জেন্ডার বৈষম্য নিরসনে অর্থনীতিতে পিছিয়ে বাংলাদেশ
গবেষণা বলছে, অর্থনীতিতে জেন্ডার বৈষম্য হ্রাসে বাংলাদেশের স্কোর ৩১ দশমিক ২ শতাংশ, যেখানে বৈশ্বিক গড় স্কোর ৬০ দশমিক ৫ শতাংশ। দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রগুলোতে পুরুষদের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছেন নারীরা।
‘বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ: সাম্প্রতিক ধারার পর্যালোচনা’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় রোববার (৯ মার্চ) সকালে একটি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ‘উন্নয়ন সমন্বয়’।
সভায় অংশগ্রহণ করেছিলেন স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজের (বিআইএসএস) গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবীর, শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য ও বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফাতেমা সুলতানা শুভ্রা, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উম্মে ফারহানা, ন্যাশনাল চর অ্যালায়েন্সের সদস্য সচিব জাহিদ রহমান প্রমুখ।
স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজের (বিআইএসএস) গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবীর বলেন, উচ্চ দক্ষতা বা উচ্চ পারিশ্রমিকের চাকরিতে নারীর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। পুরুষকে বেশি নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। বিপরীতে লো-স্কিলের কর্মগুলোতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো হচ্ছে। ফলে নারী বেশি পরিশ্রম করেও যথাযথ সম্মান বা পারিশ্রমিক পান না। পোশাক কারখানাগুলো নিম্ন মধ্যবিত্ত নারীরা বেশি কাজ করেন। চা শিল্পেও একই অবস্থা। বরাবরই নারীরা অবহেলিত থেকে যাচ্ছেন।
শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য ও বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার বলেন, নারীদের বলা হয় মহিলা। এই শব্দটি এসেছে মহল, অন্দরমহল বা ঘর থেকে। মহিলা শব্দ দিয়েই নারীকে ছোট করে দেখা হয়। তিনি আরও বলেন, নারীদের যে কাজের বিনিময়ে অর্থ আসে, তার সেই কাজকে স্বীকৃতি দেয়া হয়। কিন্তু তার ঘরের কাজকে অর্থনৈতিক স্বীকৃতি দেয়া হয় না। এই কাজকে স্বীকৃতি দিতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম বলেন, নারীরা শোষণ ও বঞ্চনার শৃঙ্খলে বন্দী। আমাদের প্রচলিত বাজার অর্থনীতির কাঠামোতেই বৈষম্য রয়েছে। ফলে নারীরা গৃহস্থালিসহ অন্য যে ক্ষেত্রে শ্রম দিচ্ছেন, অর্থনীতিতে এর হিসাব করা হচ্ছে না। অথচ এসব খাতে তারা ব্যাপক অবদান রাখছেন।
এছাড়াও সভায় উপস্থিত উন্নয়ন সমন্বয়ের পরিচালক (গবেষণা) আব্দুল্লাহ নাদভী সঞ্চালনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফাতেমা সুলতানা শুভ্রা, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উম্মে ফারহানা, ন্যাশনাল চর অ্যালায়েন্সের সদস্য সচিব জাহিদ রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন এই বিষয়ে।
অনন্যা ডেস্ক/ এসএস