ধর্ষণের জন্য নারীর পোশাককে দায়ী করে সমালোচিত ইমরান খান
ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে নারীর পোশাককে দায়ী করে বিতর্কে জড়িয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে ধর্ষণ খুব বেড়ে যাওয়ার জন্য নারীদের পোশাককে দায়ী করে বক্তব্য দিয়েছেন তিনি। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা ইমরান খান বলেন, কোন সমাজে অশ্লীলতা বাড়তে থাকলে পরিণামে ধর্ষণও বাড়ে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ওই সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নারীদের শালীন পোশাক পরার পরামর্শও দেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পর্দা করার সারবস্তুই হল আকর্ষণ করা থেকে বিরত থাকা। নিজেকে বিরত রাখার ইচ্ছাশক্তি সবার নেই।’ তিনি আরও বলেন, নারীদের উচিত পুরুষদের সংযত রাখা, খোলামেলা পোশাক না পরে শরীর ঢেকে রাখা।
ইমরান খানের ওই মন্তব্যের পর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনসহ বিভিন্ন অধিকার সংগঠন। অনলাইনে বুধবার এ-সংক্রান্ত একটি বিবৃতিতে অনেকেই স্বাক্ষরও করেছেন। ওই বিবৃতিতে ইমরান খানের মন্তব্যকে ‘ত্রুটিপূর্ণ, রূঢ় ও বিপজ্জনক’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ধর্ষণের ঘটনার অপরাধ কেবলমাত্র ধর্ষকের ওপরই বর্তায় এবং (ইমরান খানের মন্তব্যের মতো) বক্তব্যের সংস্কৃতি ধর্ষককে উৎসাহিত করে।’ এর আগে হিউম্যান রাইটস কমিশন অব পাকিস্তান মঙ্গলবার মন্তব্য করে, ইমরান খানের মন্তব্যে তারা ‘হতভম্ব’ হয়েছে।
এ বিষয়ে সাইকোলজি অব ভায়োলেন্স জার্নালের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক শেরি হামবি বলেন, ‘‘কোন যৌনসুখ পাবার জন্য নয়, বরং অন্যপক্ষকে দমিয়ে রেখে ক্ষমতা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে ধর্ষণ করা হয়৷ ক্ষমতার এই প্রকাশ হতে পারে নারীদের বিপক্ষে, অথবা "উচ্চ স্থানে ওঠার" উপায় হিসাবে৷" এছাড়া ধর্ষণের পেছনে নানা ধরনের মানসিক সমস্যাকেও দায়ী করেছেন তারা। ধর্ষণের সাথে পোশাকের কোন সম্পর্ক নেই বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।’’
এর আগে গতবছর একটি গণমাধ্যমে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য নারীদের দায়ী করেছিলেন পাকিস্তানের এক ধর্মীয় নেতা৷ সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকেও এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ না করায় সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ইমরান।