালোবাসার প্রতি তীব্র অনুরাগী যাজক ভ্যালেন্টাইন সম্রাটের অগোচরে রোমান সৈন্য বাহিনীর সদস্যদের বিয়ে পড়াতে লাগলেন। এই পবিত্র কাজ সম্পাদনের অপরাধে তিনি গ্রেফতার হন। তাকে রোমান বিচারালয়ে পাঠানো হয়। সেখানে তাকে গদার আঘাতে মৃত্যুদ-াদেশ দেওয়া হয় এবং তার মাথা কেটে রাখার হুকুম জারি করা হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়। জেলে থাকাকালীন সময়ে ভ্যালেন্টাইন জেলারের মেয়ের অন্ধত্ব দূর করেন। মেয়েটি তার প্রতি গভীর প্রেমে আসক্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু তার শোচনীয় পরিণাম হওয়া থেকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়। মৃত্যুর আগে ভ্যালেন্টাইন তাকে শেষ একটি বার্তা প্রেরণে সক্ষম হন। তাতে লেখা ছিল ‘ফ্রম ইউর ভ্যালেন্টাইন’। আর এখান থেকেই ভালোবাসা দিবসের যাত্রা শুরু হয়।
প্রাচীন রোমানে লুপারকালিয়া আর জুনোর সম্মানে আয়োজিত উৎসবে দেব-ভক্তির পাশাপাশি কামক্রীড়ার প্রচলনও খুব বেশি ছিল। লটারির মাধ্যমে নারী-পুরুষ জুটিবদ্ধ হয়ে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতো। সমাজকে এই ভ্রষ্টতার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘ভালোবাসা দিবস’ হিসেবে পালন করার আহ্বান জানানো হয়। যদিও লুপারকালিয়া উৎসবের লটারি প্রথার পুরোপুরি বিলোপ সাধন করা তখনও করা যায়নি। তবে যাজক ভ্যালেন্টাইনের প্রতি সম্মান প্রদর্শনার্থে তখন লটারি করা হতো শুধুমাত্র গিফট বিনিময়ের জন্য ভ্যালেন্টাইন নির্বাচনের জন্য। অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত এই প্রথা একটানা চলতে থাকে। তারপরেই এতে খটকা লাগে। দু-পক্ষের গিফট বিনিময় প্রথা উঠে যায়। গিফট দেওয়াটা শুধুমাত্র পুরুষের উপর গিয়ে বর্তে। কিন্তু পুরুষরাও দিনে দিনে এই লটারি উত্তোলনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়ে। কেননা তারাও অপরিচিত নারীদের সাথে গিফট বিনিময়ে অনীহা দেখানো শুরু করে। এরপর লটারির মাধ্যমে ভ্যালেন্টাইন বেছে নেওয়া এবং তার সাথে গিফট দেওয়া-নেওয়ার প্রথা পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়। মানুষ এখন নিজের পছন্দমতো কাউকে ভ্যালেন্টাইন হিসেবে বেছে নিতে পারে। প্রিয়জনকে বেছে নেওয়ার এই স্বাধীনতা ভালোবাসা দিবসে নতুন বৈচিত্র্য এবং মানব-মানবীর সম্পর্কে গভীরতা এনে দিয়েছে।
ঐতিহ্যবাহী ভালোবাসা দিবস
শত শত বছর আগে ইংল্যান্ডে শিশুরা ভালোবাসা দিবসে প্রাপ্তবয়স্কদের মতো সাজ-পোশাক পরে ঘরে ঘরে গিয়ে ভালোবাসার শুভেচ্ছা জানিয়ে আসত।
ওয়েলসে কাঠের তৈরি ‘ভালোবাসা চামচ’ তৈরি করে সেগুলো ১৪ ফেব্রুয়ারি গিফট হিসেবে আদান-প্রদানের প্রচলন ছিল। হার্টশেপ চাবি, চাবি ঢোকানোর গর্তসহ নকশা করা চামচের চাহিদা ছিল তুঙ্গে। এ ধরনের ডেকোরেশনের মানে ছিল ‘আমার হƒদয়ের তালা খুলে দাও’।
