Skip to content

২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শনিবার | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হিজাব না পরায় ৯ ছাত্রীর চুল কর্তন: অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক

সমাজ বদলাচ্ছে কিন্তু আজও মানুষের মানসিক দীনতার পরিবর্তন ঘটেনি। তারওপর যদি তিনি হন শিক্ষক তবে জাতির জন্য ঘোরতর অমানিশা অপেক্ষা করছে! কিভাবে একজন শিক্ষকের এতোটা কদর্যতা, বিভৎসতা সর্বোপরি হিংস্রতা আসে! এ সমাজ যে আজও নোংরা, বর্বর ও জাহেলিয়ার যুগে বিরাজমান তার প্রমাণ এই কর্মের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষক ও তাকে সমর্থনকারীরা! সমাজ রসাতলে গেছে এ নতুন কিছু নয়। কিন্তু এও আজ সমাজে ঘটছে তা মানা দায়। যেখানে আমরা ডিজিটাল যুগে বসবাস করছি সেক্ষেত্রে এ ধরনের হীন মানসিকতাকে ধিক্কার জানান জরুরি।

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় ‘হিজাব না পরায়’ এক শিক্ষিকা ৯ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে উপজেলার সৈয়দপুর আবদুর রহমা ন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ভুক্তভোগী ছয় শিক্ষার্থী বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানায়, বিকালে বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে বিজ্ঞান ক্লাস নিচ্ছিলেন বিজ্ঞানবিষয়ক ওই শিক্ষিকা। এ সময় ৯ শিক্ষার্থীর মাথায় হিজাব ছিল না। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কাঁচি দিয়ে ওই শিক্ষার্থীদের চুল কেটে দেন।

এক ছাত্রীর ভাষ্য, ‘আমার একটাই হিজাব ছিল। সেটি ময়লা হয়ে যাওয়ায় ধুয়ে দিয়েছিলাম। ম্যাডামকে অনেক অনুরোধ করলেও শোনেননি। আমাদের চুল কেটে দিলেন। তাই আমি আর স্কুলে যামু না।’
ভুক্তভোগী আরেক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেছেন, ‘আমার মেয়ে হিজাব না পরে অন্যায় করেছে বললেই হতো। আমি শাসন করতাম অথবা হিজাব কিনে দিতাম। কিন্তু এভাবে চুল কেটে দিয়ে অন্যায় করেছেন ওই শিক্ষিকা। বাসায় এসে মেয়ে খুব কান্নাকাটি করেছে। স্কুলে যাবে না বলে দিয়েছে।’

এ ব্যাপারে সৈয়দপুর আবদুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মিয়া মো. ফরিদ বলেন, ‘আমি শুনেছি হিজাব না পরায় শিক্ষিকা কাঁচি নিয়ে শিক্ষার্থীদের চুল কাটার ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছেন। হয়তো সামান্য চুলও কেটেছেন। আসলে নিশ্চিত করে বিষয়টি বলতে পারছি না। ঘটনাটি বিকালে ঘটেছে। এরপর স্কুল ছুটি হয়ে যাওয়ায় বিস্তারিত জানতে পারিনি। পরে অন্যদের কাছ থেকে শুনেছি। এখন পর্যন্ত কোনও শিক্ষার্থী বা অভিভাবক আমার কাছে অভিযোগ দেয়নি। তারপরও আমরা ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।’

সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টি আমরা রাত ৯টার দিকে জানতে পেরেছি। ঘটনা শুনে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষকে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। যেহেতু ওই শিক্ষিকা এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত, আমরা তাদের কাছেও ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করবো।’

জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘ঘটনাটি সত্য। প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. ফরিদ আহমেদ বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আমি অভিযুক্ত শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি। তবে তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাচ্ছি। বৃহস্পতিবার ওই শিক্ষিকাকে শোকজ করবো।’
এ বিষয়ে জানতে ওই শিক্ষিকার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিয়ে বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তার মোবাইল ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে বিষয়টি জানতে চেয়ে মেসেজ দিলেও কোনও উত্তর দেননি। বিষয়টি সাধারণ জমগণকে তোলপাড় করেছে! অধিকাংশি এই পক্ষে রায় দিচ্ছেন কিন্তু ভেবে দেখা প্রয়োজন শিক্ষার্থী যান পড়াশোনা করতে হিজব পরেছে কিনা তার তালিম নিতে নয়! শুধু বরখাস্ত করে সমাজের পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। বরং তিনি যেন আর শিক্ষক হিসেবে ক্লাসে যোগাযোগ না করতে পারেন তার ব্যবস্থা করতে হবে। কোন হিংস্র পশু কখনো শিক্ষক হতে পারে না। মানবতার জয় হোক। ভণ্ডামি নিপাত যাক।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