মঙ্গলে থাকার দরখাস্ত চাইছে নাসা
নানা যন্ত্রণায় পৃথিবীতে বাস করার জন্য মন টিকছে না? হতাশ হয়ে ভাবছেন, কোথায়ই-বা যাবেন, এই দেহখানি বহন করে অন্য কোথাও যাওয়া আদৌ সম্ভব নাকি? মানবসভ্যতার ইতিহাসে মঙ্গল গ্রহে যাওয়া নিয়ে কথা উঠছে অনেকবার। সেই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবাসের অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের সুযোগ ঘটতে চলেছে বিশ্ববাসীর।
হিউস্টনে জনসন স্পেস সেন্টারে বিশাল এলাকা জুড়ে লালগ্রহের অবিকল সেই আস্তানা বানিয়েছে নাসা। তারাই হদিশ দিচ্ছে এই পৃথিবী ছেড়ে পালানোর এক বিকল্প ঠিকানার। একেবারে এক বছরের জন্য। সেটি কাছেপিঠের এমন এক জায়গা, যার আবহাওয়া ঠিক মঙ্গলের মতো। তবে সেখানে থাকার জন্য আবেদন জানাতে হবে নাসার কাছে। গত শুক্রবার থেকে অনলাইনে সেই আবেদনপত্র দিতেও শুরু করেছে নাসা।
হিউস্টনে জনসন স্পেস সেন্টারে ১৭০০ বর্গফুট এলাকা জুড়ে লালগ্রহসম সেই আস্তানা বানিয়েছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। নাম দেওয়া হয়েছে 'মার্স ডিউন আলফা'। সেই আস্তানায় ৪ জনের বেশি থাকা যাবে না বলে নাসার তরফে জানানো হয়েছে।
আয়োজনটি ঠিক হঠাত্ নয়। বহুদিন ধরেই মঙ্গলগ্রহে মানুষের বসবাসের কথা আলোচনা হচ্ছে। নাসা জানিয়েছে, " কয়েক বছর পরে হয়তো লালগ্রহে মানবসভ্যতার দ্বিতীয় উপনিবেশ গড়ে তোলার জন্য এমন আস্তানা বানাতেই হবে। তাই একরকম ভাবে তারই প্রস্তুতি"।
সেই প্রস্তুতিরই ফল এই মার্স ডিউন আলফা। মঙ্গলে গিয়ে অনেক দিন কাটানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এই আস্তানায়। মঙ্গলে কি ভাবে চাষবাস করা হবে তার পরীক্ষানিরীক্ষা চালানো হবে এখানে। দেখা হবে মঙ্গলের পরিবেশে থাকতে গিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের মানসিক ও শারীরিক অবস্থা কেমন হচ্ছে। তারা বানানো ওই পরিবেশে কেমন থাকেন, কীভাবে থাকেন সেসবই পর্যালোচনা করা হবে।
নাসার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, আপাতত শুধু আমেরিকার নাগরিকদেরই থাকার অধিকার থাকবে এই মার্স ডিউন আলফা-য়। আবাসিকদের বয়স হতে হবে ৩০ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে। তাদের ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হতে হবে। হতে হবে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী। আর তাদের কোনও নেশাসক্তি থাকা চলবে না।
বলা হয়ে থাকে 'দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো"। এমন উদ্যোগ এর ফলে মানুষের লালগ্রহটি নিয়ে জানার আগ্রহ আরো কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। নতুন প্রজন্মের কাছে লাল গ্রহটিতে ভ্রমণ করার আগ্রহ বেড়ে গেছে। হয়তো কোন একদিন লাল গ্রহটিকে জয় করবে আজকের শিশু! কে জানে সে দিন আর কত দূরে?