মধ্যযুগে তরুণ-তরুণীরা একটা পাত্র থেকে নাম লেখা চিরকুট বেছে নিত, কে তার ভালোবাসার পাত্র হবে তা নির্ধারণের জন্য। যে নামটিই উঠে আসুক না কেন, তারা সেই নামটি জামার আস্তিনে এক সপ্তাহ পর্যন্ত লাগিয়ে রাখত। প্রিয়জনের নাম জামার হাতায় বেঁধে রাখার মাধ্যমে পুরো সমাজকে তার মনের কথা মুখে না বলেই বুঝিয়ে দিতে পারত।
ইউরোপের কিছু দেশে ভালোবাসা দিবসে বাহারি পোশাক উপহার হিসেবে প্রচলিত ছিল। তরুণরা তাদের পছন্দের তরুণীকে উপহার হিসেবে পোশাক পাঠাত। যদি তরুণী উপহারটি নিজের কাছে রেখে দিত, সেটার মানে ধরা হতো সে উপহারদাতাকে বিয়ে করতে রাজি আছে।
কিছু কিছু লোক বিশ্বাস করত কোনো তরুণী যদি ভালোবাসা দিবসে আকাশে কোনো রিবন উড়ে যেতে দেখে তাহলে তার বিয়ে কোনো নাবিকের সাথে হবে। সে যদি কোনো চড়ুই পাখি দেখে তাহলে গরিব ঘরে বিয়ে হলেও জীবন খুব সুখী হবে।
এ ছাড়াও আরেকটি ব্যাপার ছিল এ রকম গাছ থেকে আপেল পারার সময় পছন্দের পাঁচ-ছয়টি ছেলে বা মেয়ের নাম মনে মনে উচ্চারণ করতে থাকুন। এদের এমনভাবে বেছে নিন যাদের মধ্য থেকে একজনকে আপনি বিয়ে করতে চান। আপেল যখন গাছ থেকে ছুটে আসবে তখন যার নাম আপনার মুখে থাকবে, সেই হবে আপনার স্বামী বা স্ত্রী।
ভালোবাসা দিবসে কেউ আপেল কাটলে এর মধ্যে যতটা বিচি থাকবে, তার ততটা বাচ্চা হবে। এটা অতি পুরোনো বিশ্বাস।
কিউপিড : ভালোবাসার প্রতীক
সুদর্শন কিন্তু এখনও বালক। মেয়েদের স্বপ্নে উঁকি দেওয়া কঠিন পুরুষ হয়তো সে কিন্তু ভালোবাসার প্রতীক বলে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সবাই তার সাথে প্রণয়াবদ্ধ। যুগ যুগ ধরে এই দেব-শিশু ভালোবাসার মায়ায় বিদ্ধ করে চলছে। দুটি মানব মনকে একসুতোয় আবদ্ধ করতে তার প্রেম-ধনু থেকে তীর নিক্ষেপ করে যাচ্ছে। ভাবতে অবাক লাগলেও সত্যি এই ডানা সংযুক্ত দেব-শিশুটির জন্যই রোমিও-জুলিয়েট, লাইলী-মজনু, শিরি-ফরহাদের অমর প্রেম কাহিনির সৃষ্টি। ভালোবাসার কথা আছে বলেই এসব কাহিনি মনের গভীরে দাগ কেটে যায়। আর ‘কিউপিড’ এই ভালোবাসার স্বর্গীয় রূপ ধারণ করে আছে।
কিউপিডের ভালোবাসার দেবতা হিসেবে স্থান লাভের ইতিহাস সমস্ত প্রেমীদের জন্য বিরাট অনুপ্রেরণা। দেবতা হলেও কিউপিডের জন্ম নিয়ে প্রচুর বিভ্রান্তি আছে। কারও কারও মতে কিউপিডের জন্ম মারকারি আর ডায়নার ঔরসে। কেউবা ধারণা করেন কিউপিড মারকারি আর ভেনাসের সন্তান। তবে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত বিশ্বাস হচ্ছে মার্স এবং ভেনাসের ঘরে কিউপিডের জন্ম হয়। ভালোবাসার প্রতীক বলে স্বীকৃত শিশুর জন্য এর চেয়ে যথার্থ পিতা-মাতা মনে হয় আর হয় না। কিউপিডের