Skip to content

৫ই মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুল পড়া কমানোর কিছু ঘরোয়া উপায়

শারীরিক সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে বরাবরই বিশাল এক ভূমিকা পালন করে চুল।  আবার সেই সৌন্দর্যের পথে বিশাল এক বাধা হয়ে দাড়ায় অতিরিক্ত চুল পড়া।  ছেলে মেয়ে উভয়কেই দেখা যায় এই চুল পড়ার সমস্যায় ভুগতে। তবে এতে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার কিছু নেই।  সমস্যা যেহেতু রয়েছে, রয়েছে সমাধানও। অনেকেই চুল পড়া রোধ করতে খরচ করছেন বিশাল পরিমাণের অর্থ ব্যয়। তাই আজ জেনে নিন   সহজেই  চুল পড়া সমস্যা দূর করার কিছু ঘরোয়া উপায় – 

 

১. চুলের যত্নে খুব উপকারী একটি উপাদান হতে পারে ডিম। ডিমের মধ্যে  রয়েছে চুলের প্রয়োজনীয় প্রোটিন যেমন বায়োটিন, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ডি।  এটি দ্রুত চুল বৃদ্ধি করতে এবং চুলের রুক্ষতা দূর করে মসৃণ করতে সাহায্য করে।  ডিম চুলের সমস্ত রকম পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে থাকে। ডিমকে চুলের খাদ্যও বলা হয়। 

 একটি ডিমের কুসুম নিয়ে তার মধ্যে দু তিন ফোঁটা লেবুর রস নিয়ে ভালো করে ফেটিয়ে মিশ্রণটি মাথার স্কাল্প থেকে চুলের ডগা পর্যন্ত ভালো করে লাগিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখার পর হালকা কোন শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। চাইলে অলিভ অয়েল কিংবা নারকেল তেল ও যোগ করতে পারেন। 

এই ফর্মুলাটি সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাবেন। 

 

২. লেবু সাইট্রিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ হওয়ায় চুলকে সুস্থ রাখতে,  চুলের অকালপক্বতা দূর করতে এবং চুল পড়া   রোধ করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। কারণ চুল পড়ার একটি অন্যতম কারণ ভিটামিন সি এর অভাব। এছাড়াও, চুলের খুশকি দূর করতে, মাথার ত্বকের কোন রকম সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। 

লেবু, হেনা পাউডার এবং ডিম এর সাথে উষ্ণ গরম জলে মিশিয়ে মাস্ক বানিয়ে এক ঘণ্টার জন্য মাথায় লাগিয়ে রাখতে পারেন। এটি  চুলের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করবে। 
এছাড়াও একটি লেবু কেটে অর্ধেক করে,১০ মিনিট ধরে মাথায় ঘষে নিতে পারেন।  এতে চুলের তৈলাক্ত ত্বকের  সমস্যা দূর হবে এবং চুল পড়া অনেকাংশেই কমে আসবে। 

এই ফর্মুলাটি সপ্তাহে একবার করে ব্যবহার করতে পারেন। 

 

৩. চুল পড়ার সমস্যার ভুক্তভোগীদের জন্য প্রাচীনকাল থেকেই ভরসা যোগ্য একটি উপাদান নিমপাতা। নিম পাতার উপকারিতা জানেননা এমন মানুষ খুব কমই আছে। নিম  মাথার ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল উৎপাদন বন্ধ করে চুলের গোঁড়াকে শক্ত করতে সাহায্য করে। 

নিম পাতা বেটে নিয়ে তার থেকে চেপে চেপে নিম পাতার রস বের করে নেবেন। তারপর সে রসের সাথে নারকেল তেল  মিশিয়ে তা মাথার ত্বকে এবং পুরো চুলে  আধঘণ্টার  জন্য লাগিয়ে রাখবে। এছাড়াও নিমপাতার মিশ্রণের সাথে সমান পরিমাণ অলিভ অয়েল, আমন্ড অয়েল কিংবা নারকেল তেল মিশিয়ে তেল গরম করে মাথায় লাগাতে পারেন।  নিম পাতা বেটে তার মধ্যে মধু মিশিয়েও মাথার চুলে লাগাতে পারেন।

