মেয়েদের সুরক্ষায় কর্মকৌশল জরুরি
সম্প্রতি সমাজে ঘটে চলেছে নানাবিধ অন্যায়, শোষণ, অত্যাচার। তবে মেয়েদের সঙ্গে এমন কিছু বিভৎস ঘটনা ঘটছে। যাতে করে ঘরে-বাইরে উভয়ক্ষেত্রেই মেয়েরা অনিরাপদ। গুম, খুন, ধর্ষণ, যৌন হয়রানির মতো ঘটনাগুলো অহরহ ঘটছে। এছাড়া বখাটেদের উৎপাত তো আছেই।
এই পরিস্থিতিকে কিছুটা হলেও বদলে দিতে পারে কিছু উদ্যোগ। কারণ সবসময় পরিবার মেয়েদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে না। এমনকি আজকাল পরিবারেও কন্যাসন্তানের সঙ্গে নানাবিধ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। যা জাতির বিবেকের প্রশ্ন তোলে! তবে পরিবার, সমাজ সর্বস্তরে মেয়েদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে কিছু কর্মকৌশল। সাইক্লিং, সাঁতার, মার্শাল আর্ট বা কারাতে, সুডো, স্কেটিং, তায়কান্দো, দৌঁড়ানোর অভ্যেস, শারীরিক তাপমাত্রা বাড়ানোর ব্যায়াম, ইতিবাচক চিন্তা শেখানো, দৃষ্টভঙ্গি সুপ্রসারিত করা, ভালো বই পড়ার অভ্যেস বুদ্ধিমত্তা বৃদ্ধি করতে সহায়ক, সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম করে তোলা প্রভৃতি। এসব কর্মকৌশল গ্রহণের ফলে মেয়েরা অনেকটাই নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে। তবে আজও সমাজে এর ব্যাপক প্রচার-প্রসার ঘটেনি। ফলে মেয়েদের মধ্যেও এ বিষয়ে সচেতনতা আসেনি।
অপরাধকারী সবসময় মানুষের দুর্বলতাকে চিহ্নিত করতে চেষ্টা করে। আর মেয়েরা জন্মগতভাবে শারীরিক দিক থেকে পুরুষের তুলনায় কিঞ্চিৎ কম শক্তিশালী। ফলে পুরুষের নখর আঘাত অল্পতেই মেয়েদের কাবু করতে সক্ষম। তবে মেয়েরা শারীরিকভাবে খানিক দুর্বল, তার কারণও মেয়েদের নিজেদের প্রতি অসচেতনতা। পরিবারে ছেলে সন্তানকে যতটা পুষ্টিকর খাবর দেওয়া হয়, কন্যাসন্তানকে ততটা দেওয়া হয় না। এমনকি একজন ছেলেকে একটি ডিমের পুরো অংশ দিলেও আজও অনেক পরিবারে কন্যা সন্তানের ক্ষেত্রে সেটার অর্ধাংশ বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে জোটেই না। ফলে কর্মকৌশল গ্রহণ প্রথম শর্ত কন্যাসন্তানকে শারীরিকভাবে শক্তিশালী করে তোলা। এলক্ষ্যে পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে।
প্রতিদিন পত্রিকার পাতায় নারী ও শিশুদের নেতিবাচক সংবাদ মনকে বিষিয়ে তোলে। সবসময় কন্যাদের নিয়ে পরিবারে একধরনের আতঙ্ক কাজ করতে থাকে। ঘরে-বাইরে সর্বত্র কন্যাসন্তান খুবই অনিরাপদ। ভীতিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় মাঝে মধ্যেই। যদি এ ধরনের কিছু কর্মকৌশল মেয়েদের আয়ত্তে থাকে, তবে অনেকটাই ভয়কে জয় করা সম্ভব।
আজকের যুগে পুরুষের পাশাপাশি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে চেষ্টা করছে নারীরা। তবে পদে পদে হোঁচট খেতে হচ্ছে। অধিকাংশ মেয়ে কাজে যোগ দিতে বা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে অংশ নিতে গণপরিবহন ব্যবহার করে। আর গণপরিবহনে প্রতিনিয়তই নারীদের কোনো না কোনোভাবে যৌন-হয়রানির সম্মুখীন হতে হয়। তাই আত্মরক্ষার কিছু কৌশল যদি মেয়েদের আয়ত্তে থাকে, তার সুফল অনেক। মনের ভয়-ভীতি দূর করে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে পারবে সহজেই। অন্যয়ের প্রতিবাদ করতে কৌশলী হতে পারবে। ফলে আজকের এই আধুনিকতার কলিযুগে মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এসব কর্মকৌশল প্রশিক্ষণ দেওয়া জরুরি। তাই বছরের শুরুতে এই হোক প্রত্যয়, মেয়েদের সঙ্গে অন্যায় আর নয় আর নয়।