Skip to content

২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বৃহস্পতিবার | ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লেখনীতে লড়াকু নজরুল

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম চিরকাল অসাম্প্রদায়িকতাকেই লালন করেন নিজের ভেতর৷ এখনো নজরুল বলতে মন মস্তিষ্কে বেজে ওঠে, ' গাহি সাম্যের গান'।  যিনি মুসলিমদের রোজার শেষের খুশির ঈদের বার্তা ছড়িয়ে দেন সবার ঘরে তেমনি, নিজের ঘরে জ্যোৎস্না ঢুকান এক হিন্দু নারীর হাতধরে। তিনি বিয়ে করেছিলেন । তাঁর গোটা জীবনে চাপ রয়ে গেছে শান্তি আর মানবতার। 

 

লেখনীতে লড়াকু নজরুল

 

শুধু কবিতাই নয়, নজরুল অসামান্য অবদান রেখেছেন উপমহাদেশের রাজনীতিতেও। তাঁর লেখনী আর কণ্ঠে তিনি প্রেরণা জুগিয়েছেন বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে। এমনকি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে অনুপ্রেরণা হয়ে ছিল তাঁর লেখা। 

 

লেখনীতে লড়াকু নজরুল

 

নিজের লেখনীতে তিনি বহুবার ধর্মীয় সম্প্রীতির কথাই বলেছেন। সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার, কূপমণ্ডূকতার বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন  সোচ্চার। আর নিজের লেখায় এসব বিষয়ের প্রতিফলন ঘটিয়ে তিনি বাঙালীর বিদ্রোহী চেতনাকে শানিত করেছেন। প্রসারিত করেছেন বাঙালীর মনকে। 

 

লেখনীতে লড়াকু নজরুল

 

মাত্র বাইশ বছরের লেখালেখির জীবন তাঁর। এই অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি কবিতা থেকে শুরু করে  গান, উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, শিশুসাহিত্য দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন বাংলা সাহিত্যের সকল শাখা। 

 

লেখনীতে লড়াকু নজরুল

 

১৯২০ থেকে ১৯৪০ সালের  বাঙালি মুসলমান সমাজের নবজাগরণে  কবি নজরুল একক সৃষ্টিশীল প্রেরণা জুগিয়েছিলো। তাঁর কবিতায় ভারতীয় ও পারসিক সংস্কৃতির  সমন্বয় ঘটান তিনি। কবিতায় আরবি-ফারসি শব্দ ব্যবহার করে বাংলা ভাষার শব্দসম্ভার ও প্রকাশ ক্ষমতাকে আরো সমৃদ্ধ করেছে। 

 

লেখনীতে লড়াকু নজরুল

 

বাংলা কবিতায় তিনও এক নতুন মাত্রা যোগ করেন। বলা হয়ে থাকে বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ যে শান্ত, স্নিগ্ধ মায়াজাল বিস্তার করেছিলেন নজরুল তাকে দীর্ণ করেছেন।  তিনি সাহিত্যে নতুন যুগের সূচনা করে কালের প্রয়োজন মেটান৷ 

 

লেখনীতে লড়াকু নজরুল

গান রচনা করে তিনি বিস্ময় ঘটিয়ে দেখিয়েছেন। বাংলা সাহিত্যে নজরুল আত্মপ্রকাশ করেন প্রথম মহাযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর। সে কালটি ছিল অশান্ত, বিক্ষুব্ধ, দুরন্ত ও অগ্নিগর্ভ। খেলাফত আন্দোলন, গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলন, ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতা সংগ্রামের স্রোতধারায় তিনি অবগাহন করেন। তাই কালের চেতনা তার কবিতায় তীব্রভাবে ফুটে উঠেছে। অসহযোগ আন্দোলনকে  নজরুল সার্থকভাবে কাব্যরূপ দিয়েছিলেন। এমনকি প্রতিবাদী লেখার জন্য কারাবরণও করেছিলেন নজরুল। 

 

লেখনীতে লড়াকু নজরুল

তবুও এই যুগস্রষ্টা কবি সমাদর পাননি সঠিকভাবে। ১৯৭২ সালে তৎকালীন সরকার তাকে জাতীয় কবির মর্যাদা দিয়ে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। 

 

লেখনীতে লড়াকু নজরুল

 

আজকের এই দিনে ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ কবি কাজী নজরুল ইসলাম পাশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর ডাকনাম ছিল ‘দুখু মিয়া’। বাবা কাজী ফকির আহমেদ, মা জাহেদা খাতুন। ১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্র তিনি ইন্তেকাল করেন।

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