রোজায় মাথাব্যথা সামলানোর উপায়
রোজার সময় মাথাব্যথা এক বিরাট সমস্যা। মূলত ডিহাইড্রেশন, লো ব্লাড সুগার, ঘুম না হওয়া এবং ক্যাফেইনের কারণে এমন সমস্যা হয়ে থাকে। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায় তবে কী?
অনেকেই মনে করেন, সেহরিতে মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশি খেলে সারা দিন মাথাব্যথা থেকে রেহাই মিলবে- আদৌ ব্যাপারটা এমন না। বেশি চিনি খেলে ইনসুলিনের মাত্রাও বাড়তে শুরু করে। আর দেহে মাত্রাতিরিক্ত ইনসুলিন কখনোই ভালো কিছু না। কারণ, ইনসুলিনের মাত্রা বাড়লে আমাদের তীব্র ক্ষুধা পায়। আর একবার সুগার লেভেল নেমে গেলেই প্রচণ্ড ক্লান্তি এসে ভর করে। তাই, সেহরিতে শুধু শক্তির জোগান দেয়, এমন খাবারেই বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত। তাহলে আমাদের কী করা উচিত? সেটা নিয়েই আজ কথা বলব।
ডিহাইড্রেশন এড়াতে ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত প্রচুর পানি খান:
একে চৈত্রের ভয়াবহ গরম, তার ওপর দিনে অন্তত ১৩-১৪ ঘন্টা রোজা রাখতে হয়। তাই, ডিহাইড্রেশন হওয়াটা খুব স্বাভাবিক। বিশেষত, কর্মব্যস্ত দিনে এই সমস্যা অনেকের দেহেই প্রচণ্ড প্রভাব ফেলে। আর যদি একবার মাথাব্যথা শুরু হয়, তাহলে রেহাই পাওয়ার জন্য অনেকেই রোজা ভেঙে ফেলে। তবে, যথেষ্ট পরিমাণ পানি খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
মূলত, ডিহাইড্রেশনের ফলে দেহ থেকে প্রয়োজনীয় খনিজ লবণ এবং সুগার নির্গত হয়। এতে ক্লান্তি, মাথাব্যথা হয়। অনেকের জ্বরও হতে পারে। তাই, ইফতারের পর থেকে সেহরির আগ পর্যন্ত পর্যাপ্ত পানি পান করুন। এ-সময় একটানা পানি খাওয়ার ফলে হয়তো অতৃপ্তি কাজ করতে পারে। সে-ক্ষেত্রে জুস, ফল, শসা, আইসক্রিম খাওয়ার চেষ্টা করুন। সেহরির সময় খেজুরও খেতে পারেন। খেজুর খুব সহজেই ডিহাইড্রেশনমুক্ত করতে সাহায্য করে। যাদের ওষুধ সেবনের ফলে পানিশূন্যতা হয়, তাদের ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।
সেহরির আগে ক্যাফেইনের জন্য চকলেট খান:
ইফতারের পর শরীর চাঙা করতে অনেকেই চা কিংবা কফি খান। তবে সন্ধ্যার পর কফি খাওয়া মোটেও ভালো কিছু না। এমনকি সেহরির আগেও কফি খাওয়া উচিত না। কারণ, কফি বা ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় দেহ ডিহাইড্রেট করে দ্রুত। তবে, রমজানের শুরুর দিকে ক্যাফেইন ছেড়ে দিলে মাথাব্যথা হতে পারে অনেক। এর কারণ হলো, ক্যাফেইন গ্রহণে দেহের রক্তনালিকাগুলো সংকুচিত হতে শুরু করে। তাই, ক্যাফেইন গ্রহণ না করলে দেহের শিরাগুলো প্রসারিত হতে শুরু করে। এতে মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বাড়ে। এতে মাথাব্যথা হতে পারে।
প্রথম কয়েক দিন সেহরির সময় কফি কিংবা গরম চকলেট খেয়ে দেখতে পারেন। এতে হয়তো আস্তে আস্তে ক্যাফেইন না নেওয়ার অভ্যাস বা মাথাব্যথার সমস্যার সাথে মানিয়ে নিতে পারবেন। তবে, ক্যাফেইন নেওয়ার অভ্যাসটা রমজানে অন্তত এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
ঘুমের নিয়মের বদল:
রমজানে ঘুম না হওয়া খুব সাধারণ একটি সমস্যা। ঘুমের সময়ের অদল-বদল অনেকেই মানিয়ে নিতে পারে না। ফলে, যথেষ্ট ঘুম হয় না। তাই দিনে পাওয়ার ন্যাপ নেওয়ার চেষ্টা করবেন। বিশেষত, দিনে যথাসম্ভব ঠান্ডা জায়গায় থাকার চেষ্টা করবেন। ঘুমহীনতাও মাথাব্যথা আর গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়ায়। বিশেষত, এ-সময় রাতে দ্রুত ঘুমানোর ব্যাপারে যত্নশীল হওয়া উচিত।