
যে বিষয়ে খেয়াল রাখলে চাকরির ইন্টারভিউ ভালো হবে

চাকরির ইন্টারভিউ শুনলেই যেন একটু টেনশনের আবহ তৈরি হয়। কী প্রশ্ন করা হবে, কীভাবে উত্তর দেব, যদি কোনো কিছু না জানি তখন কী করব এই সব চিন্তায় অনেকেই নার্ভাস হয়ে পড়েন। তবে একটু সচেতন প্রস্তুতি আর কিছু সহজ কৌশল অনুসরণ করলে আপনি ইন্টারভিউয়ের দিনটিকে নিজের করে তুলতে পারেন সহজেই। চলুন জেনে নিই কীভাবে ইন্টারভিউয়ে ভালো করা যায় সহজভাবে।
প্রশ্ন শোনার পর এক সেকেন্ড সময় নিন – প্রশ্ন শোনার সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দেওয়া সবসময় ভালো নয়। বরং প্রশ্নটি মনোযোগ দিয়ে শুনে এক-দু’সেকেন্ড থেমে তারপর উত্তর দিন। এতে আপনি কথাগুলো ভালোভাবে সাজিয়ে বলতে পারবেন এবং আপনার আত্মবিশ্বাসও প্রকাশ পাবে। মনে রাখবেন সময় নিয়ে উত্তর দেওয়া মানে আপনি চিন্তাশীল।
যা জানেন না, সেটি সরলভাবে স্বীকার করুন – সব প্রশ্নের উত্তর জানা সম্ভব নয়। যদি এমন কোনো প্রশ্ন আসে যে সম্পর্কে আপনার ধারণা কম তাহলে দ্বিধা না করে সেটি স্বীকার করুন। ভান করার চেষ্টা করবেন না। বরং নম্রভাবে বলুন, “এই বিষয়ে আমি খুব একটা জানি না। তবে শিখতে আগ্রহী।” এতে আপনার সততা ও শেখার মানসিকতা প্রকাশ পাবে।
ক্যারিয়ারে বিরতি থাকলে সেটি গোপন করবেন না – অনেকেই মনে করেন ক্যারিয়ারে কিছুদিনের বিরতি থাকলে তা লুকাতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, জীবনে এমন সময় আসতেই পারে। সেটা হোক ব্যক্তিগত কারণে, স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা অথবা নতুন কিছু শেখার জন্য। কারণটা স্পষ্টভাবে সহজভাবে বলুন। এতে আত্মবিশ্বাস প্রকাশ পাবে।

সময়জ্ঞান দেখান – ইন্টারভিউয়ের জন্য নির্ধারিত সময়ের আগে পৌঁছানো ভালো। কিন্তু খুব বেশি আগে গেলে সেটিও অস্বস্তিকর হতে পারে। আবার দেরি করাও একদমই চলবে না। চেষ্টা করুন, নির্ধারিত সময়ের ১০ মিনিট আগে পৌঁছাতে। এতে আপনি মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে পারবেন।
কোম্পানি সম্পর্কে আগে থেকেই কিছু জানুন – ইন্টারভিউয়ে যাওয়ার আগে সেই প্রতিষ্ঠানের সম্পর্কে কিছু জেনে রাখা খুবই জরুরি। প্রতিষ্ঠান কী নিয়ে কাজ করে, তাদের মূল পণ্য বা সেবা কী, তারা কোন বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে এসব তথ্য আপনাকে আলাদা করে তুলে ধরবে। এতে বোঝা যাবে আপনি সত্যিই আগ্রহী এবং প্রস্তুত।
শারীরিক ভাষা যেন হয় আত্মবিশ্বাসী – আপনি কী বলছেন তা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি আপনি কীভাবে বলছেন সেটিও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। সোজা হয়ে বসুন, চোখে চোখ রেখে কথা বলুন, হাত-পা অস্থিরভাবে নড়াচড়া না করে স্বাভাবিক থাকুন। আপনার শরীরী ভাষা যেন বলে “আমি প্রস্তুত”।
নিজেকে ছোট ভাববেন না – অনেক সময় আমরা মনে করি চাকরিদাতা যেন আমাদের ওপর একটা দয়া করছেন। এই ধারণা একেবারে ভুল। আপনি সেখানে আছেন কারণ আপনি যোগ্য। আপনার ভেতরে দক্ষতা আছে। তাই মাথা উঁচু করে ইন্টারভিউ দিন। আত্মবিশ্বাসই আপনার সবচেয়ে বড় শক্তি।
ইন্টারভিউ মানেই শুধু প্রশ্ন-উত্তর নয়। বরং এটি নিজেকে উপস্থাপনের একটি সুযোগ। কিছু ছোটখাটো অভ্যাস গড়ে তুললেই আপনি ইন্টারভিউর দিন অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবেন। প্রস্তুতি, সততা, সময়জ্ঞান আর ইতিবাচক মানসিকতা। এই চারটি বিষয়েই লুকিয়ে আছে সফলতার চাবিকাঠি।