Skip to content

২রা এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ১৯শে চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

মিস ফটোজেনিক অপি করিম 

শোবিজের প্রিয় এক নাম অপি করিম। টেলিভিশন জগতের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীর মিষ্টি হাসি, সাবলীল অভিনয়, আর মায়াবী চাহনি মুগ্ধ করেন দর্শকদের। নাটক, টেলিফিল্ম, উপস্থাপনা, এমন কি নাচ- সব ক্ষেত্রেই তার দ্যুতি ছড়ানো প্রতিভা।  শূন্য দশকে তার আত্মপ্রকাশ এবং সাফল্য। তাই ওই সময়কার দর্শকদের কাছে অপি এখনো সতেজ অনুভূতির নাম।
 

অভিনয় ও নাচ দিয়ে তিনি বাজিমাত করেছেন। প্রশংসিত হয়েছেন উপস্থাপনা ও মডেলিংয়েও। আর মঞ্চেও দাপুটে অভিনেত্রী তিনি। নাটক, টেলিফিল্মেও তার অসাধারণ অবদান। ৫১ বর্তীর সাধারণ বধূ শিউলি থেকে সাম্প্রতিককালের আধুনিক মিস শিউলি। ব্যাচেলারের সঙ্গী কিংবা মাধবীলতা হয়ে বিমোহিত করে চলেছেন বছরের পর বছর।

 

 

১৯৭৯ সালের ১ মে জন্মগ্রহণ করেছিলেন অপি করিম। তার পুরো নাম সৈয়দা তুহিন আরা অপি করিম। বিএএফ শাহীন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং বুয়েট থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন তিনি। এরপর জার্মানি থেকে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন।

 

 

অপি করিম ছোটবেলায় হতে চেয়েছিলেন একজন ‘রাজমিস্ত্রি’! তখন তার ধারণা ছিল, রাজমিস্ত্রিরাই বড় বড় বাড়ি বানান। আর সে বাড়ি বানানোর ইচ্ছাতেই তার রাজমিস্ত্রি হতে চাওয়া। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তিনি তাই হয়েছেন, একজন ‘বড় রাজমিস্ত্রি’ হয়েছেন, মানে স্থপতি। 

 

 

মাত্র আড়াই বছর বয়সে জনপ্রিয় টিভি নাটক ‘সকাল-সন্ধ্যা’র পারুল চরিত্রটিতে অভিনয় করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। এর মাধ্যমেই তার মিডিয়া জগতে প্রবেশ। পরবর্তীতে টিভি মিডিয়ায় অপির প্রথম কাজ ছিল ‘কলকাকলী’ নামের একটি অনুষ্ঠানে। মডেলিং দিয়ে শুরু করে অল্প সময়েই নাটক, টেলিফিল্মে পোক্ত জায়গা করে নেন অপি করিম। তিনি বহু দর্শকনন্দিত নাটকে অভিনয় করেছেন।

 

 

এছাড়া অনুষ্ঠান উপস্থাপনা, মঞ্চে অভিনয়, নাচ, সিনেমা এসবেও প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন অপি। অল্প সময়েই নাটক, টেলিফিল্মে নিজের জায়গা করে নেন অপি করিম। এছাড়া অনুষ্ঠান উপস্থাপনা, মঞ্চে অভিনয়, নাচ, সিনেমা এসবেও কাজ করেন। অপি করিম ১৯৯৯ সালে লাক্স ফটোজেনিক প্রতিযোগিতায়‘মিস ফটোজেনিক’ খেতাব অর্জন করেন। এরপর তিনি লাক্সের বিজ্ঞাপনে মডেল হয়ে জনপ্রিয়তা পান। লাক্সের মডেল হওয়ার সুবাদে বড় ধরনের সুযোগ আসে অপির মডেলিং ক্যারিয়ারেও। এদিকে মঞ্চ দর্শকদের মাঝেও অপি সমানভাবে প্রশংসিত হতে থাকে রক্তকরবীর ‘নন্দিনী’র জন্য।

 

 

টিভি নাটকে নিয়মিত অভিনয় করা শুরু করেন ১৯৯৯ সালে ‘তেপান্তরের রুপকথা’ টেলিফিল্ম দিয়ে।  ‘৫১ বর্তী’ নাটকে ‘শিউলি’ চরিত্রে অভিনয় করেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠেন।

 

 

এছাড়াও অপি করিম অভিনীত নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে- 'সকাল সন্ধ্যা', 'শুকতারা', 'আপনজন', 'সবুজ গ্রাম', 'তিথির সুখ', 'অক্ষয় কোম্পানির জুতা', 'ছায়া চোখ', 'জলছাপ', 'সাদাআলো সাদাকালো', 'যে জীবন ফড়িংয়ের', 'উত্তম-সুচিত্রা', 'মান-অভিমান', 'এ শহর মাধবীলতার না' ও 'অবাক ভালোবাসা' ইত্যাদি। উপস্থাপনা করেছেন ‘আমার আমি’ ও অপি’স গ্লোয়িং চেয়ারের মত দুটি জনপ্রিয় সেলিব্রেটি শো।

 

 

সম্প্রতি অভিনয় করেছেন ওয়েব সিরিজ ‘ঢাকা মেট্রো’, টেলিফিল্ম মিস শিউলি, কেস ৩০৪০, দরজার ওপাশে নাটকে। এখানে নিজেকে নন্দিত করেছেন, বলা যায় নবীনদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপি অভিনীত একমাত্র সিনেমা ‘ব্যাচেলর’। এটি ২০০৪ সালে মুক্তি পায়। এই সিনেমার জন্য সেরা অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পান তিনি।

 

 

২০০৭ সালে তিনি আসির আহমেদকে বিয়ে করেন। সে বছরই তাদের সংসারটি ভেঙে যায়৷ এরপর ২০১১ সালে নির্মাতা মাসুদ হাসান উজ্জ্বলের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন অপি। কিন্তু এই বিয়েও টেকেনা। ২০১৬ সালে প্রযোজক, নির্মাতা ও স্থপতি এনামুল করিম নির্ঝরকে বিয়ে করেন এই অভিনেত্রী। 

অভিনয় পেশার বাইরে অপি করিম নিজেও একজন স্থপতি ও শিক্ষিকা। তিনি আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর আর্কিটেকচারের একজন অনুষদ সদস্য।

শুরু থেকেই অপি তার অভিনয়ের মাধ্যমে সবাইকে মুগ্ধ করে এসেছে। এখন পর্যন্ত এই ধারা চালিয়ে যাচ্ছেন এই অভিনেত্রী। আশা করি সামনে তিনি আরো সুন্দর কীর্তি পরিবেশন করবেন।

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