ভালোবাসার দেবতা হিসেবে গণ্য হওয়ার ইতিহাস সমস্ত প্রেমীদের জন্য বিরাট অনুপ্রেরণা হয়ে আছে। যা ভেনাসের তরফ থেকে এই নশ্বর পৃথিবীতে রূপের অহংকারে মত্ত নারী, সবাইকে শায়েস্তা করার জন্য কিউপিডের আগমন। কিন্তু সেই রূপ গরবিনীকে দেখামাত্র কিউপিড প্রেম ধনু দিয়ে নিজ শরীরে তীর বর্ষণ করেন। সত্যিকারের গভীর ভালোবাসায় মায়ের চক্ষুশূল এই রূপসীকে আপন করে নেন। কিন্তু দেবতা আর নশ্বর মানবীর এই বন্ধন মা ভেনাস ভালোভাবে নিতে পারেননি। ছেলের ভালোবাসায় চিড় ধরানোর জন্য তিনি নানা কূট-কৌশলের আশ্রয় নেন। সাথে যোগ দেয় কিউপিডের প্রণয়িনীর বোনও। কিন্তু তাদের কোনো চাল কাজে আসেনি। কিউপিডের মনের মানুষ থেকে তাকে আলাদা করা সম্ভব হয়নি।
এখান থেকেই ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে কিউপিডের যাত্রা শুরু। যে নিজ ভালোবাসার স্বীকৃতি আদায়ের জন্য যে-কোনো প্রতিকূলতা মোকাবেলায় বদ্ধপরিকর। সেজন্য যদি নিজের পরিবার কিংবা সমস্ত পৃথিবীর বিপক্ষে দাঁড়াতে হয় তাতেও তার কোনো ভয় নেই। তবে কিউপিডের সম্পর্কে এ কথাও প্রচলিত তার সব তীরের আঘাতে কিন্তু মানুষ মন বিলিয়ে দেয় না। কিছু তীরের বৈশিষ্ট্য এমন যে, সেগুলো ভালোবাসার জনের প্রতি মানুষকে বিমুখ করে তোলে। তবে অন্যদের মতে তার দুধরনের তীরগুলোর মধ্যে সোনালি তীরের আঘাতে মনে সত্যিকারের প্রেম জন্ম নেয় আর ধূসর তীরের সংস্পর্শে আসলে ইন্দ্রিয় ভোগবিলাসী মনোভাবের সূচনা হয়। তবে কিউপিডের তীরের আঘাতে যে ফলই হোক না কেন, ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে তার প্রতিকৃতি মানুষের মনে চিরস্থায়ীভাবে আসীন হয়ে আছে।
ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে সব বয়সের মানুষের উৎসাহ-উদ্দীপনা সহজেই নজর কাড়ে। এইদিনে প্রিয়জনকে ‘ভালোবাসি’ বলার মধ্যে ভিন্ন আমেজ থাকে। সঙ্গীহীন একাকী বলে ভালোবাসা দিবসকে এখন অপ্রয়োজনীয় আহ্লাদ বলে মনে হতে পারে। কিন্তু মনের মানুষ একজন পেয়ে গেলে এই দিনটির আবেদন বোঝা যাবে। বছরের এই দিনটির প্রতীক্ষায় তখন দিন কাটতে চাইবে না। সম্পর্কে আবদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ভালোবাসা দিবস যদি প্রিয়জনের সাথে মিলে উদ্যাপন করা না যায়, তবে মনে কষ্ট আসাটা খুবই স্বাভাবিক। তাই ভালোবাসা দিবস পরিপূর্ণভাবে উপভোগের জন্য সব রকম প্রস্তুতি আগে থেকে নিয়ে রাখাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। ভালোবাসা দিবসকে রোমান্টিকতায় ভরে তুলতে কিছু বিষয়ের উপর বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন।
