হোটেলের লিফটে আটকে পড়ে তিনজন নারী, অত:পর
‘নবরস নৃত্য ও নাট্য দল’ নতুন বছরের শুরুতে মঞ্চে নিয়ে এসেছে তাদের চতুর্থ প্রযোজনা নাটক ‘সাতকাহন’। নাট্যকার শামীম সাগরের রচিত এই নাটকের নির্দেশনায় ছিলেন শামছি আরা সায়েকা। অভিনয়ে ছিলেন রোজী সিদ্দিকী, সৈয়দা শামছি আরা এবং মিতা গাঙ্গুলী।
নাটকটির প্রথম মঞ্চায়ন হয় গত বৃহস্পতিবার। এরপর শুক্রবার এবং শনিবার ঢাকার বেইলি রোডের মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে বেশ কয়েকটি প্রদর্শনী হয় নাটকটির।
‘সাতকাহন’-এর কাহিনী
নাটকের গল্প আবর্তিত হয়েছে এক পাঁচ তারকা হোটেলের একটি লিফটকে ঘিরে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ব্ল্যাকআউটের মধ্যে আটকা পড়ে তিন নারী। তিনজন ভিন্ন ভিন্ন জগতের প্রতিনিধি—একজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী উঠতি অভিনেত্রী, একজন গৃহবধূ আর একজন যৌনকর্মী।
প্রথমদিকে সন্দেহ, তর্ক ও অপমানের মধ্য দিয়ে তাদের সম্পর্ক জটিল হয়ে ওঠে। কিন্তু ধীরে ধীরে নিজেদের জীবনের কষ্টের গল্পগুলো ভাগাভাগি করতে করতে তারা বুঝতে পারে, পুরুষতান্ত্রিক সমাজের শোষণ এবং বঞ্চনার শিকার হিসেবে তাদের লড়াই এক ও অভিন্ন।
যখন লিফট সচল হয় এবং তারা নির্দিষ্ট ফ্লোরে পৌঁছে, তবুও তারা আর বের হয় না। কারণ তারা আবিষ্কার করে যে তাদের প্রত্যেকের জীবনে একই পুরুষ প্রতারণা করেছে। এতে একে অপরকে শত্রু না ভেবে তারা হয়ে ওঠে একে অপরের সহযোদ্ধা।
নাট্যকার শামীম সাগর এই সম্পর্কে বলেন, ‘তিন ভিন্ন শ্রেণির নারীদের জীবন, সংগ্রাম ও তাদের এক অভিন্ন বন্ধন ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। লিফট তাদের কাছে শুধু একটি যান্ত্রিক অবরোধ নয় বরং এটি হয়ে ওঠে তাদের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন ও বন্ধুত্বের প্রতীক। আশা করি, এই নাটক দর্শকদের ভাবাবে, আবেগে ভাসাবে এবং নতুনভাবে নিজেদের জীবনের প্রতিচ্ছবি দেখতে অনুপ্রাণিত করবে।’
‘সাতকাহন’-এর শক্তি
শক্তিশালী চরিত্রায়ণ ও কাহিনির মাধ্যমে সমাজের শোষণ ও বঞ্চনার বাস্তবতাকে তুলে ধরেছে এই নাটক। নারীদের সংগ্রামের গল্প এই নাটককে দর্শকদের কাছে আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে।
‘সাতকাহন’ শুধুমাত্র একটি নাটক নয়, এটি একইসাথে নারী জীবনের প্রতিচ্ছবি।