কিছুদিন ব্যবহারেই আপনি নিমের উপকারিতা বুঝতে পারবেন। 

 

৪. আপনার চুল পড়া রোধের দায়িত্বটা দিতে পারেন মেথিকেও।  মেথিতে প্রচুর পরিমাণে  প্রোটিন ও নিকোটিনিক এসিড রয়েছে  যা চুলকে ভেতর থেকে পুষ্টি জুগিয়ে মজবুত করে।  

 অল্পকিছু পরিমাণ মেথি সারারাত গ্লাসে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর পরেরদিন ভোরে এগুলো বেটে পেস্ট বানিয়ে নিন। পেস্টটি ২০-৩০ মিনিট মাথায় রাখে ধুয়ে ফেলুন। মেথির এরূপ ব্যবহারে চুলপড়া অনেকটাই কমে যাবে। এছাড়াও ৫০ গ্রাম মেথি রাতে এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন সকালে পানিটুকু ছেকে নিয়ে খালি পেটে পান করুন। অবশিষ্ট পানি চুলের ত্বক ও পুরো চুলে স্প্রে করুন এবং পুরো মাথায় ম্যাসাজ করে একঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন।  

 

৫. চুল পড়া বন্ধ করতে এবং একই সাথে নতুন চুল গজাতে ব্যবহার করতে পারেন পেঁয়াজের রস।  পেঁয়াজের রস মাথায় নতুন চুল গজাতেও চুল পড়া বন্ধে সাহায্য করে। মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং এর অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়া উপাদান জীবাণুমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।পেঁয়াজে উপস্থিত সালফার চুলের ভাঙ্গন রোধ করে।

একটি বড় আকারের  পেয়াজ থেকে ব্লেন্ডারে মিশ্রণ তৈরি করে তার থেকে রস বের করে নিন। রস বের করে তা  প্রায় একঘণ্টার জন্য মাথার ত্বকে লাগান,  সাথে ম্যাসাজ ও করতে পারেন। 
একঘণ্টা পরে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। 

 অল্প কিছুদিন  ব্যবহারেই আপনি পেয়াজের উপকারিতা দেখতে পাবেন। 

 

৬.টক দই-এ প্রচুর পরিমাণে এনজাইম থাকে যা চুলকে কোমল করে, চুলের গোড়া মজবুত করে এবং সঙ্গে খুশকিও রোধ করে। টকদই এর ব্যবহারে চুলে আলাদা ঘনত্ব আসে এবং চুল দই থেকে প্রয়োজনীয় উপাদান গুলি সংগ্রহ করে। 

 মেহেদী পাতা বাটা,  ডিমের সাদা অংশ আর টক দই  পরিমাণ মতো মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে নিন। যদি চুল অনেক শুষ্ক হয় তাহলে ভিটামিন ই ক্যাপস্যুল ব্যবহার করতে পারেন । এই প্যাকটি চুলের গোঁড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালো করে লাগিয়ে নিন এবং প্রায় দুই ঘণ্টা পর চুল ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। এছাড়া চাইলে শুধু টক দইও ব্যবহার করতে পারেন। 

এই পদ্ধতিটি সপ্তাহে মাত্র একবার ব্যবহার করলেই চুল পড়া অনেকাংশে কমে যাবে।

 

এসব পদ্ধতি ছাড়া চুল পড়া রোধে আপনাকে গুরুত্ব দিতে হবে  পুষ্টিকর খাবারের উপরে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন জিঙ্ক,  ভিটামিন সি, ওমেগা – ৩ ফ্যাটি এসিড, আয়রন,ভিটামিন ডি, বায়োটিন, ভিটামিন-এ ইত্যাদি সমৃদ্ধি খাবার।  
চুল পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকে সহজেই  মুক্তি পেতে অনুসরণ করুন এসব ঘরোয়া পদ্ধতি। 

 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