সহিংসতার প্রতিবাদ হোক এমনই!
সাম্প্রদায়িক চেতনার মাধ্যমে একদিন বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা চরমে উঠে গিয়েছে। কুমিল্লার দুর্গাপূজা মণ্ডপের ঘটনা সারা বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের মধ্যে এক আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিলো। কিন্তু অসাম্প্রদায়িক বাঙালীরা এই সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব সইবার নয়। বিভিন্নভাবে তারা এই সহিংসতার প্রতিবাদে নেমে পড়ে।
প্রতিবাদের অন্যতম ভাষা হলো গান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে কনসার্টের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতিমনা একদল শিক্ষার্থী। ‘সহিংসতার বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে এবং ‘আক্রান্ত মাটি আক্রান্ত দেশ, এ মাটির কসম রুখবোই বিদ্বেষ’ শিরোনামে এই কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বেলা ৩টা থেকে সন্ত্রাস-বিরোধী কনসার্ট শুরু হয়। রাত ১০টায় শেষ হয় এ কনসার্ট। এই প্রতিবাদী কনসার্টে গান করছেন শিরোনামহীন, মেঘদল, সহজিয়া, শহরতলী, বাংলা ফাইভ, গানপোকা, কৃষ্ণপক্ষ, কাল, অবলিক, অসৃক, গানকবি ও বুনোফুল। এছাড়া, একক সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন জয় শাহরিয়ার, তুহিন কান্তি দাস, সাহস মোস্তাফিজ, লালন মাহমুদ, নাঈম মাহমুদ, প্রিয়াংকা পান্ডে, যশ নমুদার, তাবিব মাহমুদ, রানা, উদয়, অপু, উপায় ও অনিন্দ্য। নৃত্য পরিবেশন করেন উম্মে হাবিবা ও আবু ইবনে রাফি। আয়োজনে মূকাভিনয় পরিবেশন করেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম এ্যাকশন।
মিছিল, বক্তৃতা, সভা ও সেমিনারের চেয়ে শিল্প অনেক শক্তিশালী প্রতিবাদের মাধ্যম৷ তাই কনসার্টকে প্রতিবাদের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে আয়োজকেরা। তারা বলেন, ‘আমরা চাই এদেশের মানুষ হিন্দু-মুসলিম পরিচয়ের চেয়ে আমরা সবাই বাংলাদেশী পরিচয়ে পরিচিত হতে। এটাই আজকের আয়োজনের অন্যতম লক্ষ্য।'
কনসার্টে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর সমাবেশ ঘটে। এই কনসার্ট সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধের মানসিকতা গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে। এভাবেই পুরো দেশকে একত্রে লড়তে হবে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। তবেই বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িকতার ভয়াল কবল থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।