ন্যাপথলিন ও কেরোসিনের ঘ্রাণ ভালো লাগে কেন?
"আমার না কেরোসিন এবং ন্যাপথলিনের ঘ্রাণ খুবই ভালো লাগে" এমন কথা প্রায়শই আমরা আমাদের আশেপাশের মানুষের থেকে শুনি অথবা আমাদের নিজেদেরই কেরোসিন এবং ন্যাপথলিনের ঘ্রাণ খুব ভালো লাগে। তবে প্রশ্ন কিন্তু রয়েই যায় ন্যাপথলিন ও কেরোসিনের ঘ্রাণ ভালো লাগে কেন?
মজার হলেও সত্যি মানুষের নাকে গন্ধের অনুভূতি বহনকারী ৪০০ রিসেপ্টর আছে যা ১ ট্রিলিয়ন গন্ধ শনাক্ত করতে পারে। কেরোসিন, পেট্রোল, রঙ, নেইলপলিশ, বৃষ্টির গন্ধ আমাদের অনেকেরই ভালোলাগে। ভালোলাগার এই অনুভূতিকে Euphoria বলে। এসবের গন্ধ ভালোলাগার জন্য এগুলোতে উপস্থিত ভিন্ন ভিন্ন উপাদান দায়ী। যেমন- কেরোসিন ও ডিজেল যা পেট্রোলিয়াম থেকে প্রাপ্ত এক ধরনের হাইড্রোকার্বন লিকুইড। কেরোসিন, ডিজেলের ঘ্রাণ আমাদের স্নায়ুতে উদ্দীপনা সৃষ্টি করে। একই ভাবে ন্যাপথলিন এর গন্ধও অনেকের ভালো লাগে।
কোন একটা গন্ধের মধ্যে জড়িয়ে থাকে আমাদের স্মৃতির আভাস । যেমন প্রথম বই খোলার সময় যে পারফিউমের গন্ধটা আসে। সেই পারফিউমের গন্ধটা পরবর্তীকালে আপনার নাকে এলেই কেমন "সেই প্রথম দিকের দিনগুলোর কথা" মনে পড়ে যায় না ?
আসলে গন্ধ বহনকারী অলফ্যাক্টরি স্নায়ুর সংযোগ রয়েছে আমাদের মস্তিষ্কের অ্যামিগডালা এবং হিপ্পোক্যাম্পাসের। এইজন্যই ন্যাপথলিন আর কেরোসিনের গন্ধ আমাদের স্মৃতির এক বিশেষ অংশকে নাড়া দিয়ে যায়। ন্যাপথলিন , কেরোসিন জাতীয় হাইড্রোকার্বন যৌগের আমাদের স্নায়ুর উপর ভিন্ন স্নায়বিক প্রভাবও পরিলক্ষিত হয়েছে । এই হাইড্রোকার্বন যৌগের সুমিষ্ট গন্ধের প্রভাবে আমাদের স্নায়ু শিথিল হয়ে যায় এবং ডোপামিন ক্ষরিত হয় যা আমাদের মধ্যে খুশির উদ্দীপনা সৃষ্টি করে ।
নেশা সৃষ্টিকারী দ্রব্য সেবনের প্রভাবে মস্তিষ্কের যে মেসোলিম্বিক পথ উন্মোচিত হয়ে যায় , হাইড্রোকার্বন জাতীয় যৌগের প্রভাবে সেই একই জিনিস হয় । এই তীব্র আকর্ষণী ক্ষমতার প্রভাবে হয়ত অনেকের কাছে এই গন্ধ এত প্রিয় হয়ে উঠেছে ।