১৫ নারী স্বেচ্ছাসেবীর মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য স্বীকৃতি সম্মাননা
মানুষের জীবনের আসল সুখ নিহিত সকলের সাথে নিজের আনন্দ দুঃখ ভাগ করে নেওয়ার মাধ্যমে। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মত মহৎ কাজ সমাজে আর একটিও নেই। কিছু দুরন্ত নারীদের পথচলায় এই বিষয়টিকে মূলমন্ত্র হিসাবে নিয়ে। তাদের এই মহৎ কাজটিকে তুলে ধরার জন্য তাদেরকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
বুধবার আগারগাঁওয়ের এলজিএইডি ভবনে তাদের হাতে ‘ইন্সপায়ারিং উইমেন ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২১’ তুলে দেওয়া হয়।ইউএনভি বাংলাদেশ, ভিএসও বাংলাদেশ, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এবং একশনএইড বাংলাদেশ যৌথভাবে এ সম্মাননা দিয়েছে। মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্য, সচেতনতা বৃদ্ধি, খাদ্য বিতরণ, সহিংসতা প্রতিরোধ, শিশু সুরক্ষা, শিক্ষা, স্যানিটেশন, পরিবেশ, মানসিক স্বাস্থ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এই স্বেচ্ছাসেবীরা।
নানা ধাপে নির্বাচিত সেরা পাঁচ স্বেচ্ছাসেবীর মধ্যে ফরিদপুরের তাহিয়াতুল জান্নাত, ঢাকার কামরুন নাহার কলি ও তাসনুভা আনান, রংপুরের আরিফা জাহান বিথি এবং নোয়াখালীর আয়েশা আক্তার রয়েছেন। এই পাঁচজনকে ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও মেডেলের পাশাপাশি ১০ হাজার থেকে ১ লাখ পর্যন্ত বিভিন্ন পরিমাণের সম্মানি দেওয়া হয়। বাকী ১০ জনকে দেওয়া হয় ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট এবং মেডেল।
থি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সুলতানা আফরোজ বলেন, “বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বেই করোনা-কালীন সংকটের শুরু থেকেই নারীরা প্রথম সারির সাড়া-প্রদানকারী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। তাদের এই অবদানের মাধ্যমে তারা বৃহত্তর ইতিবাচক প্রভাব রাখছেন। শারীরিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক বাধা সত্ত্বেও তারা বিভিন্ন খাতে অভূতপূর্ব অবদান রেখে চলেছে, যা মর্যাদা ও সম্মান পাওয়ার দাবিদার।
পুরস্কার গ্রহণ করে তাহিয়াত বলেন, "স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ শুরু করেছি কলেজের শুরুর দিকে। অনেকটা ভালো কিছু করার ঝোঁকের বসে। কিন্তু কাজ করতে এসে দেখেছি এদেশের হাজার হাজার মানুষ কেবলমাত্র সচেতনতার অভাবে জীবনে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। আর তখনই আমার মনে হয়েছে একজন মানুষ হিসেবে এই পৃথিবীর কাছে আমার ঋণ শোধ করার অন্যতম উপায় হচ্ছে এই সুবিধা-বঞ্চিত মানুষগুলোর সেবা করা।”
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ইউএনডিপির ডেপুটি রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ ভ্যান নুয়েন, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব দীপক চক্রবর্তী, ইউএনভির কান্ট্রি কোঅরডিনেটর আক্তার উদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক তানিয়া হক, সাবেক অতিরিক্ত সচিব ড. কাজী আনোয়ারুল হক, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এর প্রধান প্রকৌশলী রশীদ খান, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের পরিচালক জলি নূর হক, ভিএসও বাংলাদেশের বিজনেস পারসুইট লিড সালাহউদ্দিন আহমেদ, এবং একশনএইড বাংলাদেশ-এর প্রোগ্রাম অফিসার আফসানা আলিম উপস্থিত ছিলেন।
মানুষ সে শুধু রক্তে মাংসে মানুষ থাকে যদি না সে তার আত্মাকে পরিশুদ্ধ করতে না পারে। মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদেরকে একটু সাহায্যের হাত বারিয়ে দেওয়ার মাধ্যমেই প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠা যায়। ১৫ জন নারী যেন তাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে অবিচল।