চেষ্টা করুন জীবনকে ঘিরে আপনার সঙ্গীর আশা-আকাক্সক্ষা, স্বপ্ন সম্বন্ধে জানার, তার সম্পর্কে খুঁটিনাটি সবকিছু বোঝার চেষ্টা করুন। এসবের ফাঁকে তার দৃষ্টিতে ভালোবাসা দিবস কেমন হওয়া উচিত সেটা জেনে নিন। এখন তার সম্পর্কে জড়ো করা সব তথ্যের ভিত্তিতে দিনটিকে তার পছন্দ অনুযায়ী পারফেক্ট করে সাজিয়ে নিন। সুন্দর দেখে কার্ড কিনুন অথবা নিজেই কার্ড তৈরি করে নিন। ভালোবাসা, প্রশস্তি আর উপলব্ধির আঁচড়ে কানায় কানায় পরিপূর্ণ করে কার্ডটি পূরণ করুন। এবার একটি গোলাপসহ প্রিয়জনের কাছে উপস্থাপন করুন।
শুধুমাত্র নারীরাই সব উপহার গ্রহণ করবে তা কিন্তু নয়, পুরুষরাও ভালোবাসা দিবসে তাদের সঙ্গীর কাছ থেকে বিশেষ কিছু আশা করে। সুতরাং আপনার প্রেমিকপ্রবরের জন্য কার্ড, ফুল, চকোলেট কিনে দুজনে মিলে দিনটিকে উপভোগ্য করে তুলুন। ভালোবাসা দিবসে আপনার সঙ্গীই যেন হয় সমস্ত আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। দেখবেন কেমনভাবে রোমান্টিকতার পালে হাওয়া লাগিয়ে উড়ে বেড়াচ্ছেন। আমরা শুধু দুজন দুজনার, ভালোবাসার এই মন্ত্র কখনও বিফলে যায়নি। দুজনের মধ্যে কোনো কমিউনিকেশন গ্যাপ থাকলে সেটা দূর করার জন্য এই দিনটিকে বেছে নিন। মনের দুয়ার খুলে সবকিছু শেয়ার করুন। পুরুষদের জন্য করণীয় হচ্ছে সঙ্গীর মনের কামনাগুলো জানতে চেষ্টা করা। আর নারীরা যেটা করতে পারেন তা হচ্ছে সঙ্গীকে কথা বলতে দেওয়া। নিজেই প্রশ্ন করে, নিজেই উত্তর খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা বাদ দিয়ে তাকে নিজের মনোভাব ব্যক্ত করতে দিন। পরস্পরকে যতবেশি জানতে পারবেন, বোঝাপড়াটাও ততভালো হবে। সম্পর্কের ভিত্তি আরও দৃঢ় হবে। হয়তো আপনার সঙ্গী কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার, অথচ আপনি মাউস আর মনিটর আলাদা করে চিনেন না। অথবা আপনার প্রেয়সীর শখ বাগান আর আপনার কাছে গোলাপ অন্য দশটা ফুলের মতোই সাধারণ। নিজের কাজের পাশাপাশি সঙ্গীর পছন্দের বিষয়ে আগ্রহ দেখান। তার প্রিয় বিষয় সম্পর্কে সাধারণ কোনো প্রশ্ন করতে দ্বিধা করবেন না। দেখুন, আপনার আগ্রহীভাব তার চোখে মুখে কীভাবে আনন্দের ছটা ছড়িয়ে দিচ্ছে। তাই ভালোবাসা দিবসকে মধুর করে তুলতে এতদিন অগ্রাহ্য করা বৈষয়িক দিকগুলোতেও নজর দিন।
‘বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর।’ প্রিয়জনকে বিশ্বাস করে তার হাতে নিজেকে পুরোপুরি সমর্পণ করে দিন। ভালোবাসা দিবসে পরস্পরের প্রতি যদি কোনো অবিশ্বাস, মনে কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকে সব ছুঁড়ে ফেলে দিন।
ভালোবাসা দিবসকে রোমান্টিকতায় ভরিয়ে তুলতে প্রিয়জনের উদ্দেশ্য কোনো চিঠি বা কবিতা লিখুন। নিজেই তাকে পড়ে শোনান। তার চোখেমুখে ভালোবাসার দীপ্তি আপনার মনে প্রশান্তি বয়ে আনবে।
প্রচ্ছদ মডেল : সোনিয়া ও দ্বীপ
পোশাক : টাঙ্গাইল শাড়ি কুটির
ছবি : তানভীর আহমেদ