নিশীথ সূর্যের দেশে উল্কার ঝলক
মাঝরাতেও সূর্যের আলো দেখা যায় বলে নরওয়েকে নিশীথ সূর্যের দেশ বলা হয়। এবার এদেশে দেখা গেলো উল্কার ঝলকানি। রাতের আকাশে উজ্জ্বল এক উল্কা ভস্ম হতে দেখেছেন নরওয়ের বাসিন্দারা। এরকম আকাশে উজ্জ্বল আলো ছড়াতে দেখে হতবাক হয়ে যায় তারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উল্কার বেশ কিছু ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। আলোর এই ঝলকানির পাশাপাশি বিকট শব্দও শোনা গেছে। গত রবিবার রাত একটার দিকে প্রায় পাঁচ সেকেন্ডের মতো এই উল্কার ঝলকানি প্রত্যক্ষ করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
উল্কা হল মহাকাশে ভেসে বেড়ানো পাথর যেগুলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করলে জ্বলে ওঠে। আর পৃথিবীর মাটিতে পড়লে একে উল্কাপিণ্ড বলা হয়ে থাকে। উল্কাপিণ্ড পৃথিবীতে আছড়ে পড়ার ঘটনা বেশ বিরল। এর আগে ২০১৩ সালে রাশিয়ার উরাল পার্বত্য এলাকায় একটি উল্কাপিণ্ড পড়লে প্রায় ১ হাজার ছয়শ’ মানুষ আহত হয়। এই উল্কাটিকে নরওয়ের দক্ষিণাঞ্চলের বড় অংশ থেকে দেখা যায়। ১৬.৩ কিলোমিটার গতিতে ভূমণ্ডলের দিকে ছুটে আসে উল্কাটি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশটির দক্ষিণ-পূর্ব দিকে রাতের আকাশ হঠাৎ আলোকিত করেছিল বড় একটি উল্কা। দেশটির পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার পর বেশ কয়েকটি জরুরি কল পেলেও কোনও হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, রাজধানী অসলোর কাছে একটি বনাঞ্চলে উল্কাপিণ্ডের অবশেষ পড়েছে। উল্কাপিণ্ডটি যেখানে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে একদল বিশেষজ্ঞ পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, অসলো থেকে ৬০ কিলোমিটার পশ্চিমে ফিনেমারকা নামের বনভূমি এলাকায় ওই উল্কাপিণ্ডটি আঘাত করেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, উল্কাপিণ্ডটির ওজন ১০ কেজি হতে পারে। নরওয়েজিয়ান মেটিওর নেটওয়ার্কের কর্মকর্তা মর্টেন বিলেট বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, উল্কাপিণ্ডটি যেহেতু মঙ্গল ও বৃহস্পতির মধ্যে ভ্রমণ করছিল, তাই এটি অবশ্যই সৌরজগতের গ্রহাণু বেল্টকে ছুঁয়ে এসেছে। উল্কাপাতের এ ঘটনাকে বিপজ্জনক না বলে তিনি একে ‘ভৌতিক ঘটনা’ বলে আখ্যায়িত করেন।
উল্কাটির সব বিস্তারিত জানতে আরো সূক্ষ্ম গবেষণা প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞদের সম্মিলিত প্রয়াস হয়তো শীঘ্রই আমাদের সকল জিজ্ঞাসা নিবারণে সক্ষম হবে।