বিকেলের যে অভ্যাস বদলে দিবে শিশুর মন-মানসিকতা

এই প্রযুক্তির যুগে স্কুল থেকে ফিরে এসেই বেশিরভাগ শিশু মোবাইল, ট্যাব বা টিভির দিকে ঝুঁকে পড়ে। অনেক সময় অভিভাবকরাও চুপ করে ডিভাইসটা হাতে দিয়ে দেন যেন একটু বিশ্রাম পান। আবার কেউ কেউ ফিরেই শিশুকে পড়তে বসিয়ে দেন বা প্রাইভেট পড়ার জন্য তাড়াহুড়া করেন। এই দুই অভ্যাসই শিশুর মানসিক বিকাশে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিকেলের ঘুমও যদি বেশি হয়ে যায়, সেটাও ক্ষতির কারণ হতে পারে।
তাই বিকেলের সময়টা শিশুর জন্য এমনভাবে সাজানো উচিৎ যাতে তারা শরীরচর্চা, বিশ্রাম ও মনের প্রশান্তি পায়। এতে তাদের মনোযোগ ও পড়ার আগ্রহ বাড়বে। আসুন জেনে নেওয়া যাক বিকেলে শিশুর জন্য কী কী অভ্যাস গড়ে তুললে ভালো হয়।

খাবার ও ছোট্ট বিশ্রাম
স্কুল থেকে ফিরে এসেই শিশুকে হালকা স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে দিন। তারপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম দরকার। কিন্তু এই বিশ্রাম যেন দীর্ঘ না হয়। ঘুম না দিলেও একটু শুয়ে থাকা বা শান্ত পরিবেশে কিছুক্ষণ বসে থাকাও যথেষ্ট।
নিজের পছন্দের কাজ করার সুযোগ
বিকেলে পড়ার আগে শিশু যেন তার পছন্দমতো কিছু করতে পারে। এটা খুব দরকার। তবে সেটা যেন ফোন বা টিভি না হয়। বরং সে চাইলে ছবি আঁকতে পারে, গল্পের বই পড়তে পারে বা পছন্দের গাছ-পোষা প্রাণীর যত্ন নিতে পারে। এতে তার মনও ভালো থাকবে। আবার সৃজনশীলতাও বাড়বে।
খেলাধুলা বা শরীরচর্চা
বিকেল ৫টার পর শিশুদের মাঠে খেলতে দেওয়াই সবচেয়ে ভালো। না পারলে বাড়িতেই হালকা ব্যায়াম, স্কিপিং বা সহজ যোগাসন করাতে পারেন। নিয়মিত শরীরচর্চার অভ্যাস শিশুর শরীর ও মন দুটোই ভালো রাখে।
মনোযোগ বাড়াতে ধ্যান বা মেডিটেশন
পড়ার আগে ১০ মিনিট চোখ বন্ধ করে শান্তভাবে বসা, মানে ধ্যান। এটা শিশুদের মনোযোগ বাড়াতে খুবই কার্যকর। প্রথম দিকে তারা এক জায়গায় বসে থাকতে চাইবে না। কিন্তু ধীরে ধীরে এই অভ্যাসে তারা অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। ধ্যান মন শান্ত রাখে, মস্তিষ্ক সচল করে এবং লক্ষ্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
স্বাস্থ্যকর নাশতার অভ্যাস
সন্ধ্যায় পড়ার ফাঁকে শিশুদের সাধারণত ক্ষুধা পায়। এসময় চিপস, চানাচুর বা মিষ্টির বদলে কলা, ছোলা, ডিম বা সবজি দিয়ে বানানো স্যান্ডউইচ দিন। হাতের কাছে বাদাম বা ড্রাই ফ্রুটস রাখলে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যাবে।
শিশুর বিকেলটা যদি সঠিকভাবে কাটে তাহলে পড়ালেখায় তার মনোযোগ এমনিতেই বাড়বে। সৃজনশীলতা, খেলাধুলা, ধ্যান আর স্বাস্থ্যকর খাবারে শিশুর মননশীলতা বৃদ্ধি পাবে। অভিভাবক হিসেবে এই অভ্যাসগুলো গড়ে দিতে পারাই সবচেয়ে বড় সফলতা।